Homeএখন খবরলকডাউনে কি খাসির বদলে কুকুরের মাংস খাচ্ছে কলকাতা? তোলপাড় নেতাজি নগর

লকডাউনে কি খাসির বদলে কুকুরের মাংস খাচ্ছে কলকাতা? তোলপাড় নেতাজি নগর

নিজস্ব সংবাদদাতা: মাথায় বাজ পড়ার অবস্থা কলকাতার নেতাজি নগর এলাকার বাসিন্দাদের কারন তাঁদের মনে হচ্ছে লকডাউনের বাজারে খাসির মাংস বলে তাঁরা যা খেয়েছিলেন তা আদতে কুকুরের মাংস। কলকাতার নেতাজি নগর থানা এলাকায় এমনই অভিযোগ উঠেছে যে মাংসের দোকানে খাসির বদলে কুকুরের মাংস বিক্রি করা হয়েছে। বুধবার রাতে এলাকায় খবর রটে যায়, শ্রীকলোনি বাজারের একটি মাংসের দোকানে খাসির বদলে বিক্রি করা হচ্ছে কুকুরের মাংস। এরপরে ওই মাংসের দোকানের বাইরে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। মাংস বিক্রেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অসংখ্য মানুষ। চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নেতাজি নগর থানার পুলিশ।

বুধবার রাতে নেতাজি নগর থানায় খবর আসে, শ্রীকলোনি বাজারে একটি মাংসের দোকানে কয়েকটি কুকুরকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। খাসির মাংসের বদলে কুকুরের মাংস কেটে ওই বিক্রেতা মাংস বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়েই শ্রীকলোনি বাজারে যায় নেতাজি নগর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মাংসের দোকানে পৌঁছে সেখানে বাধা অবস্থায় কোন কুকুরকে পাওয়া যায়নি। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বিক্রেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাংসের দোকানের মালিক অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশকে জানায়, সে পাড়ার কয়েকটি কুকুরকে খাওয়ানোর জন্যই নিয়ে এসেছিল, বিক্রি করতে নয়। পরে অবশ্য অভিযুক্তকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, “যদি খাবার খাওয়ানোই উদ্দেশ্য থাকে তাহলে কুকুরটার মুখ কেন বেঁধে রেখেছিল?” এই বিষয়ে এক ব্যক্তি নেতাজি নগর থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। ওই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে নেতাজি নগর থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই দোকানটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় শ্রীকলোনি বাজার কমিটি।
সেদিনকার ঘটনা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘটনাটি বুধবার রাতে নেতাজিনগর থানার শ্রী কলোনি বাজার এলাকার । বাজারের দু নম্বর গেটের ঠিক পাশে কার্তিক ও লালার খাসির মাংসের দোকান। হরিদেবপুরের বিবেকানন্দ কলোনির বাসিন্দা এই দুই ভাই বছর চারেক আগে শ্রী কলোনির এই দোকান ঘরটি বাজার কমিটির কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে খাসির মাংসের ব্যাবসা শুরু করেন। জনতা কার্ফুর দিন থেকেই দোকান বন্ধ ছিল। পয়লা মে হঠাত দোকান খোলে। প্রতিদিন কাটা হত দুটি করে খাসি।

বুধবার অর্থাৎ গতকাল সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ, দোকানের ভিতর থেকে কুকুরের আর্ত চিৎকার শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দা ও আশেপাশের অন্য দোকানদাররা। দোকানে এসে দেখা যায়, একটি কালো রং এর পথ কুকুরকে দোকানের পিছন দিকের কষাই ঘরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে । এরপরই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তাহলে কি তারা পয়লা মে থেকে এই দোকানে খাসির বদলে কিনেছেন কুকুরের মাংস?
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি কলকাতায় বিক্রি হওয়া পাটনাই খাসি মূলত বিহারের পাটনা ও মধুবনি জেলা এবং উত্তর প্রদেশের সুলতানগঞ্জ আসে। লক ডাউনের বাজারে যে সাপ্লাই লাইন কার্যত বন্ধ। সামান্য কিছু মেটিয়াবুরুজ গার্ডেনরিচ থেকে আসছে। তাহলে এত খাসি আসছে কোথা থেকে?

লকডাউন শুরু হওয়ার বেশ কয়েকমাস আগে কলকাতার এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন যে, তাঁর এলাকায় গভীর রাতে কয়েকজন এসে মাছধরার জাল দিয়ে পথ কুকুরের দলকে ধরে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়। প্রশ্ন করায় তারা উত্তর দিয়েছিল যে তারা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যারা কুকুরের নির্বিজিকরনের কাজ করে। ব্যক্তির দাবি ওই ছেলেরা তেমন কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। যদিও ঘটনাটি অনেকদিন আগের কিন্তু নেতাজিনগরের এই ঘটনায় সন্দেহ উঁকি দিচ্ছে।

এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধীর নির্দেশে কলকাতার পশুপ্রেমিদের সব থেকে বড় সংগঠন অবলা-র পক্ষ থেকে এলাকায় আসেন সংগঠন এর প্রধান আযুশী দে। নেতাজিনগর থানায় দুই ভাইয়ের বিরূদ্ধে তারা লিখিত অভিযোগ জমা দেন। পুলিশও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। মাত্র বছর খানেক আগেই প্রায় সারা কলকাতাকেই ভাগাড়ের মাংস খাইয়ে ছেড়েছিল বিভিন্ন হোটেল আর পথের দোকানগুলি। এবার কী তবে কুকুরের মাংস?                   সূত্র: মহানগর ২৪×৭

RELATED ARTICLES

Most Popular