Homeএখন খবরসেদিন লুঙ্গি পরেই সভায় যেতে ইচ্ছা করছিল যেদিন অভিষেক বলেছিল 'তোর বাপকে...

সেদিন লুঙ্গি পরেই সভায় যেতে ইচ্ছা করছিল যেদিন অভিষেক বলেছিল ‘তোর বাপকে গিয়ে বল বাড়ির ৫ কিমির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি’ বললেন অভিমানী শিশির

নিজস্ব সংবাদদাতা: ঠিক ১মাস পরে বুকের সমস্ত কষ্ট আর অভিমান উগরে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুর তৃনমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজের মতামত দিতে গিয়ে বললেন, ‘সেদিন বাড়িতে লুঙ্গি পরেই বসেছিলাম আর টিভিতে শুনছিলাম অভিষেকের বক্তব্য। শুনতে শুনতে মনে হয়েছিল এই অবস্থাতেই একটা রিক্সা নিয়ে চলে যাই, জিজ্ঞাসা করি কোন বাপের কথা বলছ তুমি। আমি চলেও যাচ্ছিলাম, হয়ত চলেও যেতাম কিন্তু হঠাৎ আমার গৃহদেবতার দিকে চোখ পড়ে যায়। উনি যেন আমাকে বলেন, একজন বাচ্চা ছেলের (অভিষেক ব্যানার্জী) কথায় কিছু মনে করোনা।’

গত ঠিক এক মাস আগে ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখ কাঁথি শহরে সভা করতে এসেছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃনমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শিশির অধিকারীর শান্তিকুঞ্জের বাড়ি থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই সভায় শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্য করে অভিষেক বলেছিলেন,  ‘‘এমনিতে তো জোকারের মতো মুখ! তার উপর বড় বড় কথা! আমাকে বলছে যে, ‘এলে দেখে নেব। যদি না শোধরাও, ওই করব, তাই করব। আরে তোর বাপকে গিয়ে বল, তোর বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি! যা করার কর! আয়’! হিম্মত আছে? এই মেদিনীপুরের মাটিতে, তোমার মাটিতে, তোমার পাড়ায় তোমার এলাকায় দাঁড়িয়ে তোমায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে যাচ্ছি।’’ এরপর তাঁর শ্লেষ, ‘‘চার আনার নকুলদানা, তার আবার ক্যাশমেমো। আমাকে থ্রেট দিচ্ছে! আজকে এলাম। আগামী দু’মাসের মধ্যে আরও পঞ্চাশ বার আসব। জামানত বাজেয়াপ্ত করব।’’

ঘটনার একমাস পরে শুভেন্দু পিতা বর্ষীয়ান শিশির অধিকারী বলেন, ” যে ভাষায় এই কথা বলা হয়েছে স্বয়ং যমও এই ভাবে কথা বলেনা।” পূর্ব মেদিনীপুরে দলের (তৃনমুল কংগ্রেস) অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে শিশির অধিকারী বলেন, “আমাদের দলের অবস্থা খুবই খারাপ। নির্বাচনে খুবই খারাপ ফল হবে। দল ভেতরে ভেতরে ফাঁকা হয়ে গেছে। উপরে যে চাকচিক্য রয়েছে তা একেবারে লোক দেখানো। কলকাতা থেকে নেতারা আসছেন, মিটিং করে চলে যাচ্ছেন কিন্তু দলের ভেতর টা দেখতে পাচ্ছেননা।”

নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী হওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “দল এই জেদাজেদির মধ্যে কেন গেল? উনি কেন দাঁড়াতে গেলেন? উনি দলের প্রধান জোর করে দাঁড়াতেই পারেন কিন্তু না দাঁড়াতেই পারতেন।” নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর প্রার্থী হওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ” শুভেন্দু ওখান থেকে জিতেছেন। নন্দীগ্রামের নেতা সে। ওখানে আন্দোলন করে উঠে এসেছে। আমি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় পায়ে হেঁটে ঘুরেছি। ওই আন্দোলনের সময় প্রায় কুড়ি জন মহিলা সন্তান প্রসব করেছেন যাঁর অনেকেই সন্তানের নাম রেখেছে শুভেন্দু। ওখানকার মুসলিম মহিলাদের জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারা যাবে শুভেন্দুর অবস্থান কী?”

দলের দুর্নীতি নিয়েও মুখ খুলেছেন শিশির। বলেছেন, ‘আমফানের টাকা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। আমরা অনেক টাকা ফেরৎ করিয়েছি।’ এই নির্বাচনে প্রচারে যে তিনি নামছেননা এটা জানিয়ে দিয়ে বলেন, শরীর আর দিচ্ছেনা। ছেলেরাও বলছে আর এই সব ঝামেলার মধ্যে না যেতে। আমি ছেলেদের কথা শুনি।”

RELATED ARTICLES

Most Popular