Homeএখন খবরকর্মীদের ক্ষোভের মুখে বদল হচ্ছে বিজেপির প্রার্থী তালিকা, বাদ পড়তে পারেন তৃণমূল...

কর্মীদের ক্ষোভের মুখে বদল হচ্ছে বিজেপির প্রার্থী তালিকা, বাদ পড়তে পারেন তৃণমূল থেকে আসা একগুচ্ছ প্রার্থী! শাহের তলব পেয়েই দিল্লীর পথে মুকুল-দিলীপরা

অশ্লেষা চৌধুরী: বিজেপির প্রার্থী তালিকায় হতে চলেছে বড়সড় রদবদল। প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন তৃনমূল থেকে আসা একগুচ্ছ প্রার্থী, যার মধ্যে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই থেকে শুরু করে রয়েছে প্রবীর ঘোষালের নামও। অন্তত বিজেপির অন্দরমহল থেকে জানা যাচ্ছে এমনটাই। আর সূত্রের খবর এই কারণে মঙ্গলবারেই মুকুল-দিলীপকে দিল্লীতে ডেকে পাঠিয়েছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

বিজেপি সূত্রে আরও খবর, দিল্লীতেই প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠক হবে। জানা গিয়েছে, প্রার্থী তালিকা প্রকাশ পেতেই যে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়েছে চতুর্দিকে, তা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ অমিত। এও জানা গিয়েছে প্রকাশিত প্রার্থী তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হতে পারে ৭টি নাম। এর মধ্যে উত্তরপাড়া থেকে সরানো হতে পারে প্রবীর ঘোষালকে এবং সিঙ্গুর থেকে সরানো হতে পারে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে। পাশাপাশি ক্যানিং পশ্চিম এবং রায়দিঘি কেন্দ্রের প্রার্থীকেও সরিয়ে দেওয়া হতে পারেই বলেই সূত্রের খবর।

রবিবার, বিজেপি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ পেতেই দেখা যায়, তাতে বেশ কিছু চমক রেখেছিল বিজেপি। কিন্তু সেই চমক কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্লান হতে থাকে। যাঁরা অন্যদল থেকে আজ কিংবা কাল এসেছে তাঁদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে টিকিট আর দীর্ঘদিন ধরে দল করে যাওয়া নেতা কর্মীরা কার্যত বুড়ো আঙুল চোষার মত অবস্থায়। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় কোথাও জেলা সভাপতি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তো কোথাও দল ছাড়ার হুমকি। কিন্তু সিঙ্গুর নিয়ে খোদ বিজেপির দপ্তর হেস্টিংসে যা হয়ে গেল তাতে বোঝা গেল আগুনের উত্তাপ থামার লক্ষণ নেই। সোমবার হেস্টিংসে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। এদিন কিছু বিজেপি কর্মী সরাসরি অভিযোগ করেছেন মুকুল রায় টাকা খেয়ে উদয়নারায়ণপুরে সুমিত রঞ্জন খাঁড়াকে প্রার্থী করেছে বলে। তাঁরা উদয়নারায়ণ পুর কেন্দ্র ভোলানাথ সামুইকে প্রার্থী চান বলে সরব হয়েছেন।

অন্যদিকে, সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইকে নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে!সিঙ্গুরের এবার তৃণমূল কংগ্রেস টিকিট দেয়নি মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। তাঁর অপর গোষ্ঠী বেচারাম মান্না এবং স্ত্রীকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আর তাতেই চটেন মাস্টারমশাই। এরপরেই দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। দল ছাড়ার কথাও বলেন। গত কয়েকদিনের মধ্যেই তৃণমূল ছাড়েন মাস্টারমশাই। যোগ দেন বিজেপিতে। তাঁর যোগদানের পর থেকেই তাঁর ফের প্রার্থী হওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। শেষমেশ তাঁকে সিঙ্গুর থেকেই প্রার্থী করে বিজেপি। আর তাতেই বিপত্তি! একের পর এক ভিড় কমতে লক্ষ্য করা যায় গেরুয়া শিবিরের সভায়, খোদ অমিত শাহের সভাতেও একই দৃশ্য। অমিতের পর নিতিন গড়করি এমনকি বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সভাতেও তাই।

আর এইরকম লক্ষণীয় ভাবে সভায় ভিড় কমে যাওয়া নজর এড়ায়নি অমিতের। সোমবার সকালে সকালে কপ্টার বিভ্রাটে ঝাড়গ্রামের সভায় যেতে পারেননি৷ ভার্চুয়াল বক্তৃতার মাধ্যমেই কাজ সারতে হয়েছে৷ সেখান থেকে বাঁকুড়ার রানিবাঁধের সভা করে উড়ে গিয়েছিলেন অসমে৷ কিন্তু সোমবার রাতেই ফের গুয়াহাটি থেকে কলকাতায় ফিরে রাজ্য বিজেপি-র কোর কমিটির বৈঠকে যোগ দিলেন অমিত শাহ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি রাতেই কলকাতায় চলে আসেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডাও৷ রাজারহাটের একটি হোটেলে ওই বৈঠকে ছিলেন বিজেপি সভাপতিও৷ নিউ টাউনের একটি পাঁচতাঁরা হোটেলে শুরু হয় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। বঙ্গ বিজেপির নেতারাই সেখানে উপস্থিত হন। কীভাবে কর্মীদের ক্ষোভ বিক্ষোভ সামাল দেওয়া যায় তা নিয়েই মূলত আলোচনা সারেন বলেই খবর।

রীতিমত ধমক জুটেছে মুকুল ও দিলীপের কপালে। কেন প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হল? কিভাবে বাছাই করা হল প্রার্থী? কেন কনফিডেন্সে নেওয়া যাচ্ছে না স্থানীয় নেতৃত্ব কে? বিক্ষোভ কেন সামাল দিতে পারছে না রাজ্য নেতৃত্ব? প্রশ্ন তোলেন অমিত। এও জানা গিয়েছে, অমিত শাহ চান মুকুল রায় কৃষ্ণনগর থেকে এবং দিলীপ ঘোষ বীরভূম থেকে ভোটের লড়াই করুন। আর সেই সংক্রান্ত আলোচনা সারতেই অমিতের ডাকে দিল্লী উড়ে যাচ্ছেন মুকুল-দিলীপ বলেই খবর।

RELATED ARTICLES

Most Popular