Homeএখন খবরNIAজেরা শুরু করল ছত্রধর মাহাতকে,শুক্রবার সাড়ে চারঘন্টা জেরার পর শনিবার সকাল ৯টায়...

NIAজেরা শুরু করল ছত্রধর মাহাতকে,শুক্রবার সাড়ে চারঘন্টা জেরার পর শনিবার সকাল ৯টায় শালবনীর কোবরা ক্যাম্পে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা: ফেব্রুয়ারির ১তারিখ সমস্ত চালু মামলায় খালাস পেয়ে জেল থেকে লালগড়ের বাড়িতে ফিরেছিলেন। কয়েক মাস সমাজসেবার ধরি মাছ না ছুঁই পানি করে হঠাৎই গোপীবল্লভপুরের এক তৃণমূলের সভায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন ছত্রধর মাহাত। সময়ান্তরে দলীয় কর্মীদের কাছে আক্ষেপ করে বলেছিলেন কোনও পদ না থাকলে কাজ করা যায়না। মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রার্থনা পূরণ করে ২৩জুলাই তাঁকে সরাসরি রাজ্যকমিটির মুখপাত্র করে দিয়েছেন। কিন্তু কাঁটা হয়ে গেল NIA বা জাতীয় তদন্ত কারী সংস্থা। শুক্রবার দুটি পুরানো মামলায় মাওবাদীদের অগ্রনী সংগঠন পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারনের কমিটির প্রাক্তন মুখপাত্র ছত্রধর মাহাতকে জেরা শুরু করল দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস জনিত ঘটনার সর্বোচ্চ তদন্ত কারী সংস্থা NIA।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী থানার CRPF এর কোবরা বাহিনীর ব্যাটেলিয়ানের সদর দপ্তরে বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ৩টা অবধি এই জেরার কাজ চালিয়েছে NIAয়ের চার সদস্যের একটি দল যাঁর নেতৃত্বে ছিলেন ডেপুটি পুলিশ সুপার মর্যাদার এক আধিকারিক। ১১বছর জেলে কাটানোর পর এই নতুন বিড়ম্বনা মাহাতের সামনে যাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে জানিয়ে দিয়েছেন ছত্রধর। তিনি জানান, তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে NIA কে ব্যবহার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য সিপিএম নেতা খুন ও রাজধানী এক্সপ্রেস পণবন্দির দুটি মামলার তদন্তে শালবনিতে ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল NIA। মহামারি পরিস্থিতিতে কলকাতায় এসে তদন্তকারী সংস্থার সামনে হাজিরা দেওয়ায় অসুবিধার কথা জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ছত্রধর মাহাতো। বিচারপতি দেবাংশু বসাক মঙ্গলবার সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শালবনিতে ক্যাম্প করা ও চার সপ্তাহে তদন্ত শেষ করার ব্যাপারে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চান। কেন্দ্রের তরফে এডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর শালবনিতে ক্যাম্প ও চার সপ্তাহে তদন্ত শেষের আশ্বাস দেন।

ছত্রধরের পক্ষে দেবাশিস রায় ও নীল বসু তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ২০০৯ সালে ঝাড়গ্রামের সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুন ও বাঁশপাহাড়িতে রাজধানী এক্সপ্রেসকে পণবন্দি করে মাওবাদীরা। ইউএপিএ তে মামলা রুজু হয়। সেই ঘটনায় তদন্ত করে চার্জসিট দেয় পুলিশ। অভিযুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার হয়েও পরে জামিন পান ছত্রধর। এ বছর এপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ওই দুটি মামলারই নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দেয় NIAকে।

মাস দেড়েক আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীতে ঢুকে ছিলেন এই তদন্তকারী দলটি। অত্যন্ত সন্তর্পণে এতদিন ধরে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে স্বাক্ষ্য প্রমানাদি জোগাড় করেছেন তাঁরা। তারপর আজই প্রথম জেরার কাজ শুরু করেন চার সদস্যের ওই দলটি। রীতিমত প্রশ্নপত্র তৈরি করে এই জেরা চলেছে এবং প্রতিটি বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে তিনি অস্বীকার করতে না পারেন কোনও বয়ান। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিও করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। চার সদস্যের আধিকারিক এই জেরা টানা চালিয়ে গেলেও মাঝে মধ্যেই জেরা ছেড়ে উঠে গেছেন ডিএসপি মর্যাদার আধিকারিক। সাড়ে চার ঘন্টা জেরার পর আগামীকাল, শনিবার আবার তাঁকে হাজির হতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে এই জেরায় সন্তুষ্ট না হলে NIA তাঁকে গ্রেপ্তারের পথেও যেতে পারে। তবে এই জেরা সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে যেহেতু ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ছত্রধর তাই গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে তিনি আদালতেও যেতে পারেন। তবে NIA এতটাই ক্ষমতা বহন করে যে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের মামলায় গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ যোগাড় করার কাজটি খুবই কঠিন।

RELATED ARTICLES

Most Popular