Homeএখন খবরনাম বিভ্রাটে জেরবার রাজ্জাক মোল্লা, ফোন ধরেই বলছেন, না মরিনি

নাম বিভ্রাটে জেরবার রাজ্জাক মোল্লা, ফোন ধরেই বলছেন, না মরিনি

ওয়েব ডেস্ক : সকাল থেকেই রটে গেছে যে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক মোল্লার মৃত্যু হয়েছে। আর তারপর থেকেই একের পর এক ফোনে জেরবার হয়ে যাচ্ছেন মন্ত্রী। ছোট থেকে বড় তৃনমূল নেতা থেকে শুরু করে চেনা জানা অনেকেই ফোন করছেন। প্রথম দিকে বেশ মজা করেই উত্তর দিচ্ছিলেন রসিক ‘চাষার ব্যাটা’। কিন্তু বেলা যত বেড়েছে ততই নিয়ন্ত্রন হারাচ্ছে। উত্তর দিতে দিতে কোনও কোনও সময় ফোন ধরেই বলে ফেলছেন, “মরিনি, বেঁচেই আছি।” মন্ত্রীর দোষ নেই খুব একটা। একটা মানুষকে যদি বারবার ফোন ধরতে হয়, মেজাজ বিগড়াবেই। আর এক আধটা ফোন নয়, ফোন আসছে শয়ে, শয়ে। পাঁচ মিনিট, দশ মিনিট ছাড়া ফোন। এরপর মেজাজ ধরে রাখাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওদিকে ফোনের সুইচ বন্ধ রাখাও যায়না তখন যদি কেউ ভেবে ফেলে যে সত্যি সত্যি…..

মুশকিল হয়েছে নাম বিভ্রাটে। না, শুধুই নাম নয় আরও অনেক কিছুতেই মিল প্রয়াত প্রাক্তন সিপিএম নেতার সঙ্গে মন্ত্রীর। দুজনের নাম এক, দুজনেই সিপিএমের প্রাক্তন নেতা, দুজনেই ভাঙড়ের বিধায়ক আবার দুজনেই সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত। এত মিল থাকলে মানুষের ভুল করাটাই স্বাভাবিক। তাই বৃহস্পতিবার যেই সকালে খবরটা রটেছে যে রাজ্জাক মোল্লা মারা গেছেন অমনি ফোন ছুটছে মন্ত্রী রাজ্জাক মোল্লার কাছে।

আসলে বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন বাম আমলের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা তথা ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, বহুদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। শেষমেশ বৃহস্পতিবার সকালে নিজের বাসভবনেই মৃত্যু হয় তাঁর।
সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে তাঁর। পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রেজ্জাক মোল্লা। যদিও তাঁর অসুস্থতার বিষয় বিষদে তেমন কিছুই এখনও জানা যায়নি।

কলেজে পড়াকালীন প্রথমে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্জাক মোল্লা। এরপর ধীরে ধীরে রাজনীতির মূল স্রোতে যুক্ত হয়ে একসময় তিনি রাজ্য সিপিএমের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সফল হন। প্রথমে বাম রাজনীতিতে যুক্ত হলেও তাঁর জীবনের প্রথম সাফল্য আসে। ১৯৮৭ সালে ভাঙড়ের বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর। এরপর পর পর ৫ বছর তিনি ভাঙড়ের বিধায়ক হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন। বিধায়ক পদ যাওয়ার পরেও দীর্ঘ দিন তিনি বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বেশকিছু দল-বিরোধী পদক্ষেপের অভিযোগে সিপিএম থেকে তাঁকে বহিস্কার করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রয়াত বাম নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে শ্যামনগরের বাসভবনে উপস্থিত হন রশিদ গাজী, তুষার ঘোষ এবং স্থানীয় বাম নেতাদের একাংশ। এরপরই খবর রটে যায় মন্ত্রী রাজ্জাক মোল্লা মারা গেছেন। তারপরই শুরু হয় একের পর এক ফোন। ফোনের চোটে খাওয়া দাওয়া নিত্য নৈমিত্তিক কাজ মাথায় উঠেছে। এরপর কার মেজাজ ঠিক থাকে? প্রথম দিকে বলছিলেন, “না ভালই আছি। এই সত্তর বছর বয়সে যতটুকু ভাল থাকা যায় আর কি! হ্যাঁ, শুনেছি উনি মারা গেছেন। সেটাই কেউ রটিয়ে দিয়েছে।” কিন্তু পরের দিকে আর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি। ভাঙড়ে আবার আরাবুল ইসলামের লোকদের সঙ্গে রাজ্জাক মোল্লার আদায় কাঁচকলায়। সেই লোকেরাই কথাটা রটিয়ে দিল কি না কে জানে?

মন্ত্রী রাজ্জাক অবশ্য বলছেন, সাধারন মানুষকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাঁরা কতটুকু জানেন? কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দায়িত্ব জ্ঞানহীন হয়ে ঘটনার সাথে তাঁর ছবি ছেপে দিল কী করে? ৭৭ বছর বয়সী মন্ত্রী জানিয়েছেন শুক্রবারই তিনি নিউটাউন থেকে ক্যানিং যাবেন। না হলে ফোন আসতেই থাকবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular