Homeরাজ্যআবাস যোজনার টাকায় বাড়ি বানানোর পর টাকা ফেরত চেয়ে নোটিশ প্রশাসনের, ক্ষুদ্ধ...

আবাস যোজনার টাকায় বাড়ি বানানোর পর টাকা ফেরত চেয়ে নোটিশ প্রশাসনের, ক্ষুদ্ধ সুতির ৫ পরিবার

ওয়েব ডেস্ক : উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে! ‘ভুল’ করেছে প্রশাসন, আর সেই ভুলের মাশুল গুনতে হচ্ছে উপভোক্তাদের৷ বাড়ি তৈরির জন্য বাংলা আবাস যোজনার টাকা দিয়েছে প্রশাসন। সেই টাকায় বাড়ি তৈরিও প্রায় শেষের মুখে। এবার উপভোক্তাদের কাছ থেকে সেই টাকাই ৭ দিনের মধ্যে ফেরত চাইল ব্লক প্রশাসন! বিডিও-র এই সিদ্ধান্তে চরম বিপাকে মুর্শিদাবাদের সুতির ৫ পরিবার। কি কারণে টাকা দিয়েও এতদিন পর প্রশাসনের তরফে তাদের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাওয়া হল? কি করেই বা সাতদিনের মধ্যে সমস্ত টাকা ফেরত দেবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না গ্রামের অসহায় মানুষগুলো।

জানা গিয়েছে, গত ডিসেম্বরে বাংলা আবাস যোজনায় ৬০ হাজার করে টাকা পেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সুতি-১ ব্লকের বংশবাটি গ্রামের রণজিৎ মাঝি, বিকাশ মাঝি, ঘুতু মাঝি, অজিত মাল ও নিবারণ মাল নামে পাঁচটি পরিবার। টাকা পাওয়ার পর কয়েকমাস পর তারা বাড়ি তৈরির কাজে হাত দেন। ইতিমধ্যেই সেই টাকায় কাঁচা বাড়ি পাকা করেছেন তাঁরা। অভিযোগ, মাস খানেক আগে জেলা প্রশাসনের তরফে বংশবাটি গ্রামের ওই পাঁচ পরিবারে নোটিস পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, ভুলবশত তাঁদের অ্যাকাউন্টে অন্যের বাংলা আবাস যোজনার টাকা ঢুকেছে। তাই সেই টাকা ব্লক অফিসে অতি সত্ত্বর ফেরত দিতে হবে। নোটিসটি দেখার পর রীতিমতো চমকে উঠেছেন পরিবারগুলি।

একেই নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তার ওপর বাড়ি তৈরি হয়ে যাবার পর সেই টাকা কিভাবে তারা ফেরত দেবেন কিছুতেই বুঝে উঠতে পারেন না। ফলে নির্দিষ্ট দিনে টাকা ফেরত দেওয়াও সম্ভব হয়নি। এরপর ফের ৩০ জুন আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়ে ওই ৫ পরিবারের সদস্যদের জুলাই মাসের ৭ তারিখে ব্লক অফিসে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ নোটিশ অনুযায়ী গত ৭ জুলাই তারা ব্লক অফিসে গেলে আগামী ৭ দিনের মধ্যেই টাকা ফেরতের নির্দেশ দেয় ব্লক প্রশাসন। তাদের পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি জানিয়ে টাকা ফেরত না দিতে পারার বিষয়টি বিডিওকে জানালেও তাদের কথা শুনতে নারাজ ব্লক প্রশাসন৷ এদিকে তাদের ‘ভুল’ এর মাশুল গুনতে রাতের ঘুম উড়েছে সুতীর ৫ পরিবারের।

এবিষয়ে প্রশাসনের উপর ক্ষোভ উগড়ে উপভোক্তা রঞ্জিত মাঝি বলেন, “টাকা পেয়ে বাড়ি তৈরি হয়ে যাওয়ার পর আমাদের কাছে টাকা ফেরত চাইছে। আমরা কীভাবে দেব? আমরা তো আর জানি না যে ভুল করে ঢুকেছে! এই মুহূর্তে কী করব, কীভাবে টাকা ফেরত দেবো প্রশাসনকে? কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।” এদিকে বিষয়টি নিয়ে সুতি-১ ব্লকের বিডিও রবীন্দ্রনাথ বাড়ুই জানান, “টাকাটা অন্যজনের। কিন্তু একই নামের কারণে কিংবা ভুলবশত এদের অ্যাকাউন্টে চলে যায়। বিষয়টি জানিয়ে তাঁদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। একজন ইতিমধ্যেই টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি চারজন এক সপ্তাহের মধ্যেই টাকা ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন।”

সাধারণতঃ একটি প্রকল্পের জন্য একই এলাকার অনেকেই আবেদন করে থাকেন সেক্ষেত্রে নাম এক হলেও আরও নানান তথ্য থাকে যেগুলি দিয়ে আসল উপভোক্তাকে চেনা যায়। অন্যদিকে যদি নাম এক থাকায় ভুল করে এক জনের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে সেই একই ভুল ৫ টি পরিবারের সাথে কিভাবে হয় তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। পাশাপাশি, গ্রামের গরীব মানুষ যাদের কাঁচা বাড়ি পাকা করতে সরকারি সাহায্য নিতে হয় তারা কিভাবে এতগুলি টাকা মাত্র ৭ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে পারবে? ফলে প্রশাসনের চরম গাফিলতির জেরেই সেই মাশুল গুনতে হচ্ছে সুতির ৫ পরিবারকে।

RELATED ARTICLES

Most Popular