Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গকরোনায় ত্রানবিলি নিয়ে রাজনীতি, লকডাউন ভেঙে রাস্তায় ক্ষোভে ফেটে পড়ল বালুরঘাট

করোনায় ত্রানবিলি নিয়ে রাজনীতি, লকডাউন ভেঙে রাস্তায় ক্ষোভে ফেটে পড়ল বালুরঘাট

নিজস্ব সংবাদদাতা: আশংকা দানা বাঁধছিল হঠাৎ করে রাজনৈতিক সমাজসেবীদের রাস্তায় নেমে পড়ায়। আশংকা রাজনীতির, আরও স্পষ্ট করে বললে, আশংকা ভোটের রজনীতির। আর সেই রাজনীতি করার আভিযোগ তুলেই লকডাউন ভেঙে রাস্তায় তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন বালুরঘাটের মানুষ। মানু্ষের দাবি বেছে বেছে ত্রান দেওয়া হচ্ছে। এই মহাসংকটের সময়ে শতশত মানু্ষের রাস্তায় নেমে শাসকদলের বিরুদ্ধে ত্রান নিয়ে রাজনীতি করার দাবি আরও একবার লজ্জায় ফেলে দিল পশ্চিমবঙ্গকে। এখানে বন্যাত্রানে, শষ্যবীমায়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এমনকি নির্মল মিশন বাংলার শৌচাগারের বরাদ্দ নিয়ে রাজনীতির আভিযোগ উঠেছে বারংবার কিন্তু করোনার ত্রান নিয়েও রাজনীতি! হায় বাংলা, আর কত দেখাবে তুমি?

শনিবার, বালুরঘাট পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ছিন্নমস্তা কলোনীর কয়েকশ পুরুষ মহিলা মিলে বিকাল থেকে রাত অবধি বিক্ষোভ দেখালেন রাস্তায় নেমে। তাঁদের দাবি তৃণমূলের নেতারা বেছে বেছে ত্রান বিলি করছেন শুধুই তৃণমূল সমর্থিত পরিবারে। ৫কেজি চাল আর ১কেজি আলুর প্যাকেট মিলছে শুধুই তাঁদের যাঁরা তৃণমূলের ঝান্ডা ধরেন। স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত সেই সংবাদে দেখা গিয়েছে দুপুর থেকে ত্রানের জন্য অপেক্ষা করতে করতে নি:সহায় ঘরবন্দী মানুষরা সন্ধ্যাবেলায় জানতে পারে যে আর ত্রান আসবেনা। তাঁরা নাকি এও জানতে পারেন যে বেছে বেছে ত্রান দেওয়া হচ্ছে তৃনমূল সমর্থক পরিবারগুলিকেই। এরপরই দলে দলে মানুষ রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ভেঙে চৌচির হয়ে যায় মূখ্যমন্ত্রীর বারংবার আবেদন করা লকডাউন।

বালুরঘাটের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল স্টার সংবাদের সামনে রেখা দাস, সুজিত সূত্রধরের মত বৃদ্ধ বৃদ্ধারা জানান, গত কয়েকদিন ধরে ঘরবন্দী তাঁরা। ঘরে চাল ডাল শেষ। শিশুরাও এবার খাদ্য সংকটের মুখে অথচ ত্রান পাচ্ছেন না তাঁরা। উল্লেখ্য এই ছিন্নমস্তা কলোনী পুরোটাই বস্তি এলাকা এবং প্রায় সমস্ত পরিবারগুলি দিনমজুরির ওপর নির্ভরশীল। লকডাউনে ভয়াবহ অবস্থা তাঁদের। এরই মধ্যে এই তথাকথিত ‘রাজনৈতিক ত্রানবাজি’তে দিশেহারা মানুষ। মহামারীর দাপটেও নিরুপায় হয়ে রাস্তায়। ক্ষুব্ধ মানুষকে আওয়াজ তুলতে দেখা গেছে ”খেতে পেলে সবাই মিলে খাব, না’ হয় সবাই মিলে না খেতে পেয়ে মরব। ত্রানের রাজনীতি মানবনা।”

প্রশ্ন হল যেখানে সরকার এবং মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী স্বয়ং ঘোষনা করেছেন যে, সমস্ত গরীব, নিরন্ন মানুষকে, দিনমজুর পরিবারগুলিকে সরকার ত্রান দেবেন, কোনও পরিবারই লকডাউনে অভুক্ত থাকবেনা, তখন আলাদা করে রাজনৈতিক নেতারা ত্রান নিয়ে নামবেন কেন ? এক্ষেত্রে কারও কিছু দেওয়ার থাকলে প্রশাসনকে দেবেন এবং প্রশাসন প্রয়োজন অনুসারে সংশ্লিষ্ট জায়গায় তা বিলি করবেন। একটা অদ্ভুত বিষয় লক্ষ্য করার মত যে, লকডাউনের কয়েকদিন গড়ানোর পরই রাজনৈতিক নেতাদের নিজ নিজ এলাকায় ত্রানবিলিতে নেমে পড়তে দেখা যাচ্ছে। বিরোধীরাও দাবি করছেন, কোথাও কোথাও সরকারি ত্রানবিলিতে অংশ নিচ্ছেন শাসক দলের নেতা কর্মীরা।

RELATED ARTICLES

Most Popular