Homeএখন খবরফিতে কাটার পর আর আসেনি বিধায়ক, বেহাল রাস্তায় ঢোকেনা গাড়ি! হাসপাতালে যাওয়ার...

ফিতে কাটার পর আর আসেনি বিধায়ক, বেহাল রাস্তায় ঢোকেনা গাড়ি! হাসপাতালে যাওয়ার পথে গর্ভেই মৃত্যু শিশুর, ৭ঘন্টা পথ অবরোধে ঝাড়গ্রামের জনতা

নিজস্ব সংবাদদাতা: কয়েক বছর আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে পাকা ও চওড়া রাস্তা হবে উদ্বোধন করে জানিয়ে গেছিলেন বিধায়ক। তারপর আর ওই পথ মাড়াননি তিনি। সদ্য বিধানসভা নির্বাচনেও দেদার প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছুটছে ওই রাস্তা পাকা করার। গ্রামের লোক রাস্তা পাকা আর চওড়া হবে বলে বাড়ির সামনের বেড়া সরিয়ে জায়গা ছেড়েও দিয়েছেন কিন্তু রাস্তা আর হয়নি। শুধু হয়নি তাই নয় রাস্তা হবে ধরে নিয়ে বছরের পর বছর রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এমনই অবস্থা যে ওই রাস্তা দিয়ে কোনও চারচাকাই যেতে চায়না। গ্রামবাসীদের দাবি শুধু গাড়ি ব
না পাওয়ায় এক আসন্নপ্রসবা চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে মৃত সন্তান প্রসব করেছে। ক্ষোভে, ক্রোধে প্রায় ৭ ঘন্টা পথ অবরোধ করলেন গ্রামবাসীরা। বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার টিকরপাড়াতে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কয়েকশ গ্রামবাসী মিলে সাঁকরাইল থানার প্রহরাজপুর থেকে ধোবাশোলগামী বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে সাঁকরাইলের কুলটিকরি-রোহিনী রাজ্য সড়ক অবরোধ করে যার জেরে যান চলাচল ৭ঘন্টার জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে অবরোধ স্থলে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মীরা উপস্থিত হলেও রাস্তা ছেড়ে উঠতেই চাননি অবরোধকারী জনতা। প্রশাসনের আধিকারিকরা। পাল্টা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জনতা অভিযোগ করতে থাকেন বছরের পর বছর ধরে তাঁরা যখন রাস্তা মেরামতের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তখন তাঁদের দাবিতে কর্ণপাতই করেনি প্রশাসন।

অবরোধকারী জনতার দাবি, পিচের রাস্তার দরকার নেই। মোরামের রাস্তাটাই মেরামত করে দিক প্রশাসন যাতে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক ভাবে যেতে পারেন আর প্রয়োজনে অন্ততঃ চারচাকা গাড়ি ঢুকতে পারে তাঁদের এলাকায়। অবরোধকারী এক বাসিন্দা গুণধর দাস বলেন, “রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে সামান্য মারুতি ভ্যান পর্যন্ত ঢুকতে পারেনা। এই অতিমারি সময়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উপায় থাকেনা কারন গাড়িই ঢোকেনা। আর এই কারনেই বুধবার রাতে এক যন্ত্রনাকাতর প্রসূতিকে সময়মত হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারিনি। অনেক রাতে একটা গাড়ি জোগাড় করে যখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।”

এলাকাবাসীর জানিয়েছেন রাস্তা নতুন হওয়া তো দুরের কথা দীর্ঘ আট দশ বছর সংস্কারের অভাবে সাঁকরাইলের প্রহরাজপুর থেকে ধোবাশোল যাওয়ার রাস্তাটির অবস্থা বর্তমানে একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার প্রায় ৫ কিলোমিটার যাবৎ এই অবস্থার জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রায় ১০ টি গ্রামের মানুষকে। ব্যাঙ্ক, স্কুল, হাসপাতাল, কেনাকাটার জন্য বাজারে যাতায়াত এখন প্রচন্ড সমস্যায় পড়েছেন এলাকার মানুষে। গাড়িতো দুরের কথা সাইকেলে যেতেই ৮ থেকে ১০ বার রাস্তার মধ্যে নামতে হয়। জনতা অভিযোগ করেছেন, ২বছর আগে এই রাস্তা প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার আওতায় পাকা হবে বলে উদ্বোধন করে গিয়েছিলেন বিধায়ক চূড়ামনি মাহাত কিন্তু তারপর তাঁর নিজেরই পাত্তা নেই।

এদিকে ঘন্টার পর ঘন্টা অবরোধ চলতে থাকায় চাপে পড়ে যায় পুলিশ ও প্রশাসন। অবরোধকারী জনতাকে বারবার রাস্তা মুক্ত করার অনুরোধ করতে থাকলে
অবরোধকারীরা জানিয়ে দেন বিডিও যতক্ষণ না নিজে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেবেন ততক্ষণ অবরোধ চলবে। প্রয়োজনে অবরোধ অনশনে রুপান্তরিত হতে পারে। এরপর সাঁকরাইলের বিডিও মিঠুন মজুমদার লিখিত ভাবে আশ্বাস দিলে জনতা অবরোধ প্রত্যাহৃত হয়।

RELATED ARTICLES

Most Popular