Homeএখন খবরগ্রহণের আগেই কাল গ্রহণ সবংয়ে, মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত ২, সেফটি ট্যাংকে...

গ্রহণের আগেই কাল গ্রহণ সবংয়ে, মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত ২, সেফটি ট্যাংকে আটকে পড়া দাদাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসের ছোবলে ভাইও

নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবার পূর্ন গ্রহন সূর্যগ্রাসের দিনই কাল গ্রহনের শোকে ঢেকে গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানা এলাকার মোহাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহাড় গ্রামেরই মধ্যপাড়া। সবংয়ের আকাশে সূর্যগ্রহন শুরুর নির্ঘন্ট ছিল বেলা ১০টা ৪২মিনিট কিন্তু মন্ডল পরিবারে বেলা ১০ টাতেই নেমে এল গহন আঁধার। এদিন সাড়ে তিনঘন্টা পরে কেটে যাবে আকাশের গ্রহণ কিন্তু মৃত দুই ভাই নিতাই আর পূর্ন চন্দ্র মন্ডলের পরিবারের গ্রহণ রয়েই গেল চিরদিন।

মোহাড় মধ্যপাড়ার প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পরিবারের সেফটি ট্যাঙ্কে পড়ে থাকা একটি দড়ি তুলতে গিয়েই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে রবিবার সকাল গড়িয়ে বেলার শুরুতেই। বছর চল্লিশের নিহত নিতাই মন্ডল পরিবারের তিন ভাইয়ের মধ্যে মেজো অন্যদিকে অপর নিহত মধ্য তিরিশের পূর্ন চন্দ্র মন্ডল ছোটভাই। আমফান ও পরবর্তী কালের লাগাতার বৃষ্টি হওয়ার ফলে পরিবারের একটি শৌচালয়ের সেফটি ট্যাঙ্ক জলে ভরে যায়। দিন ১০ আগে দুই ভাই ৮ফুট গভীরতার সেই জল দড়ি বালতির সাহায্যে তুলে পরিস্কার করে ফেলে। কিন্তু ট্যাঙ্কের মধ্যে দড়িটা পড়ে রয়ে যায়।

এদিন সকাল ১০টা নাগাদ নিতাই সেই দড়ি তুলতে নিচে নামে কিন্তু সে বুঝতে পারেনি যে ট্যাঙ্কের মধ্য থেকে জল তুলে নেওয়ার পর সেই জায়গার দখল নিয়েছে ভারী বিষাক্ত গ্যাস। নিচে নামার ১মিনিটের মধ্যেই কাঁপতে শুরু করে নিতাই। দাদাকে কাঁপতে দেখে পূর্ন কোনও কিছু না বুঝেই নিচে নেমে পড়ে দাদাকে উদ্ধার করতে। বিষাক্ত গ্যাস গ্রাস করে নেয় তাঁকেও। দুই ভাই লুটিয়ে পড়েছে দেখে বাড়ির মহিলারা চিৎকার শুরু করে দেয়। ছুটে আসে প্রতিবেশীরাও। পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে প্রতিবেশীরা যুবকরা আর নিচে নামেনি। দড়ির ফাঁস তৈরি করে পায়ে বেঁধে দুই ভাইকে উদ্ধার করেন তাঁরা। ছুটে আসেন স্থানীয় চিকিৎসক। ২জনকে মৃত ঘোষনা করেন তিনি।

ওই এলাকা থেকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম মাইতি জানিয়েছেন, “দুই ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করেই সংসার প্রতিপালন করতেন। নিতাইয়ের দুই ছেলে এবং পূর্নরও মেয়ে ও ছেলে মিলিয়ে ২জন। ছেলেমেয়েরা সবাই প্রায় নাবালক। হতভাগ্য পরিবার গুলির পাশে যাতে সরকার থাকে আমরা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই আবেদন জানাবো।”
ঘটনার খবর পেয়েই ছুটে যায় পুলিশ। মৃতদেহ দুটি নিয়ে আসা হয় সবং থানায়। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে দেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ঘটনায় মোহাড় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যুব তৃনমূলের সাধারন সম্পাদক শেখর মাইতি সহ বিভিন্ন তৃনমূল নেতৃত্ব পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular