Homeঅন্যান্যঅযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমি পূজনকে ঘিরে তীব্র চাপান উতোর খড়গপুরে, রাতেই পদত্যাগ করল...

অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমি পূজনকে ঘিরে তীব্র চাপান উতোর খড়গপুরে, রাতেই পদত্যাগ করল রামমন্দির পরিচালন কমিটি

নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিল্যান্যাস ও ভূমি পূজন আর তারই উত্তাপ এসে পৌঁছেছে ৮৬৩ কিলোমিটার দুরে খড়গপুর শহরে। পুলিশ বনাম বিজেপি সমর্থকদের চাপান উতোর এতটাই তীব্র হয়ে উঠেছে যে মঙ্গলবার রাতেই খড়গপুর গোলবাজারের রামমন্দির পরিচালন কমিটির সমস্ত সদস্যই পদত্যাগ করে বসলেন। গোটা ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে শহর জুড়ে। বুধবার, ৫ আগষ্ট পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এমাসে রাজ্য সরকার ঘোষিত লকডাউন গুলির অন্যতম ও প্রথম দিন। আর এদিনই অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিল্যান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তথা শিল্যান্যাসের মূল হোতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই উপলক্ষ্যে খড়গপুরের রাম ও হনুমান মন্দির গুলিতে বিশেষ পুজোর ডাক দিয়েছে বিজেপি অন্যদিকে লকডাউন বলবৎ করতে কড়া প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামছে পুলিশ।

খড়গপুর শহরের বিজেপি সমর্থকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, লকডাউন স্বত্ত্বেও পথে নামবেন তাঁরা। গোলবাজারের রামমন্দির ছাড়াও খড়গপুর শহরে যত বজরংবলির মন্দির বা মূর্তি রয়েছে সব জায়গাতেই পুজো করবেন তাঁরা। কোনও লকডাউন তাঁরা মানছেননা। বিজেপি নেতা শৈলেন গুপ্তা সহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা মঙ্গলবার মিছিল করে জানিয়ে দেন খড়গপুর শহরের বিভিন্ন জায়গা, যেখানে যেখানে মন্দির আছে সেখানে সেখানেই পুজো করবে বিজেপি, লকডাউন মানা হবেনা। শৈলেন নিজে জানিয়ে দেন, ‘রামের জন্য জেলে যেতে হয় যাব কিন্তু রামমন্দিরে পুজো দিতে আসব। লকডাউন মানবনা।’

অন্যদিকে রামমন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন যেহেতু লকডাউন চলছে তাই রামমন্দিরের সামনের গেট বন্ধ থাকবে কিন্তু পেছনের গেট খোলা থাকবে। মন্দিরের ম্যানেজার পরমহংস তেওয়ারী বলেন, ‘শ্রীরামের পুজো যেমনই হয়,হবে। ভক্তরা নিজেদের মত আসবেন, মন্দিরের দরজা খোলা থাকছে। পেছনের দরজা দিয়ে ভক্তরা আসুন।’ শুধু বিজেপি নয়, সক্রিয় হয়ে ওঠে বিভিন্ন গেরুয়া সংগঠনও। বিভিন্ন নির্বাচনের আগে পাড়ায় পাড়ায় ব্যাঙের ছাতার মত যে সমস্ত হনুমান মন্দির গড়ে তোলা হয়েছিল তার কমিটি বা সেবায়েতদের বলে দেওয়া মাইক লাগাতে, রামের ভজন সঙ্গীত যেন বাজানো হয়।

এদিকে বুধবার লকডাউন বলবৎ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ। রামমন্দিরের বিভিন্ন গেটে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা, ক্যামেরা লাগানো হয় বিভিন্ন জায়গাতেও। রামমন্দির কর্তৃপক্ষকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, পুজো করা যেতেই পারে কিন্তু বড় জমায়েত করা চলবেনা আর জমায়েত হলে দায়ি থাকবে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে ব্যবস্থা নেবে। একদিকে বিজেপি নেতাদের চাপ পুজো করতেই হবে অন্যদিকে পুলিশের হুঁশিয়ারিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মন্দির কর্তৃপক্ষ। শুরু হয়ে যায় ইস্তফা দেওয়া। প্রথমেই ইস্তফা দেন, মন্দির পরিচালন কমিটির সহ সভাপতি কুশল চাঁদ বাদোরিয়া। ম্যানেজার পরমহংস তেওয়ারীর কাছে ইস্তফা দিয়ে তিনি জানিয়ে দেন, তাঁর ৭৪ বছর বয়সে , শারিরীক অক্ষমতা আর শরীর ভাল না লাগায় পরিচালন কমিটিতে থাকতে পারছেননা তিনি। এরপর পুরোহিত সহ একে একে সবাই ইস্তফা দিয়ে দেন রাতেই।

বর্তমানে কার্যত অভিভাবক হীন রামমন্দির। এই অবস্থায় কী হয় সেটাই এখন দেখার।ঘটনা যাইহোক না কেন, এর পুরো ডিভিডেন্ড তুলতে নেমে বাজারে নেমে গেছে গেরুয়া শিবির। ঈদ মহরমে ছাড় দিয়ে রামমন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের দিনই লকডাউন এবং বারংবার দিন পরিবর্তন করা স্বত্ত্বেও বুধবারকে লকডাউনের আওতায় রেখে দেওয়ায় ভেতরে ভেতরে হিন্দু আবেগ খুঁচিয়ে তোলা তো ছিলই তার সঙ্গে যুক্ত হল রামমন্দিরে ‘পূজা করতে না দেওয়া’র প্রচার।

RELATED ARTICLES

Most Popular