Homeএখন খবররাহুর গ্রাসে সবং, দুই যুবক ভাইয়ের মৃত্যুর পরই জলে ডুবে মৃত্যু ৩শিশুর,...

রাহুর গ্রাসে সবং, দুই যুবক ভাইয়ের মৃত্যুর পরই জলে ডুবে মৃত্যু ৩শিশুর, আড়াই ঘন্টায় মৃত ৫

নিজস্ব সংবাদদাতা: সাঁতার না জানে তো কী হয়েছে? ডুবন্ত শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রান হারাল আরও দুই শিশু। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানা এলাকায় রবিবার পূর্নগ্রাস সূর্য গ্রহণের দিনই দুটি পৃথক দুর্ঘনায় মৃত্যু হল ওই ৩শিশু সহ ৫ জনের। আকাশের কল্পিত রাহু যখন সূর্যকে গ্রাস করতে উদ্যত তখন সবংয়ের মাটিতে দুর্ঘটনার রাহু গ্রাস করে নিয়ে গেল ৫জনকে। সবং পঞ্চায়েত সমিতির মোহাড় আর দেভোগ গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা রবিবার ভিজে রইল প্রিয়জন হারানোর বেদনাদীর্ন হাহাকারে।

প্রায় একই সময়ে ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনার ৩শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে দেভোগ গ্রামপঞ্চায়েতের দেভোগ গ্রামের অনতি দূরেই। গ্রাম লাগোয়া একটি ফাঁকা জায়গায় গত কয়েকমাস ধরেই তাঁবু খাটিয়ে অস্থায়ী আস্তানা গেড়ে বসেছেন কয়েকটি যাযাবর সম্প্রদায়ের মানুষ। ভিক্ষের পাশাপাশি জড়িবুটি ইত্যাদি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে এই বানজারা সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষজন। বসতির কাছে কপালেশ্বরী নদীর একটি শাখা খাল। সেই খালের তলদেশ থেকে যে যার প্রয়োজন মত মাটি কেটে নিয়ে একটি গভীর খাদের সৃষ্টি করেছে।

কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে টইটম্বুর হয়ে রয়েছে জলে। খালের পাড়ে খেলছিল ৩শিশু। তাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট শিশুটি জলে পড়ে যায়। চিরকালই অন্যের জায়গায় বহিরাগত হয়েই থাকে এই সম্প্রদায় তাই সংঘবদ্ধতা যেন এদের রক্তে। ছোটটিকে জলে হাবুডুবু খেতে দেখে সাঁতার না জানা স্বত্ত্বেও জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাকি দু’জন। জলের গভীরতা আর ক্ষমতা সম্পর্কে ধারনা ছিলনা ওদের। পরিনতিতে তিনজনেরই মৃত্যু হয়। পরিবার গুলি সূত্রে জানা গেছে মৃতরা হল কদম শবর (১০) জানু শবর(৭), বানুদেব শবর(৬)। আশেপাশের লোকজনের চিৎকার শুনে ছুটে আসে পরিবারগুলি। আতিপাতি করে খোঁজা শুরু করেন সন্তানদের।

এরপর একে একে উঠে আসে তিনটি নিথর কচি মুখ। তিন শিশুকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাদের মায়েরা। তাঁদের ভাষা বোঝেন না স্থানীয় মানুষ কিন্তু কান্নার ভাষা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তাতে। গ্রামের স্থানীয় মায়েরদেরও চোখে জল নেমে আসে। পুলিশ খবর পেয়ে তিনটি দেহ নিয়ে যায় ময়নাতদন্তর জন্য।

এদিন সকালেই মোহাড় গ্রামের মধ্যপাড়ায় মৃত্যু হয় নিতাই ও পূর্ন চন্দ্র মন্ডল নামে ৪০ ও ৩৫ বছরের দুই ভাইয়ের। সকালে সেফটি ট্যাঙ্কে নেমে প্রথমে বিষাক্ত গ্যাসের কবলে পড়েন নিতাই। এরপর দাদাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেই গ্যাসের ছোবলে প্রান যায় পূর্ণচন্দ্র মন্ডলের। মাত্র আড়াই ঘন্টার মধ্যেই ৫ টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular