Homeএখন খবরসবংয়ে দড়ি ধরতে গিয়ে বিদ্যুতের তার ধরে তড়িদাহত হয়ে মৃত ব্যক্তি

সবংয়ে দড়ি ধরতে গিয়ে বিদ্যুতের তার ধরে তড়িদাহত হয়ে মৃত ব্যক্তি

শশাঙ্ক প্রধান: কথায় আছে রজ্জুতে সর্প ভ্রম অর্থাৎ দড়িকে সাপ বলে ভুল করা। বিষয়টা মজার নিশ্চই কিন্তু উলটোটা হলে ভয়ঙ্কর । কেউ যদি সাপকেই দড়ি বলে ভেবে নেয় তাহলে কী মারাত্মক হতে পারে। সাপের মতই বিষাক্ত হল বিদ্যুতের ছোবল। দড়ি ভেবে সেই বিদ্যুতের তার ধরে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলন্ত পাড়া গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ব্যক্তির নাম সুমন প্রামানিক। এদিন সকাল ৯টা নাগাদ নিজের বাড়ির উঠোনে বিদ্যুৎ চালিত ধানঝাড়া মেশিনে ধান ঝাড়ছিলেন ৪৮ বছর বয়সী সুমন। বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া হয়েছিল বাড়ির মধ্য থেকেই। সুমনের বাড়ির সংলগ্ন গোয়াল ঘর। উঠোন তার মধ্যি খানে অবস্থিত। বাড়ি থেকে আনা বিদ্যুৎ তারটি উঠোনের মধ্যে নিয়ে আসা হয় গোয়ালঘরের সামনে দিয়ে বরাবর নিচে ফেলে।

পরিবার এবং প্রতিবেশি সূত্রে জানা গেছে মেশিনে যখন সুমন ধান ঝাড়ার কাজ করছিলেন তখনই গোয়ালের ভেতর থেকে একটি গরু দড়ি ছিঁড়ে বেরিয়ে উঠোনে চলে আসে। সেই গরুর ক্ষুরে লেগে বিদ্যুৎ বাহিত তারটি ছিঁড়ে যায়। ফলে মেশিনটি বন্ধ হয়ে যায়। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন গরুটি দুষ্ট প্রকৃতির, দৌড়ে মাঠে চলে গেলে অন্যের জমি ক্ষতি করতে পারে ফলে গরুটিকে আটকানো জরুরি মনে করেছিলেন সুমন কিন্তু তাঁর মাথায় ঘুরছিল তারের ছেঁড়া অংশ জুড়ে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটিয়ে ধান ঝাড়ার কাজ শুরু করতে হবে। সেটার জন্য আগে বাড়ির ভেতরে গিয়ে সুইচ অফ করা জরুরি ছিল।

যাইহোক সেই কাজটি পরে হবে মনে করেই হয়ত গরুর দড়ি ধরে ফের তাকে গোয়ালে ঢোকানোর মনস্থ করেছিলেন সুমন কিন্তু যেহেতু তাঁর মাথার মধ্যে একই সাথে বিদ্যুৎ তার জোড়ার বিষয়টিও ছিল তাই বাড়ির দিক থেকে আসা তার টিকেই ধরে ফেলেন সুমন আর প্রায় সাথে সাথে তড়িদাহত হয়ে ‘মাগো’ মাটিতে পড়ে যান তিনি।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ঘটনার প্রায় সাথে সাথেই গরম দুধ খাইয়ে একটি চারচাকা জোগাড় করে সুমনকে নিয়ে প্রতিবেশীরা ছুটে যান ৩ কিলোমিটার দুরে জলচক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তাঁকে হাসপাতালের বিছানায় নিয়ে যাওয়া অবধি বেঁচেও ছিলেন সুমন কিন্তু পরে মারা যান তিনি। ততক্ষণ তাঁর হাত-পা ঘষে দেহের উত্তাপ ও রক্তসঞ্চালন বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই মারা যান তিনি। জলচক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পিংলা থানার অন্তর্গত হওয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি সংগ্ৰহ করেছে পিংলা থানার পুলিশ। সুমনের স্ত্রী ছাড়াও ১৬ বছরের ছেলে রয়েছে। তাঁর ১৯ বছরের মেয়েটিকে আগেই বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular