Homeএখন খবরসঙ্গে রুকস্যাক- মীর হাকিমুল আলি

সঙ্গে রুকস্যাক- মীর হাকিমুল আলি

ওড়িশা ভ্ৰমণ-২, পুরী                                                                                   মীর হাকিমুল আলি
বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি আসাতে আমরা চায়ের দোকানে ঢুকে গেলাম, গরম গরম চা এর মজা নিতে নিতে বৃষ্টিও কমে গেল l এবার আমরা বেরোলাম, যাবো জগন্নাথ মন্দির l পুরীর সেই ভারত বিখ্যাত জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্যেশে আমরা হাঁটা শুরু করলাম l রাস্তায় বেশ ভীড়, গাড়ি ঘোড়াও কম চলছে না l আমরা ভাবলাম সামনেই মন্দিরটি, বেশি হাঁটতে হবে না, কিন্তু সে মিথ্যা প্রমাণিত হলো, বেশ কিছুটা হাঁটতে হলো আমাদের l রাস্তার দুই ধারে বিভিন্ন দোকান l বিশেষ করে মিষ্টান্ন ভান্ডার, আর সেই দোকান গুলির সম্মুখ ভাগ খাজা জাতীয় মিষ্টির সম্ভারে সজ্জিত l এই খাজা গুলো পূজায় প্রসাদ হিসেবে ব্যবহার করা হয় l যেতে যেতে বাম দিকে রাস্তার ধারে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ দেখলাম l যাইহোক মন্দিরের সামনে পৌঁছে গেলাম, সে কী ভীড় !!!আর লম্বা লাইন, মন্দিরে ঢোকার জন্য l বৃষ্টি হওয়ার কারণে মন্দিরের সামনের অংশ জলে বেশ প্যাঁচ প্যাঁচে হয়ে গেছে, এতো ভীড় দেখে মন্দিরের অভ্যন্তরের বহু কাঙ্খিত জগন্নাথ দেবের দর্শনের বাসনা মনে মনে ত্যাগ করলামl অবশ্য এর পেছনে আর একটা কারণ ছিল, সেটা হলো এতো হেঁটে আমার পা দুটি অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছিলো l আমার সাথে যারা ছিল তারা কিন্তু ভেতরে ঢোকার মনস্থির করলো l আমি যেতে চাইছিনা জানতে পেরে তারা আমাকে এক রকম জুতা আর মোবাইল এর পাহারাদার বানিয়ে ফেলল l কী আর করা যায়, আমি তাদের জুতা আর মোবাইল পাহারা দিচ্ছিলাম এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে l আমার সঙ্গী সাথীরা যে খুব তাড়াতাড়ি ফিরবে না তা বুঝতে দেরি হলো না, তাই কোথাও বসতে পারি কিনা তা চারদিকে লক্ষ্য করছিলাম l সামনে দেখলাম লাইন দিয়ে দোকান, সেখানে পাওয়া যায় পূজা দেওয়ার জন্য নানা রকম সামগ্রী lতারা সবাই মাটিতে ত্রিপল পেতে পসরা সাজিয়েছে l আমি সামনের দোকানদারকে বললাম একটু বসতে জায়গা দেবেন? দোকানদার বললে কোনো অসুবিধা নেই বসো l একে খুব শীত তার ওপর এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে, বেশ ঠান্ডা লাগছে, জড়োসড়ো হয়ে বসতে আরাম অনুভব করলামl কিছুক্ষন পর দোকানদার কোথায় গেল আর সেই ফাঁকে আমাকে সবাই দোকানদার ভেবে জিনিসপত্রের দাম জিজ্ঞেস করে করে মাথা খারাপ করে দিতে শুরু করলl আমি কত জনকে বলি যে আমি দোকানদার নই, সবাইকে এক ই কথা বলতে বলতে আমি বিরক্ত হয়ে উঠলামl ওড়িয়া ভাষায় তারা কী কী সুধাই তাও বুঝে ওঠা আমার কাছে দুঃসাধ্য হয়ে উঠছিলো l ওদিকে দোকানদারের আসার নাম গন্ধ দেখছিলাম না, সেও এলো আধ ঘন্টা পরেl আমি ফোন ঘাটাঘাটি করছিলাম, ফেসবুক এ ঘোরাঘুরি করছিলাম l এই ভাবে কতোক্ষন কাটলো ঠিক মনে নেই, অনেক পরে ওরা এলো l হাতে হাতে প্রসাদ l তারপর ফেরার পালা, আবার হেঁটে হেঁটে অতটা পথ এলাম, তারপর দাদা বৌদির বাঙালি হোটেলে নিরামিষ খাবার খেয়ে অটো করে হোটেলে ফিরলাম l
বিকেলে সমুদ্র সৈকতের একটা ঘটনা বলি…. সুদর্শন পট্টানায়েকের বালি শিল্প দেখছিলাম ঘুরে ঘুরে, ঠিক সেই সময় উনি নিজে উপস্থিত ছিলেন, আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন, নতুন কিছু শিল্পীকে তিনি পুরস্কার আর সার্টিফিকেট তুলে দিলেন, আমি সুযোগ করে তার সাথে সেলফি নেওয়ার আবদার করলাম, তিনি সম্মতি দিতেই খ্যাচ খ্যাচ করে করা সেলফি তুলে নিলাম l মন টা খুশি হয়ে গেল l
(ক্রমশ… পরের পর্ব )

RELATED ARTICLES

Most Popular