Homeএখন খবরবয়সের ফাঁড়ায় নিয়োগ আটকে খড়গপুর পৌরসভার, জটিলতা বাড়লে নিয়োগ বাতিলের আশংকা

বয়সের ফাঁড়ায় নিয়োগ আটকে খড়গপুর পৌরসভার, জটিলতা বাড়লে নিয়োগ বাতিলের আশংকা

নিজস্ব সংবাদদাতা: পুরসভা নির্বাচন আপাতত শিকেয়, বছর গড়ালেই বিধানসভা। এই দুই নির্বাচনকে সামনে রেখেই রাজ্য সরকার ভোটের আগে বিভিন্ন জায়গায় লোক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছিল যার মধ্যে খড়গপুর পৌরসভার জন্য মোট ৬০টি পদ অনুমোদিত হয়। পৌরসভার পক্ষে প্রায় শ’খানেক স্থায়ী পদের জন্য নিয়োগ চাহিদা পাঠানো হয়েছিল কিন্ত রাজ্য সরকার প্রায় ৬০টি পদ অনুমোদন করে। যার মধ্যে বিভিন্ন পরিদর্শক ইত্যাদির পাশাপাশি বেশ কিছু সাফাই কর্মী পদে নিয়োগ হওয়ার কথা। ইন্টারভিউ ইত্যাদি যাইহোক না কেন পুরসভার লক্ষ্য ৪৬জন সাফাই কর্মী যাঁরা দীর্ঘদিন পুরসভা এলাকায় অস্থায়ী কর্মী হিসেবে পরিষেবা দিয়ে এসেছেন তাঁদের স্থায়ী করা। কিন্তু বাদ সেধেছে নিয়ম ।

ওই নিয়মে বলা হয়েছে বয়সের দিক থেকে সাধারনের জন্য সর্বোচ্চ ৪০ এবং জাতি উপজাতি সমূহ সংরক্ষিত আসনে বয়সের ঊর্ধ্ব সীমা ৪৫ বছর অবধি। কিন্তু সমস্যা হল বর্তমান অস্থায়ী কর্মীদের প্রায় সবারই বয়স সেই সীমা পেরিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় নিয়োগ কী করে হবে তাই নিয়ে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার এক বিদায়ী কাউন্সিলর জানিয়েছেন, ” প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই কর্মী সংখ্যা কম। স্থায়ী পদের কিছু কর্মী চলে গেলে ফের কিছু অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে কাজ চালানো যেত কারন সরকার স্থায়ী পদের কর্মীদের বেতনের দায়িত্ব নিয়ে নিচ্ছে কিন্তু বর্তমানে যা অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই ঝুলে যাবে। যাঁরা বছরের পর বছর কাজ করে আসছে তাঁদের বাদ দিয়ে অন্য লোক নিয়োগ করব কী করে? আবার এই অস্থায়ী কর্মীদের বেশিরভাগই বয়সসীমা পেরিয়ে গেছেন। ফলে আমাদের হয়েছে ছুঁচো গেলার অবস্থা।”
খড়গপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান জহর লাল পাল জানিয়েছেন,” সরকারের সঙ্গে আমরা একটা রফা করার চেষ্টা করছিলাম। যাঁরা এতদিন কাজ করে আসছেন তাঁদের সেই কাজের অভিজ্ঞতা তাদের বয়সসীমায় কিছু ছাড় দিতে পারে কিনা সেটা দেখার জন্য কথা হচ্ছিল। কিন্তু এখন যেহেতু বোর্ড নেই তাই আমাদের ই.ও সাহেবই সরকারের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছিলেন কিন্তু তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে শালবনী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় প্রক্রিয়া থমকে গেছে।”

পুরসভা সূত্রে জানা গেছে ১৯৯৫ আর ২০১২, রবিশঙ্কর পান্ডে আর জহর লাল পাল এই দুই চেয়ারম্যানের আমলে খড়গপুর পুরসভায় কিছু বড় আকারের স্থায়ী পদের নিয়োগ হয়েছিল তারপর আর তেমন নিয়োগ হয়নি। প্রথমে ১৭ বছর এবং পরে ৮ বছর পরে এতবড় সংখ্যায় নিয়োগের সুযোগ এসেছে কিন্তু জটিলতার কারনে সেই নিয়োগ বাতিল হয়ে যাওয়ার জোগাড় হতে পারে। সাফাই কর্মীদের একাংশ বলেছেন, “সর্বত্রই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একটি বয়সের ছাড় থাকে কিন্তু এখানে তা নেই। সুতরাং যদি নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা বাড়তি সুবিধা না পাই তবে আদালতের দ্বারস্থ হব আমরা।”

খড়গপুর পৌরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ” নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি শুধুমাত্র খড়গপুর পুরসভার দিকে তাকিয়ে দেখা করা হয়নি। এটা সরকারের সমন্বিত বিজ্ঞপ্তি। অস্থায়ী কর্মীদের কারও ৫বছর, কারও ৭বছরের মধ্যে অবসরের বয়স হয়ে যাবে। সরকার কী ফের আবার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বের করবে?” ওই আধিকারিকের আরও দাবি, “সস্তা রাজনীতি করতে গিয়ে যদি অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ নিয়ে অনড় থাকা হয় তবে পুরো নিয়োগটাই বাতিল হয়ে যাবে। চন্দননগর পৌরসভায় এরকম নজির রয়েছে। সেক্ষেত্রে পুর নাগরিকদেরই পরিষেবা ঘাটতির মাশুল দিতে হবে।তাই পুরসভার উচিৎ যাঁরা বয়সসীমা মধ্যে আছেন তাঁদের নিয়ে বাকি নিয়োগ প্রক্রিয়া সেরে ফেলা। বাকি যে অস্থায়ী কর্মীরা থেকে যাবেন তাঁদের জন্য, ভাতা বৃদ্ধি ইত্যাদি সম্ভাব্য অন্য প্যাকেজ দিয়ে পুষিয়ে দেওয়া। নচেৎ আমরা এ কুল ও কুল দুকুলই হারাবো। “

RELATED ARTICLES

Most Popular