Homeএখন খবরঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরাতে দু'হাজার বাইক থাকছে শালবনীতে, লালে লাল চন্দ্রকোনা রোড

ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরাতে দু’হাজার বাইক থাকছে শালবনীতে, লালে লাল চন্দ্রকোনা রোড

নিজস্ব সংবাদদাতা: চন্দ্রকোনা রোড (গড়াবেতা): প্রহর যেন কাটছেনা চন্দ্রকোনা রোডের! কাউন্ট ডাউনের কাঁটা যেন ঘুরতেই চায়না। বাইকটা ওয়েলিং করে ৫লিটার তেল ভরে নিয়েছেন বছর সাতাশের অনিত হাজরা। রবিবার যে দু’হাজার বাইক শালবনি থেকে সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষকে নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনারোডে পৌঁছাবে তারই একজন অনিত হাজরা। আলু লাগানোর কাজ বাতিল করেছে অনিত হাজরা, রতন বিশই, প্রনব সেনাপতিরা। ডুকি থেকে সাতবাঁকুড়া, ধাদিকা থেকে বোস্টমমোড় মায় হুগলি লাগোয়া সন্ধিপুরে সাজো সাজো রব। সুশান্ত ঘোষ আসছেন, আসছেন প্রায় ৯বছর পরে।

বেনাচাপড়া, দাসেরবাঁধ মামলায় জামিন মিলেছিল আট বছর আগেই কিন্তু রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল তিনি প্রভাবশালী, এমনকি বিধায়ক না হওয়া স্বত্ত্বেও তিনি এতটাই প্রভাবশালী যে এলাকায় ঢুকলে তিনি মামলাকে প্রভাবিত করতে পারেন। তাই তাঁকে জেলায় ঢুকতে দেওয়া যাবেনা। যদিও শেষমেশ সেই মরিয়া প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন ঘরে ফিরতে পারেন তিনি। রবিবার, ৬ই ডিসেম্বর নিজের এলাকা চন্দ্রকোনা রোডে ফিরছেন তিনি। ফিরছেন নিজের মাটি আর নিজের মানুষদের কাছে যাঁরা এখনও ‘সুশান্তদা’কেই তাঁদের যাবতীয় সুখ দুঃখের সাথী মনে করেন।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএম(CPI-M) সূত্রে জানা গেছে ৫তারিখই সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে চলে আসছেন সুশান্ত ঘোষ। জেলা নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা ও সৌহার্দ্য বিনিময় করে রাতে শহরেই রাত্রিবাস করবেন। রবিবার বেলার দিকে জেলা নেতারা সুশান্ত ঘোষকে নিয়ে রওনা দেবেন চন্দ্রকোনা রোডের উদ্দেশ্যে। রাজ্য থেকে ডঃ সুজন চক্রবর্তী থাকছেন, রবিন দেব সময় হলে থাকতেও পারেন। কংগ্রেস নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী অরুনাভ ঘোষ, প্রাক্তন নকশাল নেতা আজিজুল হক থাকবেন এমনটাই আপাততঃ ঠিক হয়েছে। আর থাকবেন বিশিষ্ট আইনজীবীদের একটি দল যাঁরা এতদিন সুশান্ত ঘোষকে আইনি লড়াই লড়তে সাহায্য করেছেন।

জেলা এবং রাজ্য নেতাদের সুশান্ত ঘোষ রবিবার বেলার দিকে মেদিনীপুর শহর থেকে গাড়িতে যাবেন প্রায় ৩৫ কিলোমিটার শালবনি অবধি। এখানে চন্দ্রকোনা রোড ও গড়াবেতার যুবকরা পৃথক ভাবে ১হাজার করে বাইক নিয়ে অপেক্ষা করবেন এমনটাই জানিয়েছেন অনিত হাজরা, রতন বিশই, প্রনব সেনাপতিরা। এই বাইক মিছিল ঘোষকে এসকর্ট করবে চন্দ্রকোনা রোডে প্রবেশের ২কিলোমিটার অবধি। এখানে সাত থেকে আট হাজার সমর্থক চন্দ্রকোনা রোড ও গুইয়াদহ এরিয়া কমিটি থেকে জমায়েত হবে। ধারনা করা হচ্ছে সব মিলিয়ে হাজার দশেক মানুষ তাঁকে নিয়ে পদযাত্রা করে ওই ২কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পৌঁছাবে সাতবাঁকুড়াতে। এখানে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছে যার মঞ্চের বড় করে ফ্লেক্স টাঙিয়ে লেখা থাকছে ‘ ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে।’

সিপিএম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিজয় পাল জানিয়েছেন, ‘সুশান্ত দা যেমন আমাদের পার্টির নেতা তেমনই রাজনীতির বাইরে তাঁর বিশেষ কিছু পরিচিতি রয়েছে তাই সেই সব মানুষরাও এই প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকছেন। আমাদের কর্মী সমর্থকদের আবেগের পাশাপাশি সেই মানুষের আবেগও কাজ করছে। তাই আশা করছি বিপুল সংখ্যক মানুষ জমায়েত হবেন।’

অনিত হাজরা, রতন বিশইরা জানিয়েছেন, “এই সময় মাঠ জুড়ে আলু লাগাচ্ছেন কৃষকরা। এটাই আমাদের সারা বছরের রুটি রুজি। কিন্তু আগামী কাল আমরা সেই কাজ বন্ধ রেখেছি। কৃষক কিংবা ক্ষেতমজুরদের আগামীকাল একটাই কর্মসূচি সুশান্তদাকে ঘরে ফেরানো। সুশান্তদার হাত ধরেই জঙ্গলমহলে সব চেয়ে বড় প্রকল্প জিন্দালদের ইস্পাত কারখানার ভিত্তি স্থাপন হয়েছিল। সেই কাজ সম্পূর্ণ হলে আজ আমরা হয়ত কেউ বেকার থাকতাম না। কিন্তু বর্তমান সরকার তাকে সিমেন্ট কারখানায় পরিনত করেছে তাও এলাকার মানুষের কাজ নেই। সুশান্তদা ফিরছেন, আমরা আবার স্বপ্ন দেখছি।”

RELATED ARTICLES

Most Popular