Homeএখন খবরবিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল সেমিস্টার নেবে না রাজ্য, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল সেমিস্টার নেবে না রাজ্য, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার

ওয়েব ডেস্ক : ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত লেগেই রয়েছে। কয়েকদিন আগেই ইউজিসি-র তরফে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ফাইনাল সেমিস্টার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আগেই কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছিল রাজ্য। এবার সেই একই অনুরোধ করে শনিবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন করেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হোক।

এবিষয়ে চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানান “বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পড়ুয়া এবং শিক্ষক মহলের শয়ে শয়ে ইমেল পাচ্ছি। সেজন্য বিষয়টি আপনার কার্যালয়ের নজরে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছি।” করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বেশীরভাগ পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরাই ইউজিসি-র এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেননি। পড়ুয়াদের একাংশের দাবি কোনোভাবেই এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়ানোর ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে৷ এর বদলে ইন্টারন্যাল অ্যাসেসমেন্ট ও পূর্ববর্তী পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে ফলাফলের সিদ্ধান্তকেই সমর্থন জানিয়েছেন পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ।

এদিকে কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ এবং উন্নয়ন মন্ত্রকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি মণীশ জৈন। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের সংশোধিত নির্দেশিকাকে জোর করে রাজ্যের উপর চাপিয়ে না দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এক্ষেত্রে রাজ্যকে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। চিঠিতে মণীশ জৈন স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইউজিসি সংশোধিত নির্দেশিকা অনুযায়ী ফাইনাল সেমিস্টার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত সংবিধানে উল্লিখিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্যের সাথে কোনওরকম আলোচনা করেনি ইউজিসি। অথচ নির্দেশিকা তৈরির ক্ষেত্রে ইউজিসিকে বারংবার রাজ্যের তরফে আলোচনার আর্জি জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি মণীশ জৈন চিঠিতে আরও জানান। বেশীরভাগ পড়ুয়ারাই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন এবং পূর্ববর্তী সেমেস্টারের ভিত্তিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছেন৷ ফলে তার ওপর নির্ভর করে বিষয়টি মানবিকভাবে দেখা হোক।

তবে শুধুমাত্র যে পশ্চিমবঙ্গই ইউজিসি-র সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন তা কিন্তু নয়, একই সাথে পঞ্জাব, দিল্লি সহ একাধিক রাজ্যও এই মূহুর্তে পরীক্ষা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া কেন্দ্র কিংবা ইউজিসি-র সাথে আলোচনা না করেই এক ধাপ এগিয়ে শনিবার জানান, দিল্লি সরকারের অধীনস্থ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কোনও পরীক্ষা হবে না। তিনি বলেন, “ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট ও পূর্ববর্তী সেমেস্টারের ভিত্তিতে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি।”

এদিকে দিল্লি সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। চিঠিতে তিনি এই পরিস্থিতিতে দিল্লি-সহ দেশের সব কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বাতিলের আর্জি জানান। এর ফলে আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ফাইনাল সেমিস্টার পরীক্ষা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে ফের আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি এই নিয়ে কেন্দ্রের উপর যথেষ্ট চাপ বাড়ল বলেই মনে করছে শিক্ষা মহল।

RELATED ARTICLES

Most Popular