Homeএখন খবরপরিকল্পনাহীন রাস্তা সম্প্রসারনের কাজের অভিযোগ! বড়দিনেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সবংয়ে, মৃত্যু পথচারীর

পরিকল্পনাহীন রাস্তা সম্প্রসারনের কাজের অভিযোগ! বড়দিনেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সবংয়ে, মৃত্যু পথচারীর

নিজস্ব সংবাদদাতা: বড়দিনের সাত সকালেই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তির। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানা এলাকার তেমাথানি থেকে পটাশপুরগামী রাজ্য সড়কের নতুন পুকুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম বৈরম সিং। সবং পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে প্রাথমিক ভাবে আমরা জানতে পেরেছি ওই ব্যক্তির বাড়ি বেলদা থানা এলাকায় যদিও বেলদা পুলিশ জানিয়েছে এরকম কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর খবর এখনও অবধি তারা জানতে পারেননি। তাঁরাও খোঁজ খবর নিচ্ছেন। সংলগ্ন এলাকায় পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার সীমান্ত এলাকা রয়েছে। ব্যক্তি সেখানকার কিনা তাও দেখা হচ্ছে।

ঘটনাটির স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সৌমেন ঘাঁটা নামের এক যুবক জানিয়েছেন, “ঘটনার সময় আমি দেহাটির দিক থেকে দশগ্রামের দিকে যাচ্ছিলাম। পুরো রাস্তাই এখন ফোর লেন হওয়ার জন্য সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। রাস্তার একপাশে সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ট্রাক্টর জেসিপি গুলি বলি আর মোরামের মিশ্রণ তৈরি করে একদিকে ভরাট করছে আর রাস্তার অন্য অংশ দিয়ে যাতায়ত হচ্ছে। ওই অংশ দিয়েই ওই ব্যক্তি সাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। রাস্তার একপাশে চিপস ফেলা রয়েছে। কোনোভাবে ওই ব্যক্তির সাইকেলের চাকা উঠে যায়। ভারসাম্য হারিয়ে ব্যক্তি নীচে পড়ে যান। আর ঠিক ওই সময়েই কর্মরত একটি ট্রাক্টর জেসিপি তাঁর মাথা চেপে দেয়।”

কর্মরত শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কী বা বলা যেতে পারে? ওই ট্রাক্টরটি খুবই ধিরে চলছিল। সাইকেল থেকে ওই ব্যক্তি পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রাক্টর-জেসিপি থামিয়ে দিয়েছিলেন চালক কিন্তু ততক্ষণে চাকার খানিকটা অংশ গড়িয়ে গিয়েছিল তাতেই ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। সৌমেনই খবর দেন পুলিশকে। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে সবং থানায় নিয়ে যায় এবং খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য।

যদিও ঘটনার জন্য কর্মরত ঠিকাদারদের দায়ী করছেন এলাকার মানুষজন এবং পথচারীরা। তাঁদের অভিযোগ রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রী অনেক জায়গাতেই অবিন্যস্ত ভাবে রাখা হয়েছে যার ফলে মাঝে মধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। দু’একজন আহতও হয়েছে। রাস্তার পাশ থেকে গড়িয়ে পড়ে ওই সব সামগ্রী।পথচারীদের অভিযোগ, ঠিকাদারদের বারংবার বলা স্বত্ত্বেও গুছিয়ে রাখা হয়না ওই নির্মান সামগ্রী। আর এর ফলে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।

সবচেয়ে বড় বিপদে পড়ছেন বাইক আরোহীরা। পটাশপুরের এক ব্যক্তি জানালেন, ‘আমি একদিন দুপুরে ডেবরা গিয়েছিলাম কাজে। ফিরে আসছি সন্ধ্যাবেলায়। হঠাৎ দেখলাম রাস্তার ১৫ থেকে ২০ফুট জায়গা দু’ফুট গভীর করে কেটে নেওয়া হয়েছে বালি মোরাম মিশিয়ে ভরাট করা হবে বলে। এখন বলুন, আমি যাওয়ার সময় ভালো রাস্তা দিয়ে গেলাম এবার আমি কী করে বুঝব যে রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে। রাস্তা কেটে ফেলার পর কোনোও ঘেরা হয়নি, কোনও সতর্কতা নেই। সেদিন বরাত জোরে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছি।

স্থানীয় একটি পেট্রলপাম্প রয়েছে। সেখানে তেল ভর্তি করতে আসা মানুষরাও জানালেন এই রাস্তায় অবিরত দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এক ব্যক্তি জানালেন, বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেই ছিলেন তাঁরা। আর তাই ঘটল শুক্রবার। তাঁদের দাবি, রাস্তার ওপর গড়িয়ে পড়া চিপসের জন্যই সাইকেল হড়কে গিয়ে ওই ব্যক্তি পড়ে গেছেন বলেই এই মৃত্যু হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular