Homeএখন খবরপ্রধান ও ইঞ্জিনিয়ারের খতমের তালিকা ঝুলিয়ে মাওবাদীদের নামে ফের পোষ্টার জঙ্গলমহলে! দাবি,...

প্রধান ও ইঞ্জিনিয়ারের খতমের তালিকা ঝুলিয়ে মাওবাদীদের নামে ফের পোষ্টার জঙ্গলমহলে! দাবি, মাওবাদী আছে থাকবে

নিজস্ব সংবাদদাতা; ঝাড়গ্রাম : আগষ্টের পর সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর পর পর ৩ মাসে মাওবাদীদের নাম করে পোষ্টার পড়ল জঙ্গলমহলে এবং ক্রমশ জনবহুল এলাকায় এগিয়ে আসছে এই পোষ্টার ফেলার দৃশ্য। আগষ্ট মাসে পোষ্টার পড়েছিল ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ৫২ কিলোমিটার দুরে ভুলাভেদায়, সেপ্টেম্বরের দেখা গেল ৪২ কিলোমিটার দুরে বেলপাহাড়ি মফঃস্বল শহর লাগোয়া এলাকায় পোষ্টার পড়তে। আর এবার মঙ্গলবার ২০শে অক্টোবর পোষ্টার দেখা গেল ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে জামবনি থানা এলাকায়। এদিন সকালে জামবনি থানার বালিজুড়ি গ্রামে মাও নামাঙ্কিত পোস্টার দেখতে পাওয়া যায় । পোস্টার গুলিতে লাল কালিতে লেখা ছিল “কাপগাড়ি অঞ্চলের চোরদের খতম তালিকা , ১ ,প্রধান ( ১ কোটি টাকার দুর্নীতি ) ২ ,ইঞ্জিনিয়ার ” এবং অন্য একটি পোস্টারে লেখা হয়েছিল ” মাওবাদী আছে সারাজীবন থাকবে”  নিচে সি পি আই মাওবাদী নাম লেখা । মাওবাদী পোস্টারের খবর পেয়ে জামবনি থানার পুলিশ সকালেই পোস্টার গুলিকে উদ্ধার করে বলেও জানা যায়।

পোষ্টার গুলি আদৌ মাওবাদীদের কী? নাকি মাওবাদীদের নাম করে প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ মেটাচ্ছে কেউ? জঙ্গলমহলে দুটি ঘটনারই নজির রয়েছে। প্রধান একাই বা তাঁর গোষ্ঠী সব লুটেপুটে খাচ্ছে এমন ভাবনা থেকে দলেরই কেউ করতে পারে। বিরোধীদের কেউ ভয় দেখাতেও করতে পারে আবার মাওবাদীরাও করতে পারে। পোষ্টারের একটি শব্দ যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী। ‘মাওবাদীরা আছে, সারাজীবন থাকবে।’ তত্ত্বগত ভাবে অনেকেই এটা ভাবেন যে মাওবাদীদের দমন করা যেতে পারে কিন্তু শেষ করে দেওয়া যায়না কারন সাধারণ উগ্রপন্থার সাথে এদের পার্থক্য হল যে এঁদের একটি মতবাদ বা ইজম রয়েছে। আর সেই ইজম শ্রেণী সংগ্রামের। মাওবাদীদের মতে শ্রেণী থাকলে সংগ্রাম থাকবে এবং তাঁরাও থাকবেন।

দ্বিতীয় যে বিষয়টি কাকতলীয় হতেও পারে আবার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রেখেই করা হতে পারে তা’হল ২০১১ সালে যেখানে মাওবাদীদের নেতা কিষানজী নিহত হয়েছিলেন সেই বুড়িশোল গ্রাম থেকে জায়গাটা মাত্র ১ কিলোমিটারের মধ্যে এবং কিষানজী নিহত হয়েছিলেন নভেম্বরের ২৪ তারিখ, আর পোষ্টার পড়ল সেই কাছাকাছি সময়ে, একমাস আগে। এই বছরটা কিষানজীর ১০তম মৃত্যু দিবস!
যদিও ঝাড়গ্রাম জেলার উচ্চপদস্থ এক পুলিশ আধিকারিকের কথায় এগুলি মাওবাদীদের নয়, স্থানীয় কিছু মানুষ এরকম পোষ্ট ছিটিয়ে এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে । পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠোর সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ আমরা খতিয়ে দেখছি গোটা বিষয়টা।’

উল্লেখ্য গত ১৫ ই আগস্ট বেলপাহাড়ির ভুলাভেদার বাঁকশোল ও শালতল গ্রাম সহ বিভিন্ন গ্রামে কালাদিবস পালনের আরজি জানিয়ে পোষ্টার দিয়েছিল মাওবাদীরা। এরপর তার কিছুদিন পরেই বেলপাহাড়ি থানা থেকে মাত্র দু’কিলোমিটার দূরে হড়দা এর মোড়ে এক ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ করার হুমকি দিয়ে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার পড়ে। এর আগে জুলাই মাসে বেলপাহাড়ীর বাঁশপাহাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ণাপানি গ্রামে এক ব্যবসায়ীকে টাকা চাওয়া হয়েছিল মাওবাদীদের নামে। ঠিক একমাস পরেই সেই ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে সেই ব্যবসায়ীর বাড়িতে গিয়ে । মাওবাদীদের তৎপরতা হাতে কলমে বুঝতে ঝাড়গ্রামের প্রান্তিক এলাকা ঝাড়খণ্ড লাগোয় ঢাঙ্গীকুসুম গ্রামে গিয়েছিলেন রাজ্য
পুলিশের ডিজিপি বীরেন্দ্র।
যদিও ৭ই অক্টোবর ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন কিছু মানুষ টাকার বান্ডিল নিয়ে এই এলাকায় মাওবাদী ঢুকিয়ে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। এই আবহেই ফের উদ্ধার হল পোষ্টার।

RELATED ARTICLES

Most Popular