Homeএখন খবররাজ্যের প্রস্তাব মেনেই পরীক্ষা বাতিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের, একই পথে হাঁটতে চলেছে অন্য...

রাজ্যের প্রস্তাব মেনেই পরীক্ষা বাতিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের, একই পথে হাঁটতে চলেছে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও, দেখে নিন কী ভাবে রেজাল্ট তৈরি করা হবে

নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা পরিস্থিতিতে উচ্চ মাধ্যমিকের মতই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাব দেয় রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর সেই পরামর্শ মেনে নিয়ে বৃহস্পতিবারই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। নিশ্চিত ভাবেই এই একই পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্যের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও। এখন প্রশ্ন হল পরীক্ষা বাতিল করার পর ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন হবে কিসের ভিত্তিতে? একটা কথা বলা হচ্ছে যে আগের পরীক্ষাগুলির ভিত্তিতেই চূড়ান্ত ফলাফল তৈরি হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল কেউ যদি আগে ফেল করে থাকে কিংবা কম নম্বর পেয়ে থাকে এবং পরে সে বেশি নম্বর পাবে এমনটা আশা করে থাকে তাহলে কী হবে? দেখা যাক কি কি গাইড লাইন দেওয়া হয়েছে?

প্রথমেই বলে রাখা দরকার আগে কোন বিষয়তে ফেল থাকলেও চিন্তার দরকার নেই। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়ারা ওই ফেল করা বিষয় বা পেপারে সবথেকে বেশি নম্বর যে পেপারে পেয়েছে সেই পেপারের নম্বর দিয়েই ফেল করা  পেপারে পাস করানো হবে। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের মূল্যায়ন নিয়ে এরকমই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রস্তাবকেই কার্যত বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট একপ্রকার সিলমোহর দিল। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের বিগত বছরগুলিতে পরীক্ষাতে পাওয়া সব থেকে বেশি নম্বরকেই চূড়ান্ত বর্ষের নম্বর হিসেবে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে এই নম্বরের গুরুত্ব থাকবে ৮০% ও বাকি ২০ শতাংশ নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম বানিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই নিয়মগুলি হল:-

১) বিএ এবং বিএসসি পার্ট থ্রি পরীক্ষার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন হবে ৮০% নম্বর দেওয়া হবে গত দু’বছরের পরীক্ষাতে সবথেকে বেশি নম্বর পেয়েছে সেই নম্বরকেই চূড়ান্ত বর্ষের নম্বর হিসেবে দেওয়া হবে। বাকি কুড়ি শতাংশ নম্বর দেওয়া হবে তৃতীয় বর্ষের টেস্ট পরীক্ষার মাধ্যমে যে ইন্টার্নাল অ্যাসেসমেন্ট গুলি নেওয়া হয়েছে তার ভিত্তিতে।১০ ই জুলাই এর মধ্যে কলেজ গুলিকে সেই ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট নম্বর পাঠাতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে। এক্ষেত্রে যে সমস্ত পড়ুয়াদের কোন পেপার অকৃতকার্য রয়েছে সেই পেপার এ বাকি পেপার গুলির মধ্য থেকে সব থেকে বেশি নম্বর কেই ওই ফেল করা পেপারে দিয়ে পাস করানো হবে।

২) বি.কম এর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই সেমিস্টার সিস্টেম চালু করেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এক্ষেত্রে ৮০% নম্বর দেওয়া হবে আগের পাঁচটি সেমিস্টার এর মধ্যে সবথেকে বেশি নম্বর যে সেমিস্টারের পেয়েছে সেই নম্বর কে যোগ করে ও বাকি ২০ শতাংশ নম্বর দেওয়া হবে আগের সেমিস্টার গুলি ইন্টার্নাল অ্যাসেসমেন্ট এর নম্বরের ভিত্তিতে। এক্ষেত্রেও কোন পেপারে ব্যাক বা ফেল থাকলে আগের পেপার গুলির মধ্য থেকে সবথেকে বেশি নম্বর পাওয়া নম্বর কি ওই ফেল করা পেপার এর নম্বর যোগ করে পাশ করানো হবে পড়ুয়াদের।

৩) স্নাতকোত্তর স্তরের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৮০ শতাংশ নম্বর দেওয়া হবে আগের তিনটি সেমিস্টারের মধ্য থেকে যে সেমিষ্টারে ছাত্রছাত্রীরা সবথেকে বেশি নম্বর পেয়েছে চূড়ান্ত সেমিস্টারের সেই নম্বর যোগ করে দেওয়া হবে। বাকি ২০ শতাংশ মূল্যায়ন ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট বা কিভাবে হবে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানরা ঠিক করবেন এবং ১০ই জুলাইয়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে নম্বর সহ তালিকা পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রেও কোন পেপারে ব্যাক বা ফেল থাকলে সেক্ষেত্রে বাকি পেপারগুলো মধ্য থেকে যে ব্যাপারে সব থেকে বেশি নম্বর পেয়েছে সেই নম্বরই ফেল করা পেপারে নম্বর হিসেবে যোগ করে ছাত্র-ছাত্রীদের পাস করানো হবে।

৪) ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট আইনের মতো প্রফেশনাল পাঠ্যক্রম গুলির ক্ষেত্রে ৮০% নম্বর দেওয়া হবে ইন্টার্নাল অ্যাসেসমেন্ট সেমিস্টার পরীক্ষা বা আগের সেমিস্টারগুলির মধ্যে কে সবথেকে বেশি নম্বর পাওয়া সেমিস্টারের নম্বর যোগ করে ও বাকি কুড়ি শতাংশ নম্বর দেওয়া হবে অ্যাসাইনমেন্ট বেসড মূল্যায়নের উপর।

জানা গেছে, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করতে চায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে ইউজিসি তরফে প্রয়োজনীয় নির্দেশ বা প্রস্তাব দিলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষ শুরুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular