Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গপ্রচুর লোক হবে! শিলিগুড়িতে বিমলের সভার স্থান পরিবর্তন

প্রচুর লোক হবে! শিলিগুড়িতে বিমলের সভার স্থান পরিবর্তন

অশ্লেষা চৌধুরী: স্থান পরিবর্তন হল শিলিগুড়িতে বিমল গুরুংয়ের জনসভার। ৬ ডিসেম্বর যে সভা হওয়ার কথা ছিল শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে, আপাতত স্থির হয়েছে সেই সভা হবে গান্ধী ময়দানে। মাঠ ছোটো হওয়ায় কারনেই এই স্থান পরিবর্তন।

প্রসঙ্গত অক্টোবরে দীর্ঘ তিন বছর পর প্রকাশ্যে আসেন বিমল গুরুং। জানান শীঘ্রই পাহাড়ে ফিরবেন বলে ঘোষণা করেন এবং সেইসাথেই জানান, আসন্ন নির্বাচনে শাসক দলের পাশেই থাকবেন তিনি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই পুনরায় বাংলার মসনদে দেখতে চান তিনি। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় পাহাড়ের রাজ্য রাজনীতি। বিমল গুরুং গো ব্যাক স্লোগানে গর্জে ওঠে পাহাড়। বিনয় তামাং- অনীত থাপার নেতৃত্ব শুরু হয় পাহাড়ের বিভিন্ন চত্বরে মিছিল।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জল ঢালতে ময়দানে নামেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী, নবান্নে ডাক পরে বিনয়-অনীতের। তবে বরফ গলেনি। কলকাতা যাওয়ার আগে ও পরে বিমলকে কার্যত তুলোধনা করেন বিনয়, সাফ জানান, বিমল পাহাড়ের কোনও সাবজেক্টই নয়, পাহাড়ে শান্তি বজায় থাকুক, সেটাই তারা চান এবং কেউ তা ভঙ্গ করতে চাইলে তারা ছেড়ে কথা বলবেন না বলেও স্পষ্ট বার্তা দেন।

এইসকল পরিস্থিতির মধ্যে ২৮ শে নভেম্বর হয় রোশনের ঘর ওয়াপসি। তাঁকে স্বাগত জানাতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে উপচে পড়ে বিমল পন্থীদের ভিড়। দুপুরের পর বাগডোগরা বিমানবন্দরে অবরতরণ করেন রোশন গিরি। দলের শীর্ষ নেতাকে স্বাগত জানাতে সেখানে উপস্থিত হন বিমল গুরুং শিবিরের জনমুক্তি মোর্চার কর্মী-সমর্থকরা। পার্বত্য এলাকা বিমল গুরুংয়ের এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পতাকায় সাজিয়ে তোলা হয়।

বাগডোগরা বিমানবন্দরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েই রশন জানান, আগামী মাসের ৬ তারিখেই বিমল শিলিগুড়িতে ফিরছে এবং ঐদিনই শিলিগুড়িতে জনসভায় যোগ দেবেন বিমল। রোশন আরও বলেন, তারা পাহাড়ের মানুষের আবেগের সাথেই আছেন। বিনয় পন্থীদের আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘অনীত এবং বিনয় তামাং পাহাড়কে ধ্বংস করেছে, বিমল ফিরলেই পাহাড়ে সুশাসন ফিরবে। বিমল পাহাড়ের জননেতা, পাহাড়বাসীর জনসমর্থন রয়েছে বিমলের সঙ্গে।

এরপরের দিনই অর্থাৎ ২৯ শে নভেম্বর কার্শিয়াংয়ের সিবচুতে বিমল গুরুং সংগঠনের জনসভা মঞ্চে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিমল পন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অর্থাৎ জিটিতে বিনয় তামাং এবং অনীত থাপারা যা দুর্নীতি করেছে তার অবিলম্বে অডিট প্রয়োজন। রোশন গিরি এদিন আরও বলেন, গোর্খাল্যান্ডের দাবী থাকবেই, সেই দাবী কোনদিনই মুছবে না। তবে আগামী ২০২৪- এর লোকসভা নির্বাচনে যে দল তাদের দাবী মানবে তাকেই সমর্থন জানাবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। একই সাথে এদিন তিনি বলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা গোটা উত্তরবঙ্গ থেকেই তৃণমূলকে সমর্থন জানাবে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী যা কথা দেন তা পালন করেন। বিজেপি পরপর তিনবার পাহাড় বাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিন্তু বিশ্বাস রাখেনি। সেইসাথেই রোশন গিরি জানান, আগামী ৬ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি বাঘাযতীন পার্কে এক জনসভার ডাক দেওয়া হয়েছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পক্ষ থেকে এই জনসভায় প্রধান বক্তা থাকবেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো বিমল গুরুং স্বয়ং নিজে।

এরপর আজ বৃহস্পতিবার বিমলপন্থী মোর্চার সহ সভাপতি বিশাল ছেত্রী ঘোষণা করেন, বাঘাযতীন পার্কের পরিবর্তে সেই সভা অনুষ্ঠিত হবে গান্ধী ময়দানে। সভায় দেড় লাখ লোকের জমায়েত হবে বলে দাবী বিমল পন্থীদের। সভার পর আপাতত শিলিগুড়িতেই ঘাঁটি গাড়বেন বিমল। পাহাড়ে যাওয়ার দিনক্ষন চূড়ান্ত হয়নি। শিলিগুড়িকে মধ্যমণি করেই বিধানসভা ভোটের রণকৌশল ঠিক করবেন তিনি। একুশের লড়াইয়ে বিজেপিকে মোক্ষম জবাব দেওয়া হবে বলেও এদিন সুর চড়ান বিশাল। সেই সাথে বিনয়,অনীতরা সভা বানচালের যে চেষ্টায় মেতেছে, তা সার্থক হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular