Homeএখন খবরআদালতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেলাগাম খড়গপুর, তিন দিন লাগাতার শব্দতান্ডব

আদালতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেলাগাম খড়গপুর, তিন দিন লাগাতার শব্দতান্ডব

নিজস্ব সংবাদদাতা: সমস্ত নিয়ম কানুনকে জলাঞ্জলি দিয়ে সগৌরবে রাবন দহনে মেতেছিল খড়গপুর। গোটা বাংলা জুড়ে ছি–ছিৎকার, বিশেষজ্ঞদের ধিক্কার শোনার পরও টনক নড়েনি কারও। আর নড়বেই বা কেন, যেখানে শাসকের উদ্যোগে, প্রশাসকের বদান্যতায় একটা শহরে ধ্বংস যজ্ঞের আয়োজন হয় সেখানে কারই বা করার কিছু থাকে? ঠিক সেই ঘটনারই আরেক রূপ দেখা গেল দ্বীপবলিতেও। একদিন নয়, দুদিন নয় পরপর তিনদিন শব্দ তান্ডব চলছে খড়গপুর শহরে। শুক্রবার সূর্যাস্তের পর থেকে যে তান্ডব শুরু হয়েছিল শনিবার পেরিয়ে রবিবারও তার বিরাম নেই। প্রতিদিনই রাত ১২টা অবধি এক নাগাড়ে চলেছে শব্দের তান্ডব।

দুর্গাপূজার সময় আদালত পুজো সম্পর্কে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন কালীপুজো উপলক্ষ্যে সেই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গেই যুক্ত হয়েছিল বাজি পোড়ানো সম্পর্কেও নিষেধাজ্ঞা। আদালত বলেছিলেন, সমস্ত ধরনের আতশ বাজির ওপরই বিক্রি ও ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের যে শহরগুলি এই নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত পায়ে মাড়িয়ে শব্দতান্ডবে মেতে ওঠার নির্লজ্জতা দেখিয়েছে তারমধ্যে উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে রইল খড়গপুর শহর।

শহরের ইন্দা গোলবাজার খরিদা মালঞ্চ নিমপুরা কোথায় শোনা যায়নি সেই শব্দ দানবের হুঙ্কার। মজার ব্যাপার হল, শুক্রবার এবং শনিবার খড়গপুরের মধ্য অংশে তান্ডব প্রকট হলেও শহরের দক্ষিন অংশে সেই অর্থে বড়সড় তান্ডব শোনা যায়নি কিন্তু দু’দিন প্রশাসনকে কার্যত ভূমিকাহীন দেখার পর রবিবার শব্দের তান্ডব আছড়ে পড়তে দেখা গেল দক্ষিণ অংশেও। তুমুল উদ্যোমে রবিবার দক্ষিন ঝাঁপিয়ে পড়েছে

বাজির নিষেধাজ্ঞার পক্ষে যুক্তি হিসাবে বলা হয়েছিল করোনা কালে মানুষের অবস্থা এমনিতেই সঙ্গীন। বিশেষ করে যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন তাঁদের অনেকেরই ফুসফুস সহ বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত তাতে বারুদ বেষ্টিত বিষবাষ্প আরও ক্ষতিকারক। শুধু যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরাই নন করোনাকালে বয়স্ক মানুষ, ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত মানুষ, ছাড়াও শ্বাসকষ্ট অসুখে ভোগেন এমন মানুষ ও শিশুদের জন্য বাতাসের মেশা পোড়া বারুদের গন্ধ অত্যন্ত বিপজ্জনক।

তাই এবারে শুধু শব্দবাজি নয়, নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল সমস্ত বাজির ওপরেই। বলা হয়েছিল শব্দ বা আতস কোনও বাজিই বিক্রি বা ব্যবহার করা যাবেনা। কিন্তু জেলার মধ্যে করোনা আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষে থাকা খড়গপুর শহর জেলার মধ্যে বাজি পোড়ানোয় শীর্ষেই অবস্থান করেছে। নির্দ্বিধায়, নির্বিকার বাজি ফেটেছে শহর জুড়ে।

কোথায় বাজি বিক্রি হল? কোন পথে শহরে বাজি এল, কারা কোথায় বাজি ফাটালো কেউ জানতে পারলনা! আর এত বাজির শব্দেও যে নির্বিকার নাকে সর্ষের তেল ঢেলে ঘুমানো যায় তাও দেখিয়ে দিল খড়গপুর শহরই। দু-চারটি সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকজন প্রতিবাদ করেছেন ঠিকই কিন্তু ‘মানুষের আবেগ’ (যেমনটি বলা হয়েছিল রাবন পোড়ার সময়) ঘন আইন ভাঙার প্রতিযোগিতায় সব চাপা পড়ে গেছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular