Homeএখন খবরফের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে চুরি সদ্যজাত শিশু, মায়ের হাহাকারে ভরে উঠল...

ফের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে চুরি সদ্যজাত শিশু, মায়ের হাহাকারে ভরে উঠল হাসপাতাল, বে-আব্রু -নিরপত্তা, বিক্ষোভ । দেখুন সেই সিসিটিভি ফুটেজ

সেই শিশু চুরির ফুটেজ , মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে 

নিজস্ব সংবাদদাতা: জন্মের পর ভাল করে বোধহয় ঘন্টা খানেক মুখটা দেখেছিলেন মা, এরপর প্রসব জনিত ক্লান্তিতে একটু ঢুলে পড়েছিলেন তিনি। তার মধ্যেই সব শেষ। হাসপাতালে শুধু ওই টুকু ফাঁকের অপেক্ষায় ছিল আড়কাঠির দল, মিনিটের মধ্যেই হাপিস করে দিল সদ্যজাতকে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
রবিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনা কার্যত বে-আব্রু করে দিয়েছে হাসপাতালের নিরপত্তা ব্যবস্থাকে। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে কি অনায়াসে, কোনও বাধা ছাড়াই সদ্যজাত শিশুটিকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে ‘আয়া’বেশি শিশু চোর। যে হাসপাতালে পরিবার পরিজন ঢুকতে গেলে এত কড়াকড়ি সেখানে হাসপাতালের গেট থেকে কোনও কাগজপত্র ছাড়াই একজন সদ্যজাত শিশু নিয়ে বেরিয়ে গেল কিভাবে?

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতার চন্দ্রকোনা রোড লাগোয়া দ্বারিগেড়িয়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছিল ওই থানারই কাঞ্চনগিরি গ্রামের বাসিন্দা সুমিত্রা খামরুইকে। প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে আজই অর্থাৎ রবিবার সকালে স্বাভাবিক প্রসব হয় তাঁর। একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন তিনি।

চলছে বিক্ষোভ 

হাসপাতালের নিজস্ব আয়া নেই, বাড়ির লোক থাকতে পারে আর সেই সুযোগ নিয়েই বাড়ির লোকের রূপ ধরে আয়া শুধু থাকেই না, হাসপাতালে তাদের রীতিমত দাপট। সুমিত্রার  পরিবার হতদরিদ্র, স্বামী দিন মজুর। তাই আয়া বা আত্মীয়ের বেশেও আয়া রাখার ক্ষমতা নেই। সুমিতার কাছে তাই ছিল তাঁর শাশুড়ি মাধবী খামরুই। হাসপাতালে একজনের বেশি থাকার নিয়ম নেই তাই হাসপাতালের বাইরে ছিল সুমিত্রার  স্বামী অভি খামরুই, সুমিত্রার মা লক্ষী দাস এবং ঠাকুমা বেলা মিদ্যা।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
প্রসূতির শাশুড়ি মাধবী দুপুর ১১টা নাগাদ বাইরে অপেক্ষা রত সুমিতার মা লক্ষী ও ঠাকুমা বেলাকে নিয়ে ভাত খেতে কাছের একটি হোটেলে যায়। কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি বৌমা অর্থাৎ প্রসূতি সুমিত্রাকে দিয়ে আসে প্রয়োজন হলে ফোন করার জন্য। সুমিত্রার পাশেই সদ্যজাত পুত্র। প্রসবজনিত ক্লান্তিতে বোধহয় একটু ঢুলেই পড়েছিলেন সুমিত্রা। চমক কাটতেই দেখেন কোলের সঙ্গে লেপ্টে থাকা ছেলে নেই। সাথে সাথে কেঁদে ফোন করেন স্বামীকে। স্বামী দৌড়ে যান মা শাশুড়ির কাছে, হোটেলে। সবাই মিলে প্রসূতির কাছে। না , শিশু নেই।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খবর দেন পুলিশকে। ছুটে আসে পুলিশ। দেখা হয় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ। আর তখনই নজরে পড়ে হাড় হিম করা সেই দৃশ্য! সদ্যজাতকে কাপড়ে মুড়ে কোলে করে বেরিয়ে যাচ্ছে আয়া বেশি চোর । দেখছে এদিক ওদিক , তারপর নিরাপদে পেরিয়ে গেল গেট।
সদ্যজাতর শাশুড়ি মাধবী জানিয়েছেন, ” আমি বারবার নিরপত্তারক্ষীকে বলেছিলাম, আমি খেতে যাচ্ছি পরিবর্তে একজনকে রেখে যাচ্ছি কিন্তু ওরা রাজি হয়নি। বলেছিল, কোনও চিন্তা নেই আমরা আছি। আমি তো আমাদের কাউকে রেখেই যেতে পারতাম।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপাল তন্ময় কান্তি পাঁজা বলেছেন, ”আমরা পুরো বিষয়টি পুলিশের কাছে বলেছি, সমস্ত তথ্য দিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।”  ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সদ্যজাতর আত্মীয় পরিজন, অন্য রুগীর পরিজনরা। বিক্ষোভ চলে পুলিশকে ঘিরেও।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
মেদিনীপুর কলেজে শিশু চুরি এই প্রথম নয়। বছর দুয়েক আগে এরকমই এক সদ্যজাতকে চুরি করে বিক্রির বন্দোবস্ত করে ফেলেছিল এক আয়া। মহিলা পুলিশের এক পদাধিকারী ও এক সাংবাদিকের চেষ্টায় ধরা পড়ে চোর। উদ্ধার হয় শিশুটি। সেই ঘটনার পর বেসরকারি আয়া পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আবার ফিরে আসে আত্মীয় বেশি আয়ার দল আর এর কারন হল ভোট। হাসপাতালে আয়ার আয়ের তাগিদে ক্রমাগত চাপ পড়তে থাকে বিধায়ক, কাউন্সিলরদের ওপর। ভোটের মহিমায় আবার স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত আয়া রাজ। আর তারই নিদারুণ ফলশ্রুতি আরও একটি শিশুচুরির ঘটনা। 

RELATED ARTICLES

Most Popular