Homeএখন খবরকেন্দ্রকে অসাড়, অনুভূতিহীন ও হৃদয়হীন বললেন অর্থমন্ত্রীর স্বামী! দেশের দৈনিক সংক্রমন ছাড়ালো...

কেন্দ্রকে অসাড়, অনুভূতিহীন ও হৃদয়হীন বললেন অর্থমন্ত্রীর স্বামী! দেশের দৈনিক সংক্রমন ছাড়ালো ৩লক্ষ, দৈনিক মৃত্যু ৩ হাজার ছুঁয়ে

নিউজ ডেস্ক: দেশ জুড়ে জারি করোনার তাণ্ডব। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে তিন লক্ষ পার করেছে আক্রান্তের সংখ্যা ৷ এমতাবস্থায় কেন্দ্রকে কার্যত তুলোধোনা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণের স্বামী ড. পরাকলা প্রভাকর। কেন্দ্র সরকারকে অসাড়, অনুভূতিহীন ও হৃদয়হীন বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত ৩,৫২,৯৯১ জন ৷ মৃত্যু হয়েছে ২,৮১২ জনের ৷ পাশাপাশি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২,১৯,২৭২ জন ৷ সেইসঙ্গেই করোনায় আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২৮,১৩,৬৫৮ জন ৷ পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত কোভিডের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ১৪,১৯,১১,২২৩ জনকে৷ দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যাও ১ লক্ষ ৯৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ২৫.১৭ শতাংশ। অর্থাৎ যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে প্রতি ৪ জনে এক জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, যা রীতিমতন কাঁপুনি ধরাচ্ছে।

দেশে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রকেই কাঠোগরায় তুললেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণের স্বামী ড. পরাকলা প্রভাকর। তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা এবং গণজ্ঞাপনের দক্ষতা এই সরকারের অক্ষমতা এবং হৃদয়হীনতাকে ঢেকে দেয়। অসাড়তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না বরং সহানুভূতি, স্বচ্ছতা, ও সহানুভূতিই দীর্ঘস্থায়ী। প্রধানমন্ত্রীর অন্তত এখন নিজের পছন্দের দিকে নজর দেওয়া উচিৎ। দেশে এখন মৃত্যু রিপোর্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। করোনা মামলার রিপোর্ট রাখাও সম্ভব হচ্ছে না।‘

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকরা বলছেন পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ছে। হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরির ক্যাপাসিটির চেয়ে মামলার সংখ্যা এতটাই বেশি যে তাদের রোগী উপচে পড়ছে। শ্মশানগুলিতে ডজন ডজন দেহ সৎকার হচ্ছে। হাসপাতালে স্টেচারের সংখ্যা দ্বিগুন করে দেওয়া হয়েছে। রোগীর আত্মীয়রা হাহাকার করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের হাহাকার দম বন্ধ করা পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।

এরপরেই তাঁর রোষানলে পড়েন অন্যান্য নেতা ও নির্বাচনের মিটিং-মিছিল। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে রাজনীতিকদের কাছে নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ হল! ধর্মগুরুদের কাছে ধর্মটা বড় হল। জনগণের স্বাস্থ্য বা তাদের জীবনধারণ তাদের কাছে কোনও পাত্তাই পেল না। টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে মানুষ মিছিলে ভিড় করছে। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, মুখ্যমন্ত্রীরা, বিরোধী দলনেতারা সভা করছেন। কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যখন সর্বনাশ হয়ে গেল তখন ধর্মীয় নেতারা মেলা প্রতীকী করার কথা বলছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মিছিল বাতিল করার কথা বলছেন। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি করোনার প্রটোকল ভেঙেছে। কোনও বিধি মানেনি তারা।

কুম্ভ মেলার মিছিল যারা সমর্থন করে তাদের বিরুদ্ধেও তোপ দেগে তিনি বলেন, এগুলো শোনাও বিরক্তিকর। তারা অনেকেই বলছেন আমাদের সংক্রমণের হার কম। তারা হৃদয়হীন দেশের সঙ্গে তুলনা করছে। ভুটান, নেপাল, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার চেয়ে এই দেশের সংক্রমণের হার অনেক বেশি। এটি আমাদের মনে রাখা দরকার বলে জানান প্রভাকর।

দেশ জুড়ে করোনার থাবা আরও জোরালো হচ্ছে। মহারাষ্ট্র ও দিল্লী চরম ক্ষতিগ্রস্থ। রবিবার মহারাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার ১৯১ জন, মৃত্যু হয়েছে ৮৩২ জনের। এখনও পর্যন্ত করোনায় মহারাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা ৬৪ হাজার ৭৬০ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ২৯৫ হাজার ০২৭ জন। ২৪ ঘন্টায় ৬১ হাজার ৪৫০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

এদিকে দিল্লীর অক্সিজেন সঙ্কট চরমে। কখনও দিল্লির জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতাল, কখনও দিল্লির এলএনজেপি, বাটরা হাসপাতাল। একে একে প্রকট হয়েছে অক্সিজেন সঙ্কট। এই পরিস্থিতিতে সাহায্য চেয়ে প্রতিবেশী রাজ্যগুলির কাছে ইতিমধ্যে চিঠিও দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু তারপরেও কমছে না উদ্বেগ।

RELATED ARTICLES

Most Popular