Homeএখন খবরবিধায়ক যাবেন বলেই লাখ টাকার পুজাতে ছাড়! ক্ষুব্ধ খড়গপুরের গণেশ পুজার উদ্যোক্তারা

বিধায়ক যাবেন বলেই লাখ টাকার পুজাতে ছাড়! ক্ষুব্ধ খড়গপুরের গণেশ পুজার উদ্যোক্তারা

নিজস্ব সংবাদদাতা: গনেশ পুজার বাজার করতে হবে বলেই নাকি রাজ্য সরকারের দুদিনের লকডাউন কে পৌনে দিনে নামিয়ে দিতে পারেন খড়গপুর শহরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার। প্রদীপ সরকারের অনুগামীরা ফেসবুকে সেরকমই দাবি করেছিলেন শুক্রবার। কয়েকজন তৃনমূল নেতা নেত্রীর ওয়ালে লেখা হয়েছিল বিধায়কের দৌলতেই বিকাল চারটায় খুলে যাবে দোকান। সেই ফেসবুক পোষ্ট দেখে তৃণমূলের ব্যবসায়ী নেতারা ফোন করে ব্যবসায়ীদের দোকান খুলতে বলেও দেয় এবং দোকান খুলেও যায়। রাজ্য সরকারের ঘোষিত লকডাউন ভাঙার নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ করার সাহস দেখিয়ে এভাবেই ‘হিন্দু’ হয়ে ওঠেন প্রদীপ সরকার যিনি ঘনিষ্ট দের বলেই বেড়ান হিন্দু ভোটটাও দেখতে হবে তাকে।

খড়গপুরের বিখ্যাত ব্যবসায়ীর ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বসে সরকারি আধিকারিক ও পুলিশ আধিকারিকদের ডেকে নেমন্তন্ন করে এভাবেই ‘হিন্দু’দের গনেশ পুজোর কেনাকাটা করার জন্য বিকাল ৪টা থেকে দোকান খুলিয়ে শুক্রবার হিরো হয়ে যাওয়া বিধায়ককে শনিবার খড়গপুরের গনেশ পুজার উদ্যোক্তারা প্রশ্ন করেছেন,” তিনি কী শুধু কুমারপাড়ার গনেশ পুজোর হিন্দু? না হলে শুধু তিনি যাবেন বলেই লাখ টাকার পুজো করা যায় আর আমাদের পুলিশ বড় পুজো করার অনুমতি দেয়না?”

শনিবার খড়গপুর শহরের একমাত্র একলাখি গনেশ পুজার আয়োজন হয়েছিল কুমারপাড়ায়। শহরের বাকি গণেশের পুজো সারতে হয়েছে ১৫ থেকে ৩০হাজারে। করোনা আবহে পুলিশ এবার কোনোও পুজোর অনুমতি দেয়নি। শুধু বেসরকারি ভাবে বলে দিয়েছিল, নম নম করে সারতে হবে পুজো। সেইমত ছোট আয়োজনের পুজোর ব্যবস্থা করেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু ব্যতিক্রম কুমারপাড়া। তাঁদের রীতিমত থিম পুজো। মহারাষ্ট্রের এক বিখ্যাত গণেশের আদলেই মূর্তি, ধুমধাম করে পুজো, সঙ্গে বস্ত্রদান আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও! সরকারি নির্দেশিকায় এখনও কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করাই বারন যে! কী করে করোনা বিধি ভেঙে এটা সম্ভব হল?

উদ্যোক্তারা ফিসফিস করে জানালেন, ‘দাদা বোল দিয়া তো ফিকির ক্যায়া হ্যায়!’ তো চলল সবকিছুই। কোনোও দূরত্ব না মেনেই গায়ে গায়ে সত্তর জনকে বস্ত্রদান, গা ঘেঁষাঘেঁষি করে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান। যথারীতি গলায় মাস্ক ঝুলিয়ে প্রদীপ সরকার গেলেন বস্ত্র বিতরন করলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখলেন। মন্ডপ জুড়ে গায়ে গা লাগিয়ে থিকথিকে ভিড়। অধিকাংশ মানুষেরই মুখে মাস্ক নেই। অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে কিশোর কিশোরীরা।

শহর জুড়ে করোনা বিস্ফোরন। মৃত আর আক্রান্তে এগিয়ে বাংলার মতই এগিয়ে খড়গপুর কিন্তু ভোট বড় বালাই। আর সেই ভোট ঘাড়ের কাছে চলে এসেছে। সেই ভোটের জন্য নিয়ম ভেঙে বাংলো সাইডে মাতা পূজা কিংবা কুমোরপাড়ায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতেই পারে, সেই ভোটের জন্য ভরা লকডাউনে লুকিয়ে চুরিয়ে মহল্লায় মহল্লায় ঈদের বাজার বসতেই পারে কিন্তু এবার একটু সমস্যাই হল বিধায়কের। শহরের বাকি গনেশ পুজার উদ্যোক্তাদের বক্তব্য বিধায়ক কি তাহলে শুধু কুমার পাড়ার হিন্দু হয়ে গেলেন? উদ্যোক্তারা পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, পুজো নিয়েও রাজনীতি করছে তৃনমূল।

RELATED ARTICLES

Most Popular