Homeএখন খবরদলের কলকাঠিতে সরলেন প্রাথমিকের চেয়ারম্যান, লাভজনক হয়ে ওঠা পদে বসতে লম্বা লাইন...

দলের কলকাঠিতে সরলেন প্রাথমিকের চেয়ারম্যান, লাভজনক হয়ে ওঠা পদে বসতে লম্বা লাইন তৃনমূল শিক্ষক নেতাদের

অপসারিত চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাঁতরা 

নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ৯বছরে যথেষ্টই লাভ জনক হয়ে উঠেছে বাংলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান পদটি। ব্যতিক্রম নয় পশ্চিম মেদিনীপুরও। সাম্মানিক এই পদে বসেই জেলার প্রথম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও দলের ভেতরেই অভিযোগ উঠেছিল ব্যাপক দুর্নীতির। আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়ার তালিকাতে এবার উঠে আসল মা-মাটি-মানুষের আমলের দ্বিতীয় চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাঁতরার নামও। আর কার্যত সেই অভিযোগেই বৃহস্পতিবার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
রাজ্যপাল স্বাক্ষরিত সেই পদচ্যুতির চিঠি আগুনের মত ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলিতেও আর এতেই পরিস্কার হয়ে গেছে যে সাঁতরাকে সরাতে কতটাই মরিয়া ছিল দলেরই অন্দর মহলের কর্মীরা। এদিন তাঁকে পদ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশের সাথে দ্রুততার সঙ্গে সেই স্থান আপাতত সামলানোর দায়িত্ব হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষার জেলা পরিদর্শক বা ডিআই’কে। সাঁতরার অপসারনে উল্লসিত তৃনমূল শিক্ষা সেলের নেতা কর্মীরা, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এমনকি দলেরও একাংশ।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সাঁতরার অপসারনের পরেই এই বিষয়ে, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অর্ঘ্য চক্রবর্তী বললেন, “কিছু অসাধু চক্রের দ্বারা চেয়ারম্যান চালিত হচ্ছিলেন বলে আমাদের মনে হয়। বিস্তর অভিযোগ ছিল তাঁর কাজকর্মের বিরুদ্ধে। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁকে আমরা সংগঠনগত ভবে কৃতজ্ঞতা জানাই। আপাতত দায়িত্বে থাকছেন ডিয়াই সাহেব। আমরা তাঁকে স্বাগত জানাই এবং তাঁকে সমস্ত রকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সাঁতরার বিরুদ্ধে দলের শিক্ষক কর্মীদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল যে তিনি দাম্ভিক হয়ে উঠেছিলেন এবং কারও পরামর্শ ছাড়াই একক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতেন। অভিযোগ মেদিনীপুর শহর কেন্দ্রিক দুটি সার্কেল বা চক্র যথাক্রমে, সদর আর আর এবং সদর আরবানে ছাত্র-শিক্ষক আনুপাতিক হারে অতিরিক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকার পরও, গত দু-তিন মাসে অন্তত ৮ জন শিক্ষিকাকে বদলি করে আনা হয়েছে। এরমধ্যে, সদর আর চক্রে ৫ জন এবং সদর আরবান চক্রে ৩ জনকে জয়েনিং দেওয়া হয়েছে। অথচ, এই দুটি চক্রের, বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অন্য চক্রে বদলি করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পাশাপাশি শিক্ষা দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই মেদিনীপুর শহর কেন্দ্রিক সদর আর আর এবং সদর আরবান চক্রের ৮ টি স্কুলকে উঠিয়ে দেওয়ার এবং ঐ স্কুলগুলির ১৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলি করার যে নির্দেশ তিনি জারি করেছিলেন। যদিও এক্ষেত্রে সাঁতরার যুক্তি উড়িয়ে দেওয়ার মত ছিলনা। তিনি বলেছিলেন, ওই স্কুলগুলোতে পড়ুয়া ছিলনা, বসে বসে বেতন নিতেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। আর স্কুলগুলো যে ভাড়া বাড়িতে চলত তাঁদের পর্যাপ্ত ও নিয়মমাফিক ভাড়া দেওয়া যাচ্ছিলনা।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সাঁতরার ‘বদলি নীতি’ কার্যত ক্রোধের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছিল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনগুলির অন্দরেও। দলীয় সংগঠন করেও রেহাই মেলেনি তাঁদের। তাই ক্ষুব্ধ তৃণমূলের এক শিক্ষক নেতা বলেন  “আমাদের বলা হচ্ছে, এই সার্কেলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত অনুযায়ী শিক্ষক এর পরিমাণ বেশি অর্থাৎ সারপ্লাস বা এক্সেস টিচার! কিন্তু, তাই যদি হয়, কিভাবে এই দুটি চক্রে গত ২-৩ মাসে অন্য সার্কেল থেকে ৮জন টিচার’কে জয়েনিং দেওয়া হল! যদি, ‘শিক্ষিকা’ বলে অজুহাত দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের বক্তব্য- এই চক্রের অন্য শিক্ষিকাকে কিভাবে বাইরে পাঠানো হচ্ছে! কেনইবা, প্রায় রিটায়ার্ড করতে চলা, বয়স্ক ও অসুস্থ শিক্ষকেও দূরে ঠেলা হচ্ছে!”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দলের পাশাপশি তথ্য প্রমান নিয়ে সাঁতরার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিল বাম শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ’ও।  অভিযোগ ছিল অপর একটি সংগঠন  শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চেরও। তবে নিশ্চিতভাবেই সাঁতরাকে সরাতে তাঁর দলেরই কলকাঠি কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে বেশি করে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
শোনা যাচ্ছে সাঁতরার অপসারনের পরেই এই পদের জন্য লম্বা লাইন পড়ে গেছে। খড়গপুর ২ব্লকের সাঁকোয় এলাকার এক শিক্ষা সেলের নেতা রয়েছেন অগ্রনী ভূমিকায়। তার পর পরই নাম ভাসছে  রাজীব মান্না, রঞ্জন সাহু, আশিস অট্ট সহ একাধিক শিক্ষক নেতার নামও। তবে শেষ অবধি কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে অথবা অন্য কেউ উঠে আসে কিনা সেটাই দেখার। আপাতত বৃহস্পতিবার রাতেই দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন ডি.আই তরুন সরকার। 

RELATED ARTICLES

Most Popular