Homeএখন খবরফের শহরে সক্রিয় ছিনতাই চক্র, ভর সন্ধ্যাবেলাতেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে গোলবাজারের দোকান থেকে...

ফের শহরে সক্রিয় ছিনতাই চক্র, ভর সন্ধ্যাবেলাতেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে গোলবাজারের দোকান থেকে ছিনতাই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর ৪লক্ষ টাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা: আবারও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল খড়গপুর শহরে। এবার শহরের সব চেয়ে বড় বাজার বলে পরিচিত গোলবাজারের এক পাইকারি ব্যবসায়ীর গদি থেকেই ৪লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতিরা। প্রায় সন্ধ্যা বেলায় এই ঘটনা ঘটায় রীতিমত আতঙ্কিত দোকানদারেরা। আতঙ্ক এতটাই যে ওই ব্যবসায়ী অতি সন্তর্পনে বিষয়টি পুলিশের দৃষ্টি গোচর করেছেন। আতঙ্কে বিষয়টি নিয়ে কারও সামনেই মুখ খুলতে চাননি তিনি কিন্তু ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর খড়গপুর শহরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয়ভীতির বাতাবরণ কাজ করছে আর সবচেয়ে সন্ত্রস্ত ওই ব্যবসায়ী পরিবার কারন এই ছিনতাইবাজদের কবলে পড়েই একসময় প্রাণ দিয়েছিলেন এই ব্যবসায়ীর বাবা। একদশক আগের সেই ভয়াবহ ঘটনা এখনও তাড়া করে ওই পরিবারকে। ফলে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে পরিবার।

যদিও ঘটনাটি জানতে পারার পরই পুলিশ নিজে থেকেই তৎপর হয়ে উঠেছে। খড়গপুর শহর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে এবং তার আশেপাশের রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ আমরা খতিয়ে দেখছি। মুশকিল হচ্ছে যে আততায়ীরা মুখে মাস্ক পরে ছিল। তবে অবয়ব ইত্যাদি দেখে আমরা শনাক্তকরণের চেষ্টা করছি। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে শহরের নথিভুক্ত অপরাধীদের গতিবিধির ওপর।’

জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে গোলবাজারারের পূর্ব দিকে, ক্লথস মার্কেট সংলগ্ন এলাকায়। জায়গাটি চাক্কুর দোকানের এলাকা বলে পরিচিত। এখানেই পরপর তিনটি মুদি দোকান রয়েছে তিনভাইয়ের যার প্রত্যেকেই পাইকারি দরে খুচরো দোকানদারদের মুদি সামগ্রী বিক্রি করে থাকেন। রবিবার সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে দুই যুবক দোকানে প্রবেশ করে এবং সোজা ব্যবসায়ীর কাছে চলে যায়। এরপর আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়। আশেপাশেই বাইক রাখা ছিল যাতে করে ওরা চম্পট দেয়। এমনটাই জানা গিয়েছে। যদিও এই অপারেশনের ধরন সম্পর্কে ব্যবসায়ী বা পুলিশের কাছ থেকে কিছু জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে সম্মুখ ভাগে ২ আততায়ী থাকলেও অপারেশনটি কভার করতে এবং প্ৰয়োজনে অবস্থার সামাল দিতে আশেপাশে আরও কয়েকজন থাকলেও থাকতে পারে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পরই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। পুলিশের তরফে টাকার অঙ্ক ৪লক্ষই বলা হয়েছে।

রবিবার সারাদিন ধরেই বাজারে ভালো ভিড় ছিল এবং শহর এবং শহরতলির খুচরো দোকানদাররা ভালই মালপত্র কিনেছিল যা দিনের শেষে টাকার ওই অঙ্ক ছুঁয়ে গেছিল। করোনা পরবর্তী কালে এমনিতেই গোলবাজার তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৮টা বাজার সময় থেকেই দোকানপাট গোটাতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা এবং রাত ৯ টার মধ্যে অধিকাংশ দোকানই বন্ধ হয়ে যায়। তার আগেই একেবারে পরিকল্পনা করেই এই ছিনতাই করা হয়েছে। এই কাজের আগে নিশ্চিতভাবেই রেইকি করেছিল ছিনতাইকারীরা।

বেশ কিছুদিন চুপচাপ থাকার পর ফের শহরে দুস্কৃতিদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। ২৫শে ডিসেম্বর শহরে একটি পেট্রালপাম্পে ছিনতাইয়ের পর ১লা জানুয়ারিতেই শহরে এক যুবকের ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে পুলিশের তৎপরতায় ডাকাতি করতে জড়ো কয়েকজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এরপরই শহর লাগোয়া একটি পেট্রালপাম্প ডাকাতি হয় খড়গপুর গ্রামীন এলাকায়। শনিবার মধ্য রাতেই শহরে প্রবেশের মুখে খড়গপুর শহর পুলিশের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র সহ পাকড়াও হয় শহরেরই এক দাগি অপরাধী। এরপরই রবিবারের সন্ধ্যার ঘটনা।

উল্লেখ্য একদশক আগে এই গোলবাজার থেকেই নিজের দোকান বন্ধ করে খরিদার বাড়িতে যাওয়ার সময় খড়গপুর শহরের বড়বাতির কাছে ডিআইজি বাংলো লাগোয়া এলাকাতে খুন হয়েছিলেন এই ব্যবসায়ীর বাবা। প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় সেই ব্যবসায়ীর খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল খড়গপুরের ব্যবসায়ী মহল। রবিবার তাঁরই এক ছেলের দোকানে ছিনতাইয়ের ঘটনা সেই স্মৃতিকেই উস্কে দিয়ে গেল আরও একবার।

RELATED ARTICLES

Most Popular