Homeএখন খবরঠাকুর গড়া দেখতে গিয়ে বিদ্যুতের ছোবলে মৃত ২ কিশোর কিশোরী, পূজার লালগড়ে...

ঠাকুর গড়া দেখতে গিয়ে বিদ্যুতের ছোবলে মৃত ২ কিশোর কিশোরী, পূজার লালগড়ে বিষাদের ছায়া

নিজস্ব সংবাদদাতা; লালগড়: পলি মাটির শেষ প্রলেপ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। মায়ের দু’পাশে ফিনিশিং টাচের অপেক্ষায় কার্তিক গনেশ আর লক্ষী সরস্বতী। ইয়া বড় গোঁফ পাকিয়ে তৈরি মহিষাসুরও। পরের সপ্তাহেই পূজা। এ সপ্তাহেই কাপড় পরিয়ে রঙের কাজ শেষ। আর তার আগেই কেমন হচ্ছে ঠাকুর গড়া তাই দেখতেই ছুটে গিয়েছিল এক কিশোর আর কিশোরী। যা এক অমোঘ নেশা। কিন্তু সেটা করতে গিয়েই বিদ্যুৎ ছোবলে প্রান হারালো তারা। ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ের বামাল গ্রামের ঘটনায় শোকের আবহ পুরো গ্রামেই। হাহাকারে ফেটে পড়েছে দুটি পরিবার।

ঝাড়গ্রাম জেলার লালাগড় ব্লকের ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বামাল গ্রামে এখন শুধুই হাহাকার। পুজোর আনন্দ মিলিয়ে গেছে দুটি হতভাগ্য নিষ্পাপ কিশোর কিশোরীর অকাল মৃত্যুতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত কিশোরের নাম রাহুল পাত্র ( ১১) , রাহুল লালাগড় রামকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র এবং মৃত কিশোরীর নাম সুমিত্রা সিং ( ১২) , সুমিত্রা বামাল এমএসকে বিদ্যালয়ের  ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , বামাল গ্রামের পূজা বামালশিনী সর্বজনীন দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। এবার করোনা আবহে নম নম করেই পুজার আয়োজন করা হয়েছিল। শুধুমাত্র নিয়ম মেনেই মন্ডপে ঠাকুর তৈরি এবং সপ্তাহের চারটি দিন কোনও মতে পূজা করা হবে। এমনটাই ঠিক হয়েছে। বামাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন মাঠেই স্থায়ী বেদী রয়েছে। সেই বেদীতেই কাঠামো করে মৃন্ময়ীর নির্মাণ হয়। এ বছরও সেই কাজ চলছিল। সপ্তাহ গড়ালেই পুজো তাই কাজ চলছিল দিন রাত।

রাতে কাজ করার জন্য মন্ডপের কাছাকাছি একটি বাড়ি থেকে নেওয়া হয়েছিল অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ। আলো জ্বালানোর জন্য মন্ডপের লোহার গ্রিলের মধ্যে দিয়েই তার গলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই সংযোগ। অনুমান করা হচ্ছে বারবার লোহার গ্রিল খোলা এবং বন্ধ করার জন্য বিদ্যুতবাহী সেই তারের ওপরে থাকা রাবারের কোটিং উঠে গিয়ে উন্মুক্ত হয়ে যায় তামার তার আর গ্রিলের গায়ে লেগে গোটা গ্রিলের গেটই বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়ে পড়ে।

শনিবার সন্ধ্যায় রাহুল ও সুমিত্রা ঠাকুর গড়া দেখতে গিয়ে সেই গ্রিলে হাত রাখতেই দুজনেই বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে পড়ে। ঘটনার সময় বেদীর কাছাকাছি কেউ ছিলনা। কিছুক্ষন পরে অন্য একটি ছেলে ঠাকুর গড়া দেখতে গিয়ে লোহার গ্রিলের সঙ্গে লেপ্টে থাকতে দেখে এবং দৌড়ে গিয়ে স্কুল মাঠের মোড়ে বসে থাকা গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানান । গ্রামবাসীরা ছুটে এসে বাঁশ দিয়ে প্রথমে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং তাদের দুজনকে উদ্ধার করে লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় । কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করে ।

RELATED ARTICLES

Most Popular