Homeমহানগরখড়গপুরখড়গপুরে মায়ের সাথে করোনা আক্রান্ত ২ বছরের শিশু কন্যাও, ঘাটালে আক্রান্ত প্রায়...

খড়গপুরে মায়ের সাথে করোনা আক্রান্ত ২ বছরের শিশু কন্যাও, ঘাটালে আক্রান্ত প্রায় পুরো পরিবারই

নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর শহরে করোনার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে যখন ফের লকডাউন চাইছে পুলিশ, যখন পুলিশ মনে করছে কঠিন অনুশাসন ছাড়া সংক্রমনের ওপর নিয়ন্ত্রন আনা সম্ভব নয় তখুনি সংক্রমনের প্রকোপ পড়ল ২ বছরের এক দুধের শিশুর ওপর। মায়ের সাথে আক্রান্ত হল শিশু কন্যাটিও।

জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খরিদা বাঙালি পাড়া এলাকায় যে পরিবারের কয়েকদিন আগেই এক প্রৌঢ়া আক্রান্ত হয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে ওই প্রৌঢ়া আক্রান্ত হওয়ার পরেই পরিবারের প্রত্যেকেরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তারপরই ওই প্রৌঢ়ার ২৯ বছরের পুত্রবধূ এবং ২ বছরের নাতনি আক্রান্ত হয়েছে বলে ধরা পড়ে।

খড়গপুরের এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, কেন আমরা কঠোর অনুশাসন চাইছি বা ফের লকডাউন চাইছি তার প্রকৃষ্ট উদাহরন এই ২ বছরের শিশুটির আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। দায়িত্ব জ্ঞানহীনের মতই আচরন করেছেন ওই প্রৌঢ়া, বেশ কয়েকবার তিনি শহরে এবং শহরের বাইরে চষে বেরিয়েছেন কিন্তু করোনা বিধি মানেননি। মাস্ক ব্যবহার করেননি, হাত জীবানু মুক্ত করেননি। বাইরে থেকে নিজে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন, পরিবারকে আক্রান্ত করেছেন যার মাশুল দিচ্ছে ওই দুধের শিশু। এবং প্রত্যেকেই জানেন যে শিশু বয়স্ক এবং বিভিন্ন রোগাক্রান্তরা করোনা আক্রান্ত হলে কতটা বিপজ্জনক।

শিশুটির আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যদপ্তরও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শিশুদের করোনার সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা অত্যন্ত কম। এখন বর্ষাকাল, এই আবহাওয়ায় ওই টুকু শিশু যদি কোনও কারনে নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিসের মত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে তাহলে করোনা দোসরে তা প্রাণঘাতী হতে পারে তবে আমরা চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করছি শিশুটির চিকিৎসার জন্য। আমরা আবেদন করছি শিশু বৃদ্ধ বৃদ্ধা ও অন্যান্য রোগগ্রস্ত পরিবারের মানুষদের ক্ষেত্রে নিজেরাই বিপজ্জনক হয়ে উঠবেননা।

এদিকে মা ও মেয়ে ছাড়াও খড়গপুর পৌর এলাকায় তৃতীয় করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। ৪৭ বছর বয়স্ক এই ব্যক্তি ইন্দা আনন্দনগর এলাকার বাসিন্দা। খড়গপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এই ব্যক্তি টাটা মেটালিকের কর্মী। কারখানায় ঢোকার সময় থার্মাল চেকিংয়ের সময় তাঁর শরীরে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা নজরে এলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এরপরই নমুনা দিয়েছিলেন তিনি। পরে যা পজিটিভ আসে।

খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখার্জী জানিয়েছেন, শুক্রবার হাসপাতালে ১৫ নমুনা অমীমাংসিত এসেছিল যার মধ্যে এই তিনজন ছাড়াও আরও এক ব্যক্তির পজিটিভ রিপোর্ট আসে শনিবার। এই নমুনাগুলি বৃহস্পতিবার সংগ্ৰহ করা হয়েছিল। অন্যদিকে শুক্রবার যে ৬৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় তারমধ্যে শনিবার ফের ৫ অমীমাংসিত ফল এসেছে। শনিবার যে নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে তারই পাশাপাশি ওই অমীমাংসিত ৫টিরও ফলাফল আসবে।
পুলিশ জানিয়েছে শনিবার যে চারটি রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে তারমধ্যে শহরের তিনজন ছাড়া বাকি ব্যক্তির বাড়ি বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটিতে। এই ব্যক্তি সালুয়ার ইএফআর প্রশিক্ষন কেন্দ্রের মেসে রান্না করতেন। এখানেই প্রশিক্ষন নিতে এসে মোট ৯৯ জন করোনা আক্রান্ত হন আগেই। এই ব্যক্তিকে ধরলে সেই আক্রান্ত ১০০পুরন করল।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এদিন ৩০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে যার মধ্যে ঘাটাল পৌরসভা এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণনগর এলাকায় একই পরিবারের মোট ৬জন সদস্যের মধ্যে ৫ জনই আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৩জনই মহিলা। রয়েছেন এক ৬৩ বছরের বৃদ্ধ। এছাড়াও ঘাটাল মহকুমার দাসপুর ১ ব্লকে ৮ জন ও দাসপুর ২ ব্লকে ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি কেশপুরে ৩ নতুন আক্রান্তের সন্ধানও মিলেছে এদিন। বেলদায় বিজেপি নেতার সূত্রে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর ১৮ বছরের মেয়ে।
শনিবারই আয়ুষ ও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঠিকানায় গড়বেতা, লালগড়, ঝাড়গ্রাম ও খড়গপুর গ্রামীন থানার বারুইপাড়ায় একজন করে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। মেদিনীপুর কোতোয়ালির গ্রামীন ও শহরে ১জন করে আক্রান্ত মিলেছে।         ছবি-প্রতীকি

RELATED ARTICLES

Most Popular