Homeএখন খবরসুবর্নরেখার কথা-১৭ ।। উপেন পাত্র

সুবর্নরেখার কথা-১৭ ।। উপেন পাত্র

সুবর্নরেখার বৈষ্ণবকাব্য এবং গোপীবল্লভ কথা                                                   উপেন পাত্র                   গোপীজনবল্লভ দাস রচিত “রসিকমঙ্গল” কাব্য। এই কাব্যগ্রন্থটি শ্রীপাট গোপীবল্লভপুরের প্রথম মোহান্ত গোস্বামীর জীবন চরিত।প্রায় তিনশো বছর আগে কাব্যটি তালপাতায় লিখিত হয়।বহুকাল যাবৎ কাব্যগ্রন্থটি দুষ্প্রাপ্য ছিল।রণজিতপুর রাম নারায়ণ পাঠাগারের সুবর্ণজয়ন্তী (১৯৪৪-১৯৯৫) বর্ষে ২০০৪ সালে আজহারউদ্দীন খান মহাশয়ের সম্পদনায় “শিকড়ের খোঁজে” পুস্তকে এই কাব্যগ্রন্থটি যথাযথ ভাবে পুনর্মুদ্রিত করা হয়েছে। প্রাপ্তিস্থান- সুপ্রিয় পাবলিশার্স ১০এ বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রীট কোলকাতা ৭০০০৭৩।

শ্রীজীব গোস্বামীর নির্দেশে শ্যামানন্দ আচার্য উৎকলে(ঐকালে অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার অধিকাংশ উৎকলের অন্তর্ভুক্ত ছিল)বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারকালে গোপীবল্লভপুরে শ্রীপাট প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাঁর প্রধান শিষ্য রসিকানন্দকে শ্রীপাটের প্রথম মোহান্ত গোস্বামী রূপে অভিষিক্ত করেন।রসিকানন্দের পূর্বনাম রসিকমুরারি পট্টনায়ক। তিনি রোহিনী গ্রামের এক উৎকল কায়স্থ বা করণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শ্যামানন্দের পূর্বনাম দুখী মন্ডল।তিনি কলাইকুণ্ডা সন্নিকটে ধারেন্দা গ্রামে এক সদগোপ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

ধারেন্দা গ্রামের সদগোপ বংশীয় রসময় ঘোষ শ্যামানন্দের সহচর ছিলেন।তিনি শ্রীপাটে এসে বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করায় তাঁর নাম হয় রসময় দাস অধিকারী।তাঁর প্রথম পুত্র ছিলেন গোপীজনবল্লভ দাস।শ্যামানন্দের নির্দেশে তিনি রসিক মঙ্গল কাব্যটি রচনা করেন। রসিক মঙ্গল কাব্যে চারটি বিভাগ আছে,যথা– পূর্ব বিভাগ,দক্ষিণ বিভাগ,পশ্চিম বিভাগ ও উত্তর বিভাগ।প্রতি বিভাগে ষোলোটি করে লহরী আছে।কাব্যের পদগুলি সম্ভবত গীত হতো,কারণ প্রতি লহরীর প্রারম্ভে রাগ উল্লিখিত আছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে অধিকারী পদবী বিশিষ্ট গোপীজনবল্লভ দাসের বংশধররা এখনও গোপীবল্লভপুরে বাস করেন। শ্যামানন্দের শিষ্যবর্গ গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজে শ্যামানন্দী শাখা নামে পরিচিত হন।কপালে বৈষ্ণবীয় তিলকের মধ্যখানে কৃপাবিন্দু নামে একটি বিন্দু অঙ্কন এঁদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

RELATED ARTICLES

Most Popular