Homeএখন খবরশরীর ময় সন্তানের অত্যাচারের চিহ্ন, রাতের অন্ধকারে ১০কিলোমিটার হেঁটে থানায় আশ্রয় চাইলেন...

শরীর ময় সন্তানের অত্যাচারের চিহ্ন, রাতের অন্ধকারে ১০কিলোমিটার হেঁটে থানায় আশ্রয় চাইলেন নব্বই উর্দ্ধ দম্পত্তি

ভোরের আলোতেও কাটেনি রাতের আতংক 

নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার রাত ১১টা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুরের মেদিনীপুর জেলার কাঁথি থানায় বসে চোখের জল ফেলতে ফেলতে নব্বই বছর বয়স পেরিয়ে যাওয়া দুই দম্পত্তি কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে প্রশ্ন করলেন, ”জীবনে সব চেয়ে বড় ভুল কি করেছি জানেন?” অভিযোগ লিখতে লিখতেই চোখ তুলে তাকালেন। সেই চোখের দিকে তাকিয়ে ছলছল চোখে তিন সন্তানের বৃদ্ধা জননী নিজেই উত্তরটা দিয়ে বললেন , ” এই গর্ভে ওদের জন্ম দিয়ে আর বড় করে তুলে।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
একটু আগেই অন্ধকারে পথ হাতড়ে হাতড়ে ১০কিলোমিটার পথ হেঁটে এসেছেন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছেন তখনও। থানার আলোয় মাঝারি শীতে গায়ের পোশাক তুলে দেখাচ্ছেন শরীর ময় প্রিয় সন্তানের অত্যাচারে চিহ্ন। সেই সন্তান যাদের পরম মমতায় বড় করে তুলেছেন, গায়ে আঁচড় লাগতে দেননি। হতভম্ব পুলিশ আধিকারিক আর কনস্টেবলরা!

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের মুকুন্দপুর গ্রামের এই ঘটনা চোখে জল এনে দিয়েছে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদের। বাড়ি থেকে ১০কিলোমিটার দুরে কাঁথি থানায় পৌঁছে তখনও স্বস্তির দম নিচ্ছেন নব্বই পেরিয়ে আসা জিতেন দেবনাথ ও তাঁর স্ত্রী অলকা। ছেলে ও বৌমা চরম অত্যাচারের কাহিনী শুনে আর অত্যাচারের নিদর্শন দেখে হতবাক কাঁথি থানার আধিকারিক অভিজিৎ পাত্র।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এক আধটি নয়, সন্তান তিন তিনটি কিন্তু সেই তিন ছেলের কোনও ছেলে বৌমাই তাঁদের দেখেনা। বৃদ্ধ বয়সের উপার্জনেই বৃদ্ধ বৃদ্ধা নিজেরাই হাত পুড়িয়ে রান্না করে খান। কিন্তু তাতেই শেষ নয়, তারপরেও চলে অত্যাচার। সম্পত্তি লিখে দিতে হবে।
জীতেনবাবু জানান , “শনিবার রাতে তারা স্বামী স্ত্রী খেতে বসেছেন এমন সময় ছেলে গোরা দেবনাথ ও বৌমা হেনা বাড়িতে চড়াও হয়ে খাওয়ার থালাতে লাথি মেরে ফেলে দেয়। প্রতিবাদ করলে শুরু করে মারধর। এমনকি একটি সাদা কাগজে জোর করে সই করে নেওয়া চেষ্টা করে ছেলে ও বৌমা। দাবী সম্পত্তি তাদের নামে লিখে দিতে হবে। আমাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে ছেড়ে দেয়। ছেলে ও বৌমা শাসিয়ে  দিয়ে যায় রাতেই দুইজনকে প্রাণে মেরে দেবে।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বৃদ্ধা আলোকা দেবনাথ জানান, ” তিন ছেলে কেউ আমাদের খেতে দেয় না। দুইজন আলাদা রান্না খায় । প্রতিবেশীদের কাছ সাহায্য নিয়ে, কখনো কখনো স্বামী অন্যের বাড়িতে গিয়ে সেলাইয়ের কাজ করে কিম্বা বাড়ি বাড়ি নারকেল ও সুপারি বিক্রি করে সেই টাকায় সংসার চালায়।” 
 অভিযোগ পেয়েই  কাঁথি থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আর সেই খবর পেয়েই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত ছেলে বৌমা। পুলিশ অবশ্য খোঁজ খবর নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। 

RELATED ARTICLES

Most Popular