ওয়েব ডেস্ক: লকডাউন পরবর্তীতে আনলক পর্যায় শুরুর পর পরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমশই বেড়েই উঠেছে খুনের পরিমাণ। ধার দেওয়া ৩০ হাজার টাকা ফেরত চাওয়ায় শহর কলকাতাতেই এক এক মহিলাকে গলা কেটে খুন করলো এক অ্যাপ ক্যাব চালক। গত শুক্রবার ভরদুপুরে অ্যাপক্যাবে মহিলাকে নিয়ে মুদিয়ালী থেকে সাদার্ন অ্যাভিনিউ যাওয়ার পথে মহিলার গলা কেটে খুন করা হয় বলে জানা গেছে। মৃতা বছর ৪৫ এর লক্ষ্মী দাস ।
জানা গিয়েছে, মুদিয়ালিতে একটি জায়গায় কাজ করতেন লক্ষ্মী দাস নামে ওই মহিলা। লকডাউনের আগে শিবশঙ্কর দাস নামে এক অ্যাপ ক্যাব চালককে ৩০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সময়ে পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা ফেরত দিতে চাইছিলেন না শিবশঙ্কর। এদিকে অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও কাজে বের হন লক্ষ্মী। কিন্তু দুপুরে তাঁর বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যে নামলেও ফেরেননি লক্ষ্মী দেবী। এরপরই পরিবারের তরফে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নেওয়া শুরু হয়। কোথাও না পেয়ে অবশেষে লক্ষ্মীর কাজের জায়গায় যোগাযোগ করা হলে জানা যায় লক্ষ্মীকে শিবশঙ্কর নামে ওই ব্যক্তি জোর করে তুলে নিয়ে গিয়েছে।
এরপরই পরিবারের তরফে টালিগঞ্জ থানায় শিবশঙ্করের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার তদন্তে নেমে শুক্রবার রাতে বাইপাস এলাকায় খালের ধার থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, ওই মহিলাকে অ্যাপক্যাবেই খুন করে সারাদিন ঘুরছিল এক ব্যক্তি। তারপর রাতের দিকে বাইপাসের খালে দেহটি ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশের তরফে শিবশঙ্করকে ফোন করা হলে, সে ফোনটা বন্ধ করে দেয়। এরপর তার ফোন নম্বর ট্র্যাক করে শিবশঙ্করকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে গ্রেফতারের পর জেরার মুখে নিজের সমস্ত কুকীর্তির কথা ফাঁস করে সে। শনিবার তাকে আদালতে পেশ করে পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানায় পুলিশ। শিবশঙ্করকে জেরা করে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, লক্ষ্মী ও শিবশংকর দুজনেই প্রতিবেশী। দুজনের মধ্যে সম্পর্কও বেশ ভাল। সেই কারণে শিবশঙ্কর অসুবিধায় পড়ায় লকডাউনে লক্ষ্মী দেবী তাঁকে ৩০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন। তবে ধারের টাকা চাইতে গিয়েই যত ঝামেলা। সে কারণেই এই মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে। যদিও ঘটনায় মৃতার পরিবারের দাবি, সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে লক্ষ্মী করা হয়েছে লক্ষ্মী দেবীকে। তবে লক্ষ্মীদেবীর মৃত্যুতে ফের একবার রাতের শহর কলকাতার নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। সেই সাথে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধেও।