Homeএখন খবরদলেই আছি,লড়াই চলবে! দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বললেন তৃণমূল নেতা

দলেই আছি,লড়াই চলবে! দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বললেন তৃণমূল নেতা

ভীষ্মদেব দাশ; নন্দীগ্রাম: যারা নয়াচরে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে, নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া সহ নানান দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারাই আমাদের বহিস্কার করছে, প্রতিবাদ করায় আমাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ১২ জন সদস্যের সমর্থনে প্রধান নির্বাচন হলেও ব্লক তৃণমূল প্রধান সহ তিনজনকে বহিষ্কার করেছে। তবে এই বহিষ্কারকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। আমি দলের কাজ করে যাব। দলটা মমতা ব্যানার্জীর। ঝাণ্ডাটা মমতা ব্যানার্জীর। আমার বিরুদ্ধে অন্যায়ের সব কথা নেত্রীকে জানিয়েছি।

মঙ্গলবার দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানার পর এমনই মন্তব্য করলেন নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা শেখ শাহাউদ্দিন। শেখ শাহাউদ্দিন, স্ত্রী কেন্দ্যামারী-জালপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মানসুরা বিবি সহ আরও দু’জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উত্তম প্রামাণিক ও মিঠুয়ারা বিবিকে দলের নির্দেশ অমান্য করার কারণে তৃণমূল কংগ্রেস দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্প্রতি আমফান দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়িয়েছিল নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ৩ নম্বর কেন্দ্যামারী-জালপাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মানসুরা বিবি ও তাঁর স্বামী শেখ শাহাউদ্দিনের। দুর্ণীতির অভিযোগ তুলে দল তাদের বহিষ্কার করেছিল। দলের নির্দেশে সরকারিভাবে পদত্যাগও করেছিলেন মানসুরা। পরে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিডিও প্রধান নির্বাচনের জন্য নোটিশ জারি করেছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ প্রধান নির্বাচনের দিন দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শেখ শাহাউদ্দিন তাঁর স্ত্রীকে প্রধানের আসনে বসিয়েছিলেন। যার জেরে নন্দীগ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটি ও জেলা কমিটি মানসুরা বিবিকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ থাকলেও প্রধান পদত্যাগ করেননি। দলপর তরফে জানাগিয়েছে তৃণমূল কংগ্রসের ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল অসুস্থ হয়ে পড়ায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তখন। বেশ কয়েক সপ্তাহ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পঞ্চায়েত অফিসে এসে কাজকর্ম করেন।

মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৩ই সেপ্টেম্বর মেঘনাদ পালের নেতৃত্বে নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির মিটিং হয়। মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় ওঁদের বহিষ্কার করা হবে। মেঘনাদ পাল বলেন, ‘কোর কমিটির মিটিংয়ে সদস্যারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্লকের ১০ টি অঞ্চলের সভাপতি। সর্বসম্মতভাবে এবং জেলার সঙ্গে আলোচনা করে ওঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।’

নন্দীগ্রাম-১ ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল, পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি আবু তাহের সহ নন্দীগ্রামের একাধিক তৃণমূল কংগ্রসের নেতার নাম উল্লেখ করে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন শেখ শাহাবুদ্দিন। বহিষ্কৃত হওয়ার পরে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন তৃণমূল দলের কর্মী তিনি। মমতা ব্যানার্জীর দলের ঝান্ডা তিনি হাতে নিয়েছেন। নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়েই রাজনৈতিক লড়াই করবেন তিনি। নন্দীগ্রামে দুর্ণীতিগ্রস্ত তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির নেতারাই তৃণমূল কংগ্রেসকে ঠকাচ্ছে। সবকিছু দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন বলেও জানান শেখ শাহাবুদ্দিন। তিনি আরও বলেন, ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যত চক্রান্ত করুক নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের ভিত শক্ত রাখতে লড়াই করার বার্তাও দেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল বলেন, ’১৫ বছর ধরে একটানা দলের ব্লক সভাপতি আছি। দুর্নীতি যদি করে থাকি তাহলে উনি এতদিন অভিযোগ করেননি কেন? দুর্নীতি করে থাকলে তদন্ত হোক। আসলে উনি বহিষ্কৃত হয়েছেন বলে নানা যন্ত্রণা থেকেই এসব কথা বলছেন।’ ব্লক সভাপতি ও তাঁর অনুগামীদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন মেঘনাদ পাল। এই ঘটনার ফলে জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শাহাবুদ্দিনের পাল্টা দুর্ণীতির অভিযোগ মেঘনাদ পাল অস্বীকার করলেও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করছেন নন্দীগ্রাম।

RELATED ARTICLES

Most Popular