Homeএখন খবরপাঁশকুড়া টাইমবোম কান্ডের কিনারা! দোকানদারকে ভয় দেখাতে, টাইমবোমা সদৃস বস্তু বানিয়েছিল যুবক

পাঁশকুড়া টাইমবোম কান্ডের কিনারা! দোকানদারকে ভয় দেখাতে, টাইমবোমা সদৃস বস্তু বানিয়েছিল যুবক

ভীষ্মদেব দাশ, পাঁশকুড়া (পূর্ব মেদিনীপুর): ইমারতি ভান্ডার থেকে টাইমবোমা সদৃশ বস্তু উদ্ধারকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল পাঁশকুড়ার শেরহাটি এলাকায়। বস্তুটি উদ্ধার করেছিল পুলিশ ও বোম স্কোয়াড। টাইমবোমার মতোই জোড়া বস্তুগুলিতে লাল, কালো, সবুজ রঙের স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল। রিমোর্ট কন্ট্রোলের মাথায় জ্বলছিল লাল আলো। তাই প্রাথমিক দর্শনেই সকলে টাইমবোমা বলে অনুমান করেন। লাল আলো জ্বলল, ঘড়ির কাঁটা ঘুরলেও বিস্ফোরণ থেকে মুক্তি পেয়েছিল পাঁশকুড়া। এই রহস্যের কিনারা পেল পুলিশ। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদব বলেন, পাঁশকুড়া বোমা-কান্ডের মুল অভিযুক্তকে ৬ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শেখ আসানুল আলি নামের যুবকের বাড়ি পাঁশকুড়ার রামগড়ে। হায়দ্রাবাদে মার্বেল মিস্ত্রির কাজ করতো ওই যুবক। লকডাউনে বাড়ি ফিরেছে বছর ২৪শের শেখ আসানুল আলি। রজত গাঁতাইতের দোকান থেকে ধারে ইমারত সামগ্রী কিনেছিল। ধার শোধের জন্য রজত গাঁতাইত চাপ দিচ্ছিলেন। তাই রজত বাবুকে ভয় দেখাতে যুবক ইউটিউব দেখে আইডি বিস্ফোরকসদৃশ বিস্ফোরক বানিয়েছিল। তারপর বৃহস্পতিবার সকালে দোকানের গোডাউনে ঢুকে বিস্ফোরকসদৃশ বস্তুটি রেখে দেয়। এরপরই অজানা নাম্বার থেকে রজত গাঁতাইতকে ফোন ও এসএমএসের মাধ্যমে বোমা রাখা আছে জানিয়েছিল। সেই সিম ও বিস্ফোরক তৈরির কিছু সরঞ্জাম ধৃতের থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া সরঞ্জাম ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত পাঁশকুড়া শহর থেকে প্রায় ৭কিলোমিটার দুরে শেরহাটি গ্রাম। গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক কার্তিক গাঁতাইতের ইমারতি ভান্ডার রয়েছে শেরহাটি বাজারে। বৃহস্পতিবার ছেলে রজত গাঁতাইত ইমারতি ভান্ডারে ছিলেন। রজত বাবু জানিয়েছিলেন, সকাল ৯টা নাগাদ অজানা নাম্বার থেকে ফোন এসেছিল। ফোনে আমাকে জানানো হয় গুদামে বোমা আছে। তড়িঘড়ি খবর পাঠানো হয় পাঁশকুড়া থানায়। এলাকায়ও টাইমবোমা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পুলিশ ও দমকল বাহিনী পৌঁছায়। দোকান চত্বর ঘিরে ফেলে বিশাল পুলিশ বাহিনী। দোকানের পাশাপাশি বসবাসকারী বাসিন্দাদেরও দুরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঘটনাস্থলে বোম স্কোয়াড ও পুলিশ কুকুর এসে বোমা শনাক্তকরণ করে। তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অতীশ বিশ্বাস জানিয়েছিলেন, বিকেলে বোম স্কোয়াডের টিম বোমাগুলো উদ্ধার করেছে। বোম স্কোয়াড বোমাগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন। বস্তুগুলোর ভিতরে বোমা তৈরির কি কি উপাদান আছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। রজত গাঁতাইতের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী স্থানীয় যুবক শেখ আসানুল জিনিসপত্র কিনতে এসেছিল। তাছাড়া দোকানে কেউ আসেনি। ওই যুবকের দোকানে কম-বেশি যাতায়াত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে শেখ আসানুলকে আটক করেছিল পুলিশ। কিন্তু অভিনব পদ্ধতিতে কেন টাইমবোম দোকানের গোডাউনে রাখল তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু জেরায় ধৃত আসানুল স্বীকার করেছে কার্তিক গাঁতাইতকে ভয় দেখাতে ইউটিউব দেখে আইডি বিস্ফোরক বানিয়েছিল সে। ধৃত আসানুলকে আজ আদালতে তোলা হবে বলে জানাগিয়েছে। পুলিশ আসানুলকে হেপাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করবেন বলে জানাগিয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular