Homeএখন খবরডোঙা ভাসছে সুবর্নরেখায়, মানুষটার দেখা নেই! নদীতে নুড়ি সংগ্ৰহ করতে গিয়ে জলে...

ডোঙা ভাসছে সুবর্নরেখায়, মানুষটার দেখা নেই! নদীতে নুড়ি সংগ্ৰহ করতে গিয়ে জলে তলিয়ে মৃত্যু ব্যক্তির,শোকের ছায়া সাঁকরাইলের নেপুরা গ্রামে

নিজস্ব সংবাদদাতা: ঝাড়গ্রাম : সারাদিন নদীর ভেতর দাঁড়িয়ে নুড়ি সংগ্ৰহ! কখনও কোমর জল, কখনও হাঁটু। শীত কালে যত ঠান্ডাই পড়ুক না কেন এসময়েই নুড়ি সংগ্রহের প্রশস্ত সময় কারন নদীতে জল কম থাকে। দিন ভর ডোঙা ভর্তি নুড়ি সংগ্ৰহ করলে ৪০০ থেকে ৫০০টাকা।এভাবেই জীবন সংসারে রোজগার। শত শত মানুষের জীবিকা এটাই। মহাজনের হাত ধরে যা পৌঁছে যায় ঘরবাড়ি ইত্যাদির নির্মাণ কার্যে। জল থেকে ছেঁকে ছেঁকে তুলে আনতে হয় সেই নুড়ি। ঝাড়গ্রাম জেলার সুবর্ণরেখার জল থেকে সেই নুড়ি ছাঁকতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরা হলনা সাঁকরাইল থানার রগড়া ২ গ্রামপঞ্চায়েতের নেপুরা গ্রামের স্বপন দোলাইয়ের।

২ দিন ধরে নিখোঁজ ছিল স্বপন। অবশেষে শনিবার উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ। মাত্র ৪৫বছর বয়স হয়েছিল তাঁর।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের স্বপনের স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল কএক বছর আগে সাপের কামড়ে। বৃদ্ধ বাবা মা আর একটি সন্তানকে নিয়ে সংসার। সংসারের একমাত্র আয়ের উৎস ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার রোজকারের মতই স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে নিজের ডোঙা নিয়ে সুবর্ণরেখা নদীর জলে পাথর ছাঁকতে গিয়েছিলেন স্বপন। যে যার নিজের মতই নুড়ি সংগ্ৰহ করেন।

দুপুরের পর অন্যরা নুড়ি নিয়ে বাড়ি নদীর ওপারে থেকে ফেরার পথে দেখেন মাঝ নদীতে স্বপনের ডোঙা ভাসছে, কিন্তু স্বপন নেই। এরপরই সাঁকরাইলে সুবর্ণরেখা নদীর জলে গড়ধরা ঘাট থেকে স্বপনের খোঁজ শুরু হয়।স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন খোঁজ চালায় বৃহস্পতিবার বিকালে এবং শুক্রবার সারাদিন। কিন্তু খোঁজ মেলেনি তাঁর। এরপর শনিবার দুপুরে স্বপনের দেহ গড়ধরারই অদূরে ভেসে উঠতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সাঁকরাইল থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। রবিবার সেই মৃতদেহ গ্রামে পৌঁছনোর পর কান্নায় ভেঙে পড়ে স্বপনের বৃদ্ধ বাবা-মা ও অনাথ হয়ে যাওয়া সন্তান। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকায়। প্রশ্ন উঠেছে নদীতে এই সময়ে যদি জল কমই থাকে তাহলে স্বপন ডুবে গেল কী করে আর কেনই বা তার মৃতদেহ খুঁজে পেতে সময় লাগল?

এলাকার মানুষের অভিযোগ এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে বেআইনি বালি মাফিয়াদের কারবারের মধ্যে। অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র বালি তোলার ফলে নদী গর্ভের বিভিন্ন জায়গায় চোরা খাদানের সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। আর জলের ভেতরে থাকা সেরকমই এক গভীর খাদানে পড়ে গিয়েই তলিয়ে গিয়েছিল স্বপন এমনটাই অভিযোগ মানুষের।

RELATED ARTICLES

Most Popular