Homeএখন খবরখড়গপুরে চাষিদের সবজি রাস্তায় ছড়িয়ে জুলুমবাজি কনস্টেবলের, বিক্ষোভ অবরোধ, ক্লোজ করা হল...

খড়গপুরে চাষিদের সবজি রাস্তায় ছড়িয়ে জুলুমবাজি কনস্টেবলের, বিক্ষোভ অবরোধ, ক্লোজ করা হল পুলিশ কর্মীকে

নিজস্ব সংবাদদাতা: গরিব চাষি আর ছোট দোকানদারের ওপর পুলিশি ক্ষমতা প্রয়োগের দাদাগিরি দেখল খড়গপুর। রবিবারের ভরা বাজারের ব্যস্ত সময়ে লাথি মেরে একের পর এক সবজির ঝুড়ি রাস্তায় ছড়িয়ে দিল খড়গপুর টাউন থানার এক কনস্টেবল। ঘটনায় ক্ষুব্ধ চাষি ও ব্যবসায়ীর দল পথ অবরোধ শুরু করলে ছুটে আসেন টাউন থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ও স্থানীয় কাউন্সিলার। চাষিদের শান্ত করে অবরোধ প্রত্যাহার করিয়ে নেওয়া হয়। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেন কাউন্সিলার দেবাশিস চৌধুরী। ওই বেয়াদপ কনস্টেবলকে ক্লোজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার।

রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর শহরের খরিদার দিগম্বর জৈন মন্দির সংলগ্ন রাস্তায় অর্থাৎ খরিদা লেভেল ক্রসিংয়ের কেবিন থেকে উত্তরের রাস্তায়। করোনা সংক্রমন থেকে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য খরিদার ঘিঞ্জি বাজারকে তুলে আনা হয়েছে গোকুলপুর যাওয়ার লেবেলক্রসিং থেকে শুরু করে গিরিময়দান যাওয়ার রাস্তা অবধি। এছাড়াও বাজার বসছে খরিদার মূলরাস্তার ওপরেও। পুলিশের তরফেই সামাজিক দূরত্বের নীতি মেনেই সবজি বিক্রেতাদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় সময়ই নিয়ম ঠিকঠাক মানা হচ্ছেনা এমনই অজুহাতে বিক্রেতাদের ওপর জুলুমবাজির অভিযোগ উঠছিল। কখনো দাঁড়িপাল্লা কখনও আবার চাষিদের সাইকেল তুলে নিয়ে যাওয়া হত খরিদা পুলিশ ফাঁড়িতে।

রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ ফের জুলুমবাজি শুরু করে টাউন থানার অন্তর্গত খরিদা ফাঁড়ির কনস্টেবল শেখর নায়ক। কেন ঠিকঠাক দূরত্ব মানা হচ্ছেনা বলে ঝামেলা শুরু করেন তিনি। সবজিবালারা পাল্টা দাবি করেন তাঁরা ঠিকই বসেছেন। শুরু হয়ে যায় কথা কাটাকাটি। সবজি বিক্রেতাদের অভিযোগ এরপরই লাথি মেরে একের পর এক সবজির ঝুড়ি উল্টে দেওয়া হয় রাস্তায়। রাস্তায় গড়াগড়ি খেতে থাকে পেঁয়াজ আলু লাউ কুমড়ো। উত্তেজিত বিক্রেতাদের ক্ষোভের মুখে পালিয়ে যান ওই কনস্টেবল। এরপরই খরিদা লেবেল ক্রসিংয়ের কাছে মালঞ্চ রোড অবরোধে সামিল হন বিক্রেতারা।

বিক্রেতারা দাবি করেন এই প্রথমবার নয় বারংবার এই জুলুম চলছে। নানা অজুহাতে দাঁড়িপাল্লা, সাইকেল তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ফাঁড়িতে। ছাড়াতে গেলে একশ থেকে হাজার টাকা নেওয়া হয়। এছাড়াও তোলা, সবজিও নেওয়া হয় চাষিদের কাছ থেকে। উল্লেখ্য এখানকার বিক্রেতারা অধিকাংশই স্থানীয় গ্রামীন খড়গপুরের গোকুলপুর, বড়কোলা, বরগাই, ওয়ালিপুর, মহেশপুর প্রভৃতি এলাকা থেকে আসেন। সাইকেলই এঁদের ভরসা। স্থানীয় মানুষ তরতাজা সবজি পেয়ে থাকেন তাই এই অবরোধে সাধারন মানুষের সমর্থন জুটে যায়।

খবর পেয়ে ছুটে আসেন টাউন থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রাজা মুখার্জি, ১৭নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার দেবাশিস চৌধুরী। বিক্ষুব্ধ চাষি ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। খবর পৌঁছে যায় খড়গপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুকোমল কান্তি দাস ও পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের কাছে। পুলিশ চাষিদের শান্ত করে এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবেনা বলে আশ্বস্ত করে। দেবাশিস চৌধুরী জানান যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অবরোধ তুলে নেন চাষি ও বিক্রেতারা। পরে পুলিশ সুপার জানান কনস্টেবল শেখর নায়ককে ক্লোজ করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular