Homeএখন খবরফের কাঠগড়ায় কলকাতা মেডিক্যাল, বেড থাকা সত্ত্বেও রোগী ফেরানোর অভিযোগ রোগী পরিবারের

ফের কাঠগড়ায় কলকাতা মেডিক্যাল, বেড থাকা সত্ত্বেও রোগী ফেরানোর অভিযোগ রোগী পরিবারের

ওয়েব ডেস্ক : শুক্রবারের পর রবিবার ফের কাঠগড়ায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। স্বামী করোনায় আক্রান্ত! হাসপাতালে ভর্তি করতে রীতিমতো কাল ঘাম ছুটলো স্ত্রীর। বৃহস্পতিবার থেকে টানা দু’দিন কলকাতার চার-চারটে হাসপাতাল ঘুরেও কোথাও জায়গা হয়নি করোনা আক্রান্ত বাগুইআটির বাসিন্দার। অবশেষে কোনোরকমে চিকিৎসকদের হাতেপায়ে ধরে গত শনিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ে স্বামীকে ভর্তি করতে পারেন স্ত্রী। কিন্তু ভরতি হওয়ার পর হাসপাতালের ভিতরের চিত্র দেখে রীতিমতো কেঁদে ফেলার জোগার রোগী পরিবারের সদস্যের।

কয়েকদিন ধরেই জ্বর-শ্বাসকষ্ট সহ একাধিক করোনা উপসর্গ ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে করোনা পরীক্ষা করায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে বাগুইয়াটির করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তির৷ এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ৯ জুলাই থেকে টানা দু’দিন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, নিউটাউনে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার ইনস্টিটিউট, বারাসত এমনকি ব্যারাকপুরের আরও দুটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বেড নেই বলে কোনো হাসপাতালেই ভরতি নেওয়া হয়নি রোগীকে৷ এদিকে গত দু’দিনে চিকিৎসার অভাবে ক্রমশ রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে৷ শেষমেশ ১১ জুলাই কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা। বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কোনোরকমে কাকুতিমিনতি করে শেষমেশ ভর্তি করানো সম্ভব হয়।

মহিলার অভিযোগ, স্বামীকে নিয়ে তিন তলায় গেলে দেখা যায় অধিকাংশ বেড খালি৷ এমনকি ঘরে যতগুলি বেড রয়েছে তার অর্ধেকও ভরতি নেই। এদিকে বেড নেই বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী ভর্তি নিতে চাইছিলেন না৷ ওই মহিলার আরও অভিযোগ, যেখানে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় রোগী পরিবারের লোকেদের ভিতরে ঢুকতেই দেওয়া হয় না, সেখানে হাসপাতালের কর্মচারী ওই মহিলাকেই তাঁর স্বামীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে বলেন। এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স সে ভাবে নেই। রোগীদের দেখাশুনাও সঠিকভাবে হচ্ছে না৷ রোগীদের যত্ন তো দূরের কথা সামান্য জলটুকুও দেওয়া হচ্ছে না। পাশের বেডে থাকা করোনা রোগীদের জল খাওয়াতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আদৌ তাঁর স্বামীর চিকিৎসা হবে কিনা কিংবা তাকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন কিনা সেবিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ওই মহিলা।

প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয় করোনা পরিস্থিতিতে এর আগে বহুবার রোগী প্রত্যাখ্যানের অভিযোগে কাঠগড়ায় উঠেছে কলকাতার বেশকিছু প্রথম সারির সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফে বারংবার রোগী না ফেরানোর হুশিয়ারী দেওয়া হলেও কার্যত কোনো তোয়াক্কা না করেই নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করে চলেছে হাসপাতালগুলি। গত ২ দিন আগে বেড থাকা সত্ত্বেও ইছাপুরের বছর ১৮-র কিশোরকে এইভাবেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কলকাতার ৩টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষও বেড নেই বলে একপর্যায়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রোগীকে। কিন্তু শেষমেশ কিশোরের মায়ের আত্মহত্যার হুমকিতে ভরতি নিতে বাধ্য হয় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রেও দেখা যায় বেড খালি থাকা সত্ত্বেও রোগী ফিরিয়ে দিচ্ছিল হাসপাতাল৷ যদিও শেষ রক্ষা আর হয়নি৷ শেষমেশ বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু হয় ইছাপুরের বছর ২০-র শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে৷ এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রোগী পরিবারের এমন অভিজ্ঞতা বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে!

RELATED ARTICLES

Most Popular