Homeএখন খবরসবংয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছুঁয়ে ফেলল, সুস্থার হার ১০০ শতাংশ

সবংয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছুঁয়ে ফেলল, সুস্থার হার ১০০ শতাংশ

নিজস্ব সংবাদদাতা: আ্যন্টিজেন পরীক্ষা শুরু হতেই আক্রান্তের স্বরূপটা পরিষ্কার হচ্ছে সবংয়ে। অনুমান করা হচ্ছিল উপসর্গ হীন রোগির সংখ্যা বাড়ছে, হাতে কলমে আ্যন্টিজেন পরীক্ষা শুরু হতে সত্যি বলে প্রমাণিত হল সেই অনুমান। শুক্রবার ২ জন আক্রান্তের সূত্র ধরে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে কয়েকজনের আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করা হলে ৭ জনের পজিটিভ ধরা পড়ে। আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জনই আক্রান্ত দুটি পরিবারের তারমধ্যে একই পরিবারের ৫ জন। ৬ আগষ্ট আরটি/পিসিআর অর্থাৎ লালারস সংগ্রহের মাধ্যমে ভাইরোলজি ল্যাবে পরীক্ষার মাধম্যে একই সঙ্গে ৫ আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল সবংয়ে।

এরপর ডেবরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সবংয়ের এক সদ্য প্রসূতির করোনা ধরা পড়ে। ১৩ই আগষ্ট লুটুনিয়ায় এক ১২ বছরের বালক ও বলপাইতে একজন ৫৩ বছরের ব্যক্তির করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর ১৫ই আগষ্ট ফের লুটুনিয়াতেই ৪৪ বছরের এক গৃহবধূ ও সবং সদর এলাকায় ৩৭বছরের এক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হন। অর্থাৎ ৬ থেকে ১৫ আগষ্ট ১০দিনে আরটি/পিসিআর পরীক্ষায় ৯জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে সবংয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। কিন্তু ১৩তারিখ আক্রান্ত দু’জনের পরিবার সহ আরও কয়েকজনের আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করা হয় ১৪তারিখ, দেখা যায় এক দিনেই ৭ আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে সেদিন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ছুঁয়ে গেছে।

করোনা নিয়ে অকারণ ভীতি দূর করতে সবংয়ের এই তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারন চিকিৎসার আওতায় থাকা রোগিদের সুস্থতার হার ১০০%, সবাই ভাল হয়ে উঠেছেন বা উঠছেন। আক্রান্ত ২বছরের শিশু থেকে ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ কারুরই কোনো সমস্যা নেই। বেশিরভাগই ঝাড়া হাত পা, সেফ হোমে গেছেন আর বেরিয়ে এসেছেন।যে দুটি দুর্ভাগ্য জনক মৃত্যু হয়েছে তাঁদের কেউই চিকিৎসার আওতায় আনেননি। একজন বাড়িতেই মারা গেছেন,অন্যজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে একেবারে শেষ সময়ে, রেফার করার সুযোগও দেয়নি।

সবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক সুভাস কান্ডার জানিয়েছেন, ” অন্য রোগে জর্জরিত না হলে করোনা নিয়ে কোনোও সমস্যা দেখতে পাচ্ছিনা। সামান্যতম সন্দেহ হলে বা অন্য যে কোনও ধরনের সমস্যা হলে হাসপাতালে চলে আসুন। চিকিৎসার সুযোগটা নিন দেখবেন কোনও ভয় নেই। সবংয়ে চিকিৎসার আওতায় চলে আসার পর করোনায় মৃত্যুর কোনও নজির নেই।”
সরকার আ্যন্টিজেন পরীক্ষার ওপর জোর দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সরকারের তরফে এও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্লক থেকে শুরু করে জেলা স্তর অবধি আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে করোনা মুক্ত সার্টিফিকেট সঙ্গে রাখতে হবে। এই পরিস্থিতিতে উপসর্গ না থাকলেও আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। আপামর জনতার জন্য সমস্ত হাসপাতালেই এখন আ্যন্টিজেন পরীক্ষা হচ্ছে। এই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াটা জরুরি এই কারনেই যে, উপসর্গহীন বাহক তাঁর পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষটির কাছ থেকে দুরে থেকে তাঁদের রক্ষা করতে পারবেন।

জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, “যতদিন না প্রতিষেধক টিকা সহজলভ্য হচ্ছে ততদিন আ্যন্টিজেন পরীক্ষাই ভরসা। এবার স্কুল কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাবে। ধিরে ধিরে স্বাভাবিক হবে জনজীবন। সবাইকেই আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে মাঝে মধ্যে। হয়ত ক্যাম্প করে গন হারে আ্যন্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থাও হতে পারে।”
সবংয়ের ১৩টি অঞ্চলের মধ্যে ১১টিতেই কম বেশি আক্রান্তের সংখ্যা মিলেছে। এখনও অবধি ভেমুয়া আর চাঁদকুড়ি অঞ্চলে কোনো আক্রান্ত মেলেনি। দশগ্রামে একজনই মিলেছিল যিনি ডেবরা হাসপাতালের প্রসূতির ছিলেন। অন্যদিকে বুড়ালের একমাত্র আক্রান্ত ব্যক্তি সবং বাজারের একটি দোকানে কাজ করলে ও মূলত সেখানে থাকলেও তাঁকে বুড়ালের ঠিকানাতেই ধরা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular