Homeএখন খবরফুলে গন্ধ নেই! স্বাদ হীন রান্নায় গৃহ অশান্তি, করোনা মাহাত্ম্যয় নাজেহাল গিন্নি,...

ফুলে গন্ধ নেই! স্বাদ হীন রান্নায় গৃহ অশান্তি, করোনা মাহাত্ম্যয় নাজেহাল গিন্নি, খড়গপুরে ২৫০ ছাড়ালো আক্রান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা: কাকার পারলৌকিক কাজে ৩রা আগষ্ট অন্ধ্রপ্রদেশ গিয়েছিলেন ২৭ বছরের যুবক। শহরের রেল কলোনির সাউথ সাইড এলাকার ধোবিঘাট এলাকার বাসিন্দা ফিরেছিলেন ২৬তারিখ। মাঝখানে তিন দিনের বিরহ! ভেবেছিলেন চমকে দেবেন প্রিয়তমা নারীটিকে। ফেরার পথে গোলবাজার ফ্লাইওভারের দক্ষিনে এক গোছা ফুল কিনে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা ছিল কিন্তু মজার কান্ড ঘটে গেল। জুঁই, বেলি, রজনীগন্ধা যা কিনতে গেছেন কোনও টাতেই গন্ধ পাননি! সব বাটপারের দল, বাসি ফুল বিক্রি করে, জোর ঝগড়া করেছেন।

শেষ মেশ একগোছা জুঁইয়ের মালা কিনে ফিরেছেন, নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল। সেই ফুল খোঁপায় দিয়ে খুশিতে ঢলে পড়েছেন দক্ষিনী। বলেছেন, ওয়াও! ক্যায়া খুশবু হ্যায়! প্রিয়তমাকে চমকে দিতে গিয়ে চমকে গেছেন নিজেই। বুঝেছেন, সমস্যা তারই। কোনও গন্ধই পাচ্ছেননা। কয়েকদিন এভাবে কাটার পর অনেকের পরামর্শে করোনা পরীক্ষার জন্য ১৩তারিখ নমুনা প্রদান করেন। শনিবার , ১৫ই আগষ্ট রাতে জানা গেছে পজিটিভ তিনি।

খড়গপুর শহরের মালঞ্চ এলাকার ৪০বছরের গৃহবধূর আবার অন্য সমস্যা। যা কিছু রান্না করছেন সব কিছুকেই দূর ছাই বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন স্বামী। ডালে নুন হচ্ছেনা, তরকারি নাকি ঘাসের মত। স্বামীর সঙ্গে সায় দিচ্ছেন শ্বাশুড়িও। ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছিলেন গৃহবধূ। খুঁতখুঁতে ছেলেমেয়েরা যে রান্না লাজবাব বলছে তা পছন্দ হচ্ছেনা স্বামী শ্বাশুড়ির। গৃহ অশান্তি শুরু হয়ে গেছিল। বেসরকারি একটি কোম্পানিতে কাজ করেন স্বামী। কি মনে হওয়াতে নিজে আর মাকে নিয়ে গেলেন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে। দেখা গেল ২জনেই পজিটিভ।

জ্বর নেই, গলা ব্যথা নেই, শ্বাসকষ্ট নেই, বেশিরভাগই উপসর্গহীন বা আ্যসিমটোমেটিক। উপসর্গ একটাই স্বাদ আর গন্ধহীন দুনিয়া! শনিবার খড়গপুর শহরে আরটি/পিসিআর পরীক্ষায় যে ১৩ জন নতুন করোনা রোগির সন্ধান মিলেছে তার বেশিরভাগেরই সেই অর্থে জোরালো উপসর্গ মেলেনি। যেমন ওয়াগনশপের কর্মী সুভাসপল্লীর ৫৮বছর বয়সী ব্যক্তি কিংবা আশা হাউজিং কমপ্লেক্সের ৬১ বছরের বৃদ্ধ অথবা বিধানপল্লী এলাকার ১৪ ও ৯বছরের ভাইবোনের তেমন কোনোও উপসর্গ নেই। পরিবারের কারও করোনা হয়েছে তারপর এদের পরীক্ষা হয়েছে, পজিটিভ ধরা পড়েছে। এমনকি ৩৭ বছরের ক্যানসার আক্রান্ত মহিলা কিংবা ৩৪বছরের লোকো পাইলটেরও কোনও উপসর্গ নেই। ব্যতিক্রম ছোট ট্যাংরা এলাকার ৬১ বছরের অবসর প্রাপ্ত রেল কর্মীর। তাঁর সামান্য জ্বর ছিল।

রেল হাসপাতাল এবং খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে সংগৃহিত ১৩ আগষ্টের নমুনা থেকে মোট ১৮ জনের করোনা পজিটিভ মিলেছে যার মধ্যে ৩ জন খড়গপুর গ্রামীনের শ্যমরাইপুর, নারায়নগড় থানার বিরবিরা, ঝাড়গ্রাম জেলার রগড়ার বাসিন্দা রয়েছে। খড়গপুর শহর এলাকায় যে ১৫ জন রয়েছেন। রেল এলাকার বাইরে আক্রান্তরা রয়েছেন রাখাজঙ্গল, খরিদা, মালঞ্চ, সুভাসপল্লী, ছোট ট্যাংরা, হিজলী এলাকার। এই ১৫জনকে ধরে খড়গপুর শহরের মোট ২৬০ জনের শরীরে করোনার সন্ধান মিলল। এরমধ্যে ২০০জনই পুরোপুরি সুস্থ।

RELATED ARTICLES

Most Popular