Homeএখন খবরকেশিয়াড়ীতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই শ্রমিককে খুনের চেষ্টা, ক্ষত বিক্ষত মৃতপ্রায় দেহ উদ্ধার

কেশিয়াড়ীতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই শ্রমিককে খুনের চেষ্টা, ক্ষত বিক্ষত মৃতপ্রায় দেহ উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা: কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের অনতিদুরেই এক পরিযায়ী শ্রমিকের ক্ষতবিক্ষত মৃতপ্রায় দেহকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ী থানা এলাকার লালুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন কলাবনী সংলগ্ন কুলিয়াড় মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যাবেলায় ওই শ্রমিকের অর্ধমৃত দেহটি পুলিশ উদ্ধার করেছে কুলিয়াড় স্কুলের বাথরুমের পাশ থেকে যা কিনা স্কুলটির ঠিক পেছনেই অবস্থিত। আশ্চর্যের বিষয় হল গতকাল থেকেই ওই শ্রমিকের সাথে আরও চারজন বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানেনা বলে প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে।

আহত শ্রমিকের নাম সনাতন সিং, স্থানীয় তারাপুর গ্রামের ওই ব্যক্তির ভাই বিনোদ জানিয়েছেন, ‘ আমার দাদা সহ ৫ জন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা গিয়েছিল বাদাম তোলার কাজে। সাতদিন পরে গতকালই বাড়ি ফেরে। তখন স্থানীয় পঞ্চায়েত পরামর্শ দেয় ওরা যেহেতু সংক্রমিত জোন থেকে এসেছে তাই কয়েকদিন ওই মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রেই থাকুক । সেই মত গত কাল থেকেই ওরা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রয়েছে। আজ দুপুরে আমার বৌদি খাবার দিতে গেলে আমার দাদা করোনার ভয়ে বলে, দুরে খাবার রেখে চলে যাও, আমাকে ছোঁবেনা। সেই সময় দাদাকে খুবই ভীত সন্ত্রস্ত লাগছিল বলে বৌদি বলে। যদিও দাদা কিছুই জানায়নি। সন্ধ্যা বেলায় বৌদির সন্দেহ হওয়াতে ফের যায়। তখন দাদাকে খুঁজে পায়না। বাকি চারজন জানায় তারা জানেইনা দাদা কোথায়। এরপরই বৌদি আমাদের ডাকে। আমরা খুঁজতে খুঁজতে স্কুলের পেছনের দিকে বাথরুমের পাশে দাদার রক্তাক্ত অচেতন দেহ খুঁজে পাই।”

গোটা ঘটনায় রীতিমত রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে পুলিশ। বিশেষ করে ওই চারজনের ভূমিকায় যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। যেখানে ৫জন রয়েছে সেখানে একজনকে তুলে নিয়ে বা ডেকে নিয়ে গিয়ে এই নৃশংস ভাবে খুনের চেষ্টা করল বাইরে থেকে কেউ এসে এটা পুলিশ সহজে মানতে নারাজ। তাছাড়া সনাতনের স্ত্রী রেবতী যখন বলছে দুপুর থেকেই ভয়ের মধ্যে ছিল তার স্বামী তার মানে সনাতন ইঙ্গিত পেয়েই ছিল যে তার প্রতি ভয়ঙ্কর কিছু হতে যাচ্ছে এবং সেই হুমকি সে পেয়েও ছে। যদি বাইরের কেউ এই হুমকি দিত তাহলে সে তার সঙ্গীদের তা বলত। সবকিছু মিলিয়ে সন্দেহের তির যাচ্ছে ওই চারজনের দিকেই। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে চারজনকে।

যদিও পুলিশের দাবি সনাতন ভীত সন্ত্রস্ত ছিল এমন কথা পুলিশকে জানায়নি তার পরিবার তবে ঘটনা যেই ঘটিয়ে থাকুক সে খুবই ক্রোধ থেকে এই কাজ করেছে কারন শরীরে একাধিক ছুরি মারার চিহ্ন তো রয়েইছে তার সাথে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে নাড়িভুঁড়ি বের করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দুপুরের পর এখানে যে মদ খাওয়া হয়েছে এমন প্রমান মিলেছে। অন্য কেউ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এদের সঙ্গে মদ খাবে এটা প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছেনা কারন তাদের করোনার ভয় রয়েছে। তাহলে কী মদের আসর বসিয়ে মদ খাইয়ে খুনের চেষ্টা হয়েছে? সব মিলিয়ে একটা গূঢ় রহস্যের ইঙ্গিত পাচ্ছে পুলিশ। পুলিশের দাবি রাতেই রহস্যের কিনারা হয়ে যাবে। ওদিকে অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় রাতেই সনাতনকে কেশিয়াড়ী হাসপাতাল থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular