Homeএখন খবরপজিটিভ রোগীকে ভুল করে নেগেটিভ, ভুল ভেঙে হাসপাতালে ফেরৎ নিতেই মৃত্যু

পজিটিভ রোগীকে ভুল করে নেগেটিভ, ভুল ভেঙে হাসপাতালে ফেরৎ নিতেই মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা পজিটিভ রোগীকে ভুল করে ‘নেগেটিভ’ বলে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল কিন্তু ছেড়ে ২৪ ঘণ্টা পর ভুল ভাঙায় ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরের দিন সকালেই মৃত্যু হল সেই রোগীর। খোদ সরকারি হাসপাতালের এই বেনজির ভুলে তটস্থ গোটা পরিবার কারন পরিবারের এক ৭ মাসের একটি শিশু সহ সবার সঙ্গে পুরো একটা দিন কাটিয়ে গেছেন মৃত ব্যক্তি।

কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ এপ্রিল থেকে অসুস্থতা বোধ করতে শুরু করেন তিনি। সর্দি, কাশি, জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। ২২ এপ্রিল বিকেলে ওই বৃদ্ধকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে বলা হয়, আগে এমআর বাঙুর বা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে দেখাতে। তারপরই এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হয় বৃদ্ধকে।
গত ২৫ এপ্রিল স্বাস্থ্যভবন থেকে ফোনে পরিবারকে জানানো হয় যে, বৃদ্ধের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। পরের দিন সকালে ২৬ এপ্রিল ফের ফোন আসে স্বাস্থ্য দফতর থেকে। গোটা পরিবারকে বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়। পরিবারের দাবি , ওই দিন বিকেলেই ফোন আসে এমআর বাঙুর হাসপাতাল থেকে। বলা হয়, বৃদ্ধের কোভিড পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এরপরই ওই রাতেই বৃদ্ধকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসে তাঁর পরিবার।

হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটেও লেখা হয়, রোগীর ‘কোভিড নেগেটিভ’। পরিবারের লোকেরা নিশ্চিন্ত মনেই বৃদ্ধকে নিয়ে বাড়িতে সবার সঙ্গেই তাঁকে রাখে যে পরিবারে বৃদ্ধের ৬৩ বছরের স্ত্রী, ছেলে এবং ছেলের স্ত্রী ও তাঁদের ৭ মাসের ছেলে এবং ৬ বছরের মেয়ে রয়েছে।
পরের দিন অর্থাৎ ২৭ এপ্রিল বিকেলে ফের ফোন আসে স্বাস্থ্যববন থেকে। খোঁজ নেওয়া হয় যে, তাঁরা হোম কোয়রান্টিনে আছেন কি না? কারও কোনও উপসর্গ দেখা দিয়েছে কি না? তখন বৃদ্ধের ছেলে স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিককে জানান যে, তাঁর বাবার রিপোর্ট নেগেটিভ পাওয়া গিয়েছে। বাবাকে হাসপাতাল ছেড়েও দিয়েছে। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই ফের ফোন আসে স্বাস্থ্য দফতর থেকে। জানানো হয়, ভুল করে এম আর বাঙুর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছেন। আসলে ওই বৃদ্ধের রিপোর্ট পজিটিভ। স্বাস্থ্যভবন থেকেই বৃ্দ্ধের পরিবারকে জানানো হয়, অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হবে বাড়িতে।

সোমবার রাতেই স্বাস্থ্যভবন থেকে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে পাঠানো হয় অ্যাম্বুল্যান্স। কোভিড রোগীকে পরিবহণের সমস্ত নিয়ম মেনে বৃদ্ধকে ফের নিয়ে যাওয়া হয় এমআর বাঙুর হাসপাতালে। এ বার ভর্তি করা হয় এমআর বাঙুরের কোভিড বিভাগে।এরপরই রাত সাড়ে ১১টার সময় হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয় বৃদ্ধের অবস্থা খারাপ। আর সকালে ফোন করে হাসপাতাল জানায়, তিনি মারা গিয়েছেন। এই ঘটনায় পরিবারের বয়স্ক সদস্যের মৃত্যু শোকের চেয়েও বড় হয়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

RELATED ARTICLES

Most Popular