Homeএখন খবরদশক ছাড়িয়ে লাল ঝান্ডার লম্বা মিছিলে খেজুরি, এত মানুষ কোথায় ছিল? উঁকি...

দশক ছাড়িয়ে লাল ঝান্ডার লম্বা মিছিলে খেজুরি, এত মানুষ কোথায় ছিল? উঁকি মেরে দেখল শাসকদলও

ভীষ্মদেব দাশ, খেজুরিঃ পুলিশের মতে লোক হয়েছিল বাইশ থেকে তেইশ। তৃনমূলের হিসাবে হাজার দেড়েক আর সিপিএম নেতা পরিতোষ পট্টনায়ক বলছেন, কাছাকাছি ৪হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন মিছিলে। যদি পুলিশের কথাই ধরতে হয় তা’হলে বলতে হয় ২০১৬ নির্বাচনের সময় খেজুরিতে সিপিএমের সব চেয়ে বড় মিছিলের লোক সংখ্যা পুলিশ বলেছিল ৯০০ থেকে হাজার। সেই হিসাবেও বলতে হলে বলতে হয় সিপিএম বেড়েছে অন্ততঃ আজকের বৃহস্পতিবারের এই মিছিলের জন্য।

পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাঁটছিল মিছিল যা কার্যত ঠাসাঠাসি, মিছিল যখন হেঁড়িয়া চৌরাস্তায় পৌঁছেছে তখন শেষটা হাল আমলের ইন্দ্রপুরী সিনেমার সামনে। সাড়ে সাতশ মিটার লম্বা ভিড়ে ঠাসা লালঝান্ডা মিছিল ২০১১ পর দেখেনি খেজুরি।তাই বোধহয় রাস্তার আনাচে কানাচে অলিগলি থেকে উঁকি মেরে দেখেছে শাসকদলের কর্মীরাও। মিছিলটা বাম কংগ্রেস জোটের হলেও স্বস্তি পায়নি শাসকদল, এত লোক হঠাৎ করে কোথা থেকে এল, মিছিল শেষের পরই জল্পনা শুরু হয়েছে শাসকদলের খেজুরি, হেঁড়িয়া, বারাতলার ছোটবড় পার্টি অফিসে।

৪ঠা জুলাই রাতে খেজুরি-২ ব্লকের বারাতলা গ্রামের সিপিএম নেতা দেবকুমার ভূঞ্যার মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে তৈরি হয়েছিল সিপিআইএম-তৃণমূল তর্জা। দুপুরে একটি রাজনৈতিক মামলায় কাঁথিতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পর বিকালে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় ৫২ বছরের দেবকুমারকে। ভেবেছিলেন, কী আর হবে? একটু মারধর হবে। এসব আগেও খেয়েছেন, প্রায় অর্ধমৃত হয়ে ফিরে এসেছেন কয়েক বছর আগে। ২০০৯ থেকে বাড়ি ছাড়া ছিলেন পরে ফিরেছেন বছর সাতেক পর। তারপর ফের মামলা এবং মারধর। সেই মামলারই হাজিরা দিয়ে ফিরেছিলেন। তবে এবার আর ফেরা হয়নি। একটা ইটভাটার কাছে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মার তারপর কুপিয়ে ফেলে রাখা কলেজের পাশে, বাড়ি থেকে প্রায় ১কিলোমিটার দুরে দেবকুমার তখন টাটকা লাশ।

খেজুরি সিপিআইএম নেতৃত্ব অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতকারীদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হয়েছে দেবকুমার ভূঞ্যা। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন খেজুরির বিধায়ক রনজিত মন্ডল।
বৃহস্পতিবার কর্মী খুনের প্রতিবাদে পথে নামেন বাম-কংগ্রেস জোট। খুনীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে হেঁড়িয়া তদন্ত কেন্দ্রে ডেপুটেশন দেওয়া হয় দলের তরফে। হেঁড়িয়া বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল পরিক্রমা করেন নেতৃত্বরা। বাম-কংগ্রেসের যৌথ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা  আবদুল মান্নান, বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলনেতা ড. সুজন চক্রবর্তী, বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য , প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, প্রদেশ যুব কংগ্রেস নেতা সাদাব খান, সিপিএম রাজ্য নেতা হিমাংশু দাস, জেলা সিপিএম নেতা নির্মল জানা,পরিতোষ পট্টনায়ক, বিধায়ক ইব্রাহিম আলি প্রমুখ।

রাজনৈতিক চাপান উতোর রাজনীতিতে নতুন নয় কিন্তু দেবকুমারের হত্যা যেন নাড়িয়ে দিয়েছে খেজুরিকে। না হলে এত তরুনের ভিড় কেন উপচে পড়ল মিছিলে? কেন দোকানপাট, বাড়ি ঘর ছেড়ে মানুষ ভিড় জমালো বারান্দায়, অলিতে গলিতে, রাস্তার দু’ধারে? খেজুরি কী তবে পালা বদলের অপেক্ষা করছে? খেজুরির এক বাম যুব নেতা বললেন, ‘মুক্তির পথ খুঁজছেন মানুষ। এই প্রথম মিছিলের পাশ দিয়ে কিছু শাসকদলের নেতাকে মাথা নিচু করে চলে যেতে দেখেছি। আমাদের মিছিল দেখে সেই রক্ত চোখ আজ বেমালুম উধাও।”

RELATED ARTICLES

Most Popular