Homeএখন খবরখড়গপুর RPF প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাঠেই থেমে গেল ২৬ বছরের দৌড়, মৃত তেলেঙ্গানার...

খড়গপুর RPF প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাঠেই থেমে গেল ২৬ বছরের দৌড়, মৃত তেলেঙ্গানার যুবক

নিজস্ব সংবাদদাতা: বড়দা চিকিৎসক আর মেজদা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। চাইলে তিনিও হয়ত আরও ভাল চাকরি পেতে পারতেন কিন্তু বেকার থাকতে আর ভাল লাগছিলনা তাই সাউথ সেন্ট্রাল রেলের RPF জওয়ানের চাকরিটা পেতেই চলে এসেছিলেন প্রশিক্ষণ নিতে। তেলেঙ্গানার করিমনগরের ২৬বছর বয়সী অঞ্জনী এইলু ৫ সেপ্টেম্বর এসে পৌঁছান খড়গপুরে।

শনি আর রবিবার বিশ্রাম নেওয়ার পর সোমবার থেকে শুরু হয়েছিল প্রশিক্ষণ। সোমবারের পর মঙ্গলবারও যথারীতি প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় অসুস্থতা বোধ করায় তাঁকে একটু বিশ্রাম নেওয়ার জন্য মাঠের পাশে পাঠানো হয়। বলা হয় চোখে মুখে একটু জল দিতে। সেই মত মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি কিন্তু বেশিদুর যেতে পারেননি। মাঠেই লুটিয়ে পড়েন।  সাথে সাথেই অন্য জওয়ানরা তাঁকে একটি গাড়িতে করে রেল হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসার কোনও সুযোগ না দিয়ে মারা যান তিনি। পরে যুবকের আ্যন্টিজেন পরীক্ষা হয় কিন্তু করোনা মেলেনি দেহে।

খড়গপুর জোনাল RPF প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ আর কে শর্মা জানান, ” একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণ ছিল। সোমবার ওজন উচ্চতা ইত্যাদি মাপার পর মঙ্গলবার সাবধান বিশ্রামের মত প্রাথমিক প্রশিক্ষণ। তখুনি জওয়ান জানান যে অস্বস্তি বোধ করছেন। প্রশিক্ষণের শুরুতে অনেকের এটা হয়। তার ওপর আর্দ্রতা বেশি ছিল। যুবককে চোখে মুখে জল দিয়ে একটু বিশ্রাম নিতে বলা হয়। সেদিকেই যাওয়ার পথে মুর্চ্ছা যায় যুবক। এরপর মৃত্যু। কী কারনে এই ঘটনা চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন।”

RPF প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যুবকের কাছ থেকে কিছু ওষুধ পাওয়া গেছে যা সে নিয়মিত সেবন করত বলেই মনে করা হচ্ছে। আমরা তাও পুলিশকে তুলে দিয়েছি। ময়নাতদন্তের পরই সবটা পরিষ্কার হবে। তবে চাকরির জন্য অনেকেই কিছু রোগ লুকিয়ে যান। এক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়েছিল কিনা, কোনও বড়সড় রোগ তাঁর ছিল কিনা খতিয়ে দেখা হবে।

মঙ্গলবার রাতেই বিমান যোগে কলকাতা ও তারপর গাড়ি করে খড়গপুরে এসে পৌঁছান যুবকের দুই দাদা ও মামা। তাঁরা জানান, প্রথমে কর্তৃপক্ষ আমাদের ভাইয়ের অসুস্থতা ও পরে মৃত্যু সংবাদ জানান। কী কারণে মারা গেছে চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন। যদিও যুবকের কোনও পুরানো রোগের কথা জানেননা বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। যুবকের মেজদা জানান, ”আমরা বুঝিয়ে ছিলাম আরও একটু অপেক্ষা করে ভাল চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে। এবং ওর সেই ক্ষমতা ছিল।” যুবকের মামা জানান, “চাকরি পেতে মরিয়া ছিল সে তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি।”
বুধবার দুপুরে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর দেহ নিয়ে রওনা দেয় পরিবার। বুধবার রাতেই করিমনগরে তাঁর শেষকৃত্য হবে বলে জানিয়েছেন যুবকের দাদারা।

RELATED ARTICLES

Most Popular