Homeঅন্যান্যজীবন ভর আনুগত্যের পুরস্কার! বুড়ো হতেই মুখ হাত পা বেঁধে পোষ্য কে...

জীবন ভর আনুগত্যের পুরস্কার! বুড়ো হতেই মুখ হাত পা বেঁধে পোষ্য কে ফেলে দিয়ে গেল মালিক

নিজস্ব সংবাদদাতা: এটা একমাত্র মানুষই পারে! সেই মানুষ যে তার বয়স্ক বাবা-মাকে অবলীলায় বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসার পর একদিনও খোঁজ নেয়না, সেই মানুষ যে তীর্থে নিয়ে গিয়ে বাবা মাকে হারিয়ে যাওয়ার ভান করে ছেড়ে দিয়ে আসে। সেই মানুষই পারে তাকে জীবন দিয়ে ভালবাসা একটি প্রানী যে বাইরের কোনও খাবার খেতে পারবেনা জেনেও স্রেফ বুড়ো হয়ে গেছে বলে নিজের পোষ্যকে মুখ ও পা বেঁধে অচেনা অজানা জায়গায় ফেলে আসতে যেখানে তার শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা টুকুও থাকবেনা।

বৃহস্পতিবার এমনি অবস্থায় একটি হতভাগ্য আ্যলসেশিয়ান কুকুরকে উদ্ধার করল গড়বেতার বনদপ্তর।স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা একটি প্রাপ্তবয়স্ক আ্যলসেশিয়ান কুকুরের মুখ ও চারটি পা দড়ি দিয়ে বেঁধে গড়বেতার নলপা গ্রামের মাঠে ফেলে রেখে চলে যায়। এদিন সকালে জমির মালিক দীলিপ মন্ডল কৃষি কাজের জন্য নিজের জমিতে গিয়ে দেখতে পান কুকুরটি বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তার দু’চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। করুন স্বরে কুঁই কুঁই করে কেঁদে চলেছে। বেচারা কুকুর, প্রভুভক্ত কুকুর অবলীলায় তার মুখ আর পা বাঁধতে দিয়েছে মালিককে কারন সে বিশ্বাস করত যে তার মালিক তার সঙ্গে কখনও খারাপ কিছু করতেই পারেনা।

দিলীপ মন্ডল সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি গ্রামবাসীদের জানান। গ্রামবাসীরা কুকুরটির মালিকের খোঁজ করার চেষ্টা করে কিন্তু না পেয়ে প্রথমে গড়বেতা থানায় ও পরে বনদপ্তরে জানান। খবর পেয়ে ময়রাকাটা রেঞ্জের অন্তর্গত ধবাবেড়িয়া বীটের বনকর্মীরা এসে কুকুরটি কে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে বয়স হয়েছে কুকুরটির। চোখে ছানি পড়েছে আর সে কারনেই হয়ত সে ততটা চটপটে হতে পারছেনা দেখেই মালিক ফেলে দিয়ে গেছে কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই, পশু চিকিৎসকের সাহায্য নিলেই ছানি কাটিয়ে দিলে ফের কুকুরটি সড়গড় হয়ে উঠতে পারে।

বনকর্মীরা বলেন, এ ধরনের কুকুরের সমস্যা হচ্ছে এরা মালিকের হাতে ছাড়া খেতে চায়না। ফলে কুকুরটিকে খাওয়ানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। মালিক ছেড়ে গেলেও সে যে মালিককে ছাড়তে পারছেনা অভ্যাস থেকে। “পশু বলেই সমস্যা, মানুষ তো নয় যে সহজেই প্রভু বদলাতে পারবে!” বললেন এক বনকর্মী। কুকুরটিকে স্বাভাবিক করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বনকর্মীরা।

RELATED ARTICLES

Most Popular