Homeএখন খবরদেড় মাসেই মৃত্যু ৩০ জনের, সরলেন শালবনীর করোনা হাসপাতালের সুপার, পরিষেবা নিয়ে...

দেড় মাসেই মৃত্যু ৩০ জনের, সরলেন শালবনীর করোনা হাসপাতালের সুপার, পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন শাসকদলের আন্দরেই

নিজস্ব সংবাদদাতা: জেলার একমাত্র করোনা হাসপাতাল শালবনী লেভেল ফোর কোভিড হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। পর পর মৃত্যুর ঘটনায় কংগ্রেস সিপিএম বিজেপির পক্ষ থেকে হাসপাতালের পরিষেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল কিন্তু তারও চেয়ে বড় অভিযোগ ছিল শাসকদলের আন্দরেই।

বিভিন্ন সময়ে এই হাসপাতাল নিয়ে সরাসরি স্বাস্থ্যভবনেই অভিযোগ জানান শাসকদলেরই কিছু নেতা। দিন কয়েক আগেই জেলার কোভিড টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে শালবনী হাসপাতাল নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। এরপরই সপ্তাহের শুরুতেই সরিয়ে দেওয়া হল হাসপাতালের সুপারকে। অভিষেক মিদ্যার জায়গায় বহাল করা হয়েছে নবকুমার দাসকে।

কিন্তু তারপরেও অবস্থা বদলে যাবে এমন আশা করছেননা খোদ শাসকদলের নেতারা।
শাসকদলের এক নেতা জানিয়েছেন, মেদিনীপুর থেকে আমাদেরই এক নেতার ভাই ভর্তি হয়েছিলেন। রাতভর কোনও সাহায্যই পাননি। ওই নেতা আমাকে ফোন করেন। আমি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষর সঙ্গে কথা বলি। ভোরের দিকে অক্সিজেন দেওয়া হয় তাঁকে। একটু পরেই ওই নেতাকে হাসপাতালের এক কর্মী ফোন করে জানান, কেন তিনি হাসপাতালের বাইরের লোককে হাসপাতাল নিয়ে অভিযোগ করতে গেলেন?

ওই নেতা আরও জানান, “একজন ১৩বছরের বালিকা প্রায় দেড় দিন এমনি পড়েছিল যাকে কোনও চিকিৎসক বা নার্স পরীক্ষাই করেনি। অবস্থা সঙ্কট জনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি আমরা। নচেৎ এখানে মারাই যেত ওই কিশোরী। ঘটনা হচ্ছে এই হাসপাতালের পরিকাঠামো অত্যন্ত ভাল। সরকার ঢেলে দিয়েছে সব কিছু কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগিদের কাছেই যাচ্ছেননা চিকিৎসক, নার্সরা। এই অভিযোগ রোগিরাই করছেন। ফলে সুপার বদলে দিয়ে লাভ হবেনা, চিকিৎসা কর্মীদের মনোভাব বদলানো দরকার।”

করোনা পজিটিভ নিয়ে শালবনী করোনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শাসক দলেরই এক যুব নেতা। প্রায় ১০দিন ভর্তি ছিলেন। তিক্ত অভিজ্ঞতা অভিযোগ আকারে কয়েক দফায় পাঠিয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যভবনে। দিন কয়েক আগের ভিডিও কনফারেন্সে ঠিক এই প্রশ্ন গুলিই উঠে এসেছিল রাজ্য এবং জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের মধ্যে। প্রশ্ন একটাই, এত মৃত্যু কেন? কোভিড পর্যায়ে সারা জেলায় মৃত্যূ হয়েছে প্রায় ৮০ জনের আর তার মধ্যে শুধু শালবনী হাসপাতালেই গত দেড় মাসে মারা গেছেন ৩০ জন। আগস্ট মাসে জেলায় মৃত্যু সর্বাধিক হয়েছে। মারা গেছেন ৪৩ জন আর এই মাসেই শালবনী হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ১৯জনের।

আগষ্ট মাসের শেষের দিকে পরপর কয়েকটি মৃত্যু রীতিমত প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। হয়ত এসবের কারণেই সরতে হয়েছে সুপারকে কিন্তু সুপারের অপসারণের মধ্য দিয়েই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটা মনে করছেন না অনেকেই। তাঁরা চাইছেন হাসপাতালের পরিষেবা সম্পর্কে সরাসরি জেলা শাসক ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানানোর একটা ব্যবস্থা রাখা হোক যেখানে রোগি বা রোগির আত্মীয়রা অভিযোগ জানাতে পারবেন। কংগ্রেস নেতা ও আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত বলেন, “আমরা চাইছি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিয়মিত পরিদর্শন করুন আর জেলা শাসক সরাসরি তদারকি করুন যাতে জেলার একমাত্র করোনা হাসপাতালটি মানুষের আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারে।”

RELATED ARTICLES

Most Popular