Homeএখন খবরঘুমন্ত মায়ের কাছ থেকে ২ বছরের শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে গলার নলি...

ঘুমন্ত মায়ের কাছ থেকে ২ বছরের শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে গলার নলি কেটে আলমারিতে লুকিয়ে রাখলো জেঠিমা

ওয়েব ডেস্ক : ২ বছরের শিশুকে নিয়ে মা ঘুমিয়েছিল। ঘুমিয়ে গিয়েছিল দুজনেই। চুপি সারে সেই শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন করলো জেঠিমা৷ শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুরের কাশীপুর গ্রামে। ঘটনার পর অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এভাবে সন্তানকে হারিয়ে শোক যেন কিছুতেই বাঁধ মানছে না মা, বাবার।

কী কারনে এই খুন তা এখুনি পুলিশ জানায়নি নিশ্চিত করে। পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত শুরু হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুরের কাশীপুরের বাসিন্দা মোরশেদ খানের সাথে ওই গ্রামেরই আর এক বাসিন্দা শম্পা বিবির বেশ কয়েক বছর আগেই বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র সন্তান দু’বছরের আকিব খান। কিন্তু বিয়ের কয়েকমাস পরেই বৌদি তাজমির বিবির সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন মোরশেদ খান। বছর খানেক সেই সম্পর্ক চলার পর বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। সেসময় সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসে মোরশেদ। পরে স্ত্রী শম্পার সাথে তাজমিরের ব্যাপক অশান্তি হয়৷ বেশ কয়েকবছর তাদের মধ্যে কথা বন্ধ ছিল। পরে অবশ্য তা মিটে যায়। তবে মোরশেদের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা একেবারেই মেনে নিতে পারেনি তাজমির। ফলে মুখে ভালো মানুষি থাকলেও মনে মনে রাগ পুষে রেখেছিল তাজমির। এরপর বৃহস্পতিবার ফের শম্পার সঙ্গে তাঁর জা তাজমির বিবির পারিবারিক অশান্তি হয়। এবারও সেই অশান্তি মিটে যায়। এরপর শুক্রবার বিকেলে শম্পা বিবি যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন তাজমির বিবি দু’বছরের আকিবকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।

এদিকে অনেক্ষণ আকিবকে দেখতে না পেয়ে বিকেল সাড়ে চারটের পর থেকে বাড়ির লোকেরা আকিবকে খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু তাকে কোথাও পাচ্ছিলেন না। সেসময় পরিবারের সদস্যদের প্রাথমিক ধারণা হয়েছিল, খেলতে খেলতে হয়তো বাড়ির আশেপাশে কোনও পুকুরে সে পড়ে গিয়েছে। তাই পুকুরে জাল ফেলে আকিবের খোঁজ চলছিল। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই তাতেও দেহ উদ্ধার হয়নি। এদিকে রাত বাড়তেই তাজমির বিবির হাবভাব দেখে তারওপর পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ দানা বাঁধে। এরপর সকলে মিলে তাকে জোর করতেই সে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে। তাজমির জানায় আকিবকে সে আলমারিতে ভরে রেখেছে। এরপর তড়িঘড়ি মোরশেদ তাজমিরার ঘরে গিয়ে আলমারি খুলতেই দেখা যায়, ছোট্ট আকিবের মুখে কাপড় গোঁজা, মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ছোট্ট আকিব। তার গলায় গভীর খত, যা দেখে বোঝাই যাচ্ছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার নলি কেটে দেওয়া হয়েছে। এরপরেই আকিবের পরিবার এবং গ্রামবাসীরা খেপে ওঠেন।

ঘটনায় আকিবের ঠাকুমা আসলিমা বিবি অভিযোগ করেন, ”বিকালে আকিব বাড়ির সামনে খেলা করছিল। নমাজ পড়তে যাওয়ার আগে আমি শম্পাকে বলে যাই, ছেলেকে দেখার জন্য। কিন্তু শম্পা ঘুমাচ্ছিল। তারপরে ফিরে এসে দেখি, ছেলেটা নেই। পরে তাজমির বিবির আলমারি থেকে উদ্ধার হয়। তাজমিনের ফাঁসি চাই।” এদিকে, শিশুকে এমন নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় তাজমির বিবির প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই বোলপুর থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিবার ও গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই তাজমির বিবিকে আটক করা হয়। তবে কি বাবার সাথে জেঠিমার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ারই মাশুল গুণতে হল ছোট্ট আকিবকে? নাকি এর পিছনে অন্যকোনও কারণ রয়েছে তা ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখছে বোলপুর থানার পুলিশ।

RELATED ARTICLES

Most Popular