Homeএখন খবরঅনাস্থা আনার তোড়জোড় শুরু হতেই পদত্যাগ সবং পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি, ৩ কর্মাধ্যক্ষের!...

অনাস্থা আনার তোড়জোড় শুরু হতেই পদত্যাগ সবং পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি, ৩ কর্মাধ্যক্ষের! নিরঙ্কুশ ক্ষমতায় মানস গোষ্ঠী

নিজস্ব সংবাদদাতা: পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং পঞ্চায়েতে সমিতির না-পসন্দ প্রধানদের সরানোর পাশাপাশি তোড়জোড় শুরু হয়েছিল রাজ্যের নব নির্বাচিত জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া বিরোধী পঞ্চায়েত সমিতির কর্তা ব্যক্তিদের থেকে সরানোর কাজ। শুরু হয়ে গিয়েছিল বিদ্রোহী কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রক্রিয়া। খড়গপুর মহকুমা শাসক আজমল হোসেনের কাছে ৪জনের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি পেশ করেছিলেন মানস গোষ্ঠীর কয়েকজন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। এরপর অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল কিন্ত তার আগেই পদত্যাগ করলেন পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি ও তিনজন কর্মাধ্যক্ষ।

সোমবারই এই পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। জানা গেছে এই চারজন হলেন সবং পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি গুরুপদ মান্না, শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য পার্থ প্রতিম মাইতি, খাদ্য কর্মাধক্ষ্য অশোক চিনি এবং জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মাধব পাত্র। উল্লেখ্য এঁরা প্রত্যেকেই সবংয়ের আদি তৃনমূল গোষ্ঠীর নেতা অমূল্য মাইতি এবং প্রাক্তন ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতির অনুগামী ছিলেন। মানস ভূঁইয়া কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসার পর থেকেই সবং তৃনমূলে যে গোষ্ঠী রাজনীতির জন্ম হয়েছিল তাতে এই চারজন মানস বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।

গত বিধানসভা নির্বাচনে এঁদের একটা বড় অংশই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপির হয়েই কাজ করেন বলে অভিযোগ। ওদিকে বিজেপির হয়ে বিধায়ক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন অমূল্য মাইতি। তখন থেকেই এঁদের সরানোর সুযোগ চলেছিল মানস ভূঁইয়া গোষ্ঠীর কাছে। নির্বাচনে ব্যাপক ক্ষমতা নিয়ে ফের তৃনমূলের ফিরে আসায় সেই প্রক্রিয়া চালু হয়ে যায় পুরোদমেই। আর সেটা জানতে পেরেই আগে ভাগে সরার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন এই চারজন।

রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া গোষ্ঠীর এক কর্মাধ্যক্ষ স্বীকার করে নেন যে ওই চারজনের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। ওই নেতা বলেন, ” ওই চারজন আগেই সরে যেতে পারতেন কিন্তু সরেননি কৌশলগত কারনে। ওদের পরিকল্পনা ছিল বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনবেন। বাস্তবিকই বিজেপি ক্ষমতায় এলে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ আমাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হত। অধিকাংশ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ভোটাভুটিতে আমাদের বিরুদ্ধেই ভোট দিতেন। কিন্তু বিজেপি জেতেনি তাই ওদের সরাতে অনাস্থা এনেছিলাম আমরা। ভালই হয়েছে ভোটাভুটি এড়িয়ে পদত্যাগ করেছেন ওনারা। এছাড়া সম্মান রক্ষা হতনা ওঁদের। আমরা চাই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পদটাও ছেড়ে দিন ওনারা। ফের ভোট হোক ওই চার আসনে।”

সবং পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম মাইতি বলেন, “সবাই বিজেপি হয়ে গেছে এটা ঠিক কথা নয়। আমি বিজেপিতে যোগ দেইনি। ওই সময় আমার মা মারা যান। ফলে আমি নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেইনি। আমি তৃনমুল কংগ্রেস দলের সঙ্গে ছিলাম , আজও আছি কিন্তু ব্যক্তিগত জায়গা থেকেই পদত্যাগ করেছি। দলের সঙ্গে কোনও নীতিগত বিরোধ থেকে আমি কিন্তু পদত্যাগ করিনি।” অন্যদিকে সবং যুব তৃনমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির প্রানী সম্পদ উন্নয়ন কর্মাধ্যক্ষ আবু কালাম বক্স বলেন, ‘আমি শুনেছি ওই চারজন পদত্যাগ করেছেন। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা ঠিক করবেন আমাদের দলীয় ব্লক সভাপতি অমল পন্ডা এবং মাননীয় মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া।’ এদিকে এই চারজনের পদত্যাগের ফলে পঞ্চায়েত সমিতিতে নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হল মানস অনুগামীদের।

RELATED ARTICLES

Most Popular