ওয়েব ডেস্ক : রেল যে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে সে কথা গত বছরই শোনা গিয়েছিল। এবার ধাপে ধাপে সেই প্রক্রিয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। এবার ১০৯টি রুটে ১৫০টি ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চায় রেল। সে অনুযায়ী ভারতীয় রেলের তরফে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি মেক ইন ইন্ডিয়ার আওতায় ট্রেনগুলিকে নির্মাণ করা হবে। তবে ট্রেন চালানো থেকে শুরু করে ট্রেনগুলির দেখভাল, এবার থেকে সবেতেই দায়িত্ব থাকবে বেসরকারি সংস্থার। রেল কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী মনে করা হচ্ছে এর থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা আয় হবে রেলের।
রেল সূত্রে খবর, প্রতিটি ট্রেনে ১৬টি কোচ থাকবে ও সর্বাধিক ১৬০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন যেতে পারবে। ১০৯টি রুটকে ১২টি ক্লাস্টারে বিভক্ত করেছে রেল। রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে প্রতিটি ট্রেনই কোনও নির্দিষ্ট রুটের ক্ষেত্রে দ্রুততম হবে। পাশাপাশি জানানো হয়, এই প্রথম প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলি বেসরকারি লগ্নিতে চালানো হচ্ছে। আশা করা যাবে এর জেরে আগামী দিনে লাভবান হবেন সাধারণ মানুষেরা। অন্যদিকে রেলের তরফে আরও জানানো হয়, ট্রেনগুলি বেসরকারি করণের ফলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা বৃদ্ধি ইত্যাদি লক্ষ্য পূরণ হবে৷ তবে প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলি বেসরকারিকরণ করা হলো মানে এটা কখনই নয় এর প্রতি রেলের হাত থাকবে না। বেসরকারি সংস্থাদের লাভ্যাংশ ছাড়াও এক্ষেত্রে বিদ্যুত সহ বিভিন্ন খরচের টাকা সরকারকেই দিতে হবে। পাশাপাশি ট্রেনগুলি চালানোর ক্ষেত্রে বেসরকারি কর্মী নয় বরং ভারতীয় রেলের লোকোপাইলট ও গার্ড দ্বারাই ট্রেন চালানো হবে।
তবে এই ১৫০ টি ট্রেনের মধ্যে হাওড়া ক্লাস্টারে কোন কোন ট্রেন বেসরকারি হতে চলেছে দেখে নেওয়া যাক-
টাটনগর–শালিমার (১)
শালিমার–পুণে(১)
হাওড়া– চেন্নাই(৩)
শালিমার–টিসিটিবি(৪)
হাতিয়া–টিসিটিবি(১)
হাওড়া–নিউ জলপাইগুড়ি(১)
হাওড়া—আনন্দবিহার(২)
হাওড়া—পাটনা(১)
হাওড়া—মালদা(১)
শিয়ালদহ—গুয়াহাটি(১)
ছাপরা—আনন্দবিহার(১)
তবে রেলের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই বিরোধিতা করেছেন প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরি। তাঁর মতে, কেন্দ্র পরিকল্পনাহীন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এভাবে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত খুব একটা যুক্তিপূর্ণ নয়। তবে শুধু অধীর রঞ্জন চৌধুরী নন একই মন্তব্য করেছেন সিপিএম নেতা মহম্মস সেলিমেরও। রেলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুতই টেন্ডার ডেকে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হতে পারে। যোগ্যতার ভিত্তিতে বেসরকারি সংস্থা বিভিন্ন রুটে প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানোর দায়িত্ব পাবে। তবে এক্ষেত্রে ভাড়া বাড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের মধ্যে উৎকন্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। তবে যাত্রীদের একাংশের মত ভাড়া বাড়লেও রেল যদি সত্যিই বেসরকারির হাতে তুলে দেওয়া হয় তবে পরিষেবা এখনের তুলনায় যথেষ্ট ভাল মিলবে।