Homeএখন খবরপুরানো কার্ডেই রেশন পেলেন সাংসদ দেবের ভাই বিক্রম

পুরানো কার্ডেই রেশন পেলেন সাংসদ দেবের ভাই বিক্রম

নিজস্ব সংবাদদাতা:শেষ অবধি পুরানো কার্ডেই রেশন পেলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা অভিনেতা দেবের জ্যাঠতুতো ভাই বিক্রম অধিকারী। মঙ্গলবার কেশপুর থানার নিজের মহিষদা গ্রামের রেশন দোকান থেকেই তাকে রেশন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি তাঁকে নতুন রেশন কার্ড করার জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। কেশপুর বিডিও অফিস সূত্রে জানা গেছে লকডাউন পর্বে যতদিন সরকারের এই বিশেষ রেশন চালু থাকবে ততদিনই রেশন পাবেন তিনি। পরে প্রয়োজন হলে জেনারেল রিলিফ সুবিধায় রেশন ব্যবস্থা চালু রাখা হবে। অন্তত যতদিন না তাঁর নতুন রেশন কার্ড না হয়। বিক্রম জানিয়েছেন, মা, স্ত্রী,দুই সন্তান ও তাঁকে নিয়ে মোট ৫জনের রেশন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য সংবাদমাধ্যমকে কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি।

উল্লেখ্য রেশন কার্ড না থাকায় দু’দিন হাঁড়ি চড়েনি তাই খাবারের সন্ধানে গিয়ে কেশপুর বাজারে খাবারের সন্ধানে গিয়ে বিক্রমের সাথে দেখা হয়ে যায় কয়েকজন সিপিএম কর্মীর সাথে। সাংসদ ও অভিনেতা দেবের নিজের জ্যাঠতুতো ভাই বিক্রম অধিকারীর এ হেন অবস্থা দেখে। সিপিএমের কর্মীরা বিক্রমকে চাল আটা ও কিছু টাকা তুলে দেয়। সংবাদমাধ্যমে ঘটনার খবর প্রকাশ হতেই টনক নড়ে নবান্নের। তৃণমূলের নেতা বিধায়করা ঘটনার জন্য দায়ী করেন বিক্রম আর সিপিএমকেই। বিক্রম তৃণমূলকে কিছুই জানায়নি আর সিপিএম বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে এমনটাই তাঁদের অভিযোগ, যদিও পরের দিনই ত্রাণের পাহাড় পৌঁছে যায় বিক্রমের বাড়িতে।

ঘটনা জানার পরেই সাংসদ দেব নিজের ট্যুইটারে অত্যন্ত মার্জিত ভাষায় জ্যাঠতুতো ভাইয়ের এই পরিনতির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলেন, দুঃখিত, জানা ছিলনা। ত্রান পৌঁছে গেছে। সঙ্গে একটি ছবিও পোষ্ট করেছেন দেব। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ ও একজন আধিকারিক ত্রান তুলে দিচ্ছেন দেবের ভাই বিক্রমের হাতে।একই দিনে অর্থাৎ রবিবারই বিডিওর কিছু পরেই কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্তও ত্রান নিয়ে গেছিলেন বিক্রমের বাড়িতে। গেছিলেন স্থানীয় উপপ্রধান। ত্রান পাঠিয়েছিলেন কেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও।
তৃণমূল নেতাদের তরফে দাবি করা হয়েছিল বিক্রম খারাপ অবস্থায় আছে এটা জানায়নি স্থানীয় নেতাদের।

বিক্রম অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং প্রধানের বাড়িতেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সে সাংসদের ভাই তাই তার রেশন দরকার নেই বলে উপহাস করা হয়েছে তাঁকে। হতদরিদ্র বাসের হেল্পারি করা খেটে খাওয়া মানুষটি কেন আবাস যোজনায় বাড়ি পাবেনা, কেন তাঁর বিধবা মা ভাতা পাবেননা এর উত্তরে শুভ্রা বলেছিলেন, উনি আবেদন করেননি কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সামনেই বিক্রম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে বলেন, মায়ের পেনশনের জন্য বিডিও অফিসে গেছিলাম কিন্তু আমার সামনেই এক নেতা আধিকারিককে ফোন করে জানায় সে না বললে কারও পেনশন হবেনা।

ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায় তৃণমূলের অভ্যন্তরে। প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও পশ্চিম মেদিনীপুর তৃণমূল নেতৃত্ব ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেশপুরের নেতাদের ভূমিকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত বিক্রমের রেশন চালুর উদ্যোগ নিতে বলা হয় কেশপুরকে। পাশাপাশি জেলাশাসক নিজে উদ্যোগী হয়ে কেশপুর বিডিওকে নির্দেশ দেন রেশন চালু করার জন্য। সেই মত মঙ্গলবারই রেশন পেয়ে গেলেন বিক্রম অধিকারী। আপাতত অবসান হল বিক্রম বিতর্কের।

RELATED ARTICLES

Most Popular