Homeএখন খবরডাইনি সন্দেহে অসমে প্রৌঢ়ার গলা কেটে খুন, প্রশ্নের মুখে দেশের নারী সুরক্ষা...

ডাইনি সন্দেহে অসমে প্রৌঢ়ার গলা কেটে খুন, প্রশ্নের মুখে দেশের নারী সুরক্ষা ও নিরাপত্তা

ওয়েব ডেস্ক : হাথরস কাণ্ড নিয়ে এই মূহুর্তে উত্তাল গোটা দেশ। এর মধ্যেই অসমের ডিব্রুগড়ে ঘটে গেল এক নৃশংস ঘটনা। ডাইনি অপবাদে নৃশংসভাবে এক প্রৌঢ়ার গলা কেটে খুন করলো গ্রামেরই কিছু মানুষ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এভাবে একের পর এক নৃশংস ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে দেশের নারী সুরক্ষা ও নিরাপত্তা৷ জানা গিয়েছে, অসমের ডিব্রুগড়ের দোকমা থানার অন্তর্গত রহিমপুর গ্রামে বছর ৫০ বছর বয়সের এক বিধবা প্রৌঢ়াকে গলা কেটে খুন করেন স্থানীয়রা৷ ঘটনায় স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘বিধবা মহিলা আসলে ডাইনি‌, অন্য এক মহিলার মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী’‌। জানা গিয়েছে, মৃতার নাম রমাবতী হালুয়া।

এদিকে শুধুমাত্র ওই মহিলাই নয়, একইসাথে ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন হতে হয় গ্রামেরই ২৮ বছরের এক তরুণ শিক্ষককে। তিনি গ্রামবাসীকে বারংবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, শুধুমাত্র কুসংস্কারের বশে কাউকে হত্যা করা একেবারেই দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সেকথা শুনতে নারাজ গ্রামবাসী। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ওই একইভাবে তাঁকেও গলা কেটে মেরে ফেলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। গোটা ঘটনার শুনে একেবারে স্তম্ভিত অসম পুলিশ- প্রশাসন। ঘটনায় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের ধারণা রমাবতী ডাইনি। সে গ্রামের মহিলাদের উপর ভর করে নিজের মতো পরিচালনা করেন। এই কুসংস্কার গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই শুক্রবার আচমকা কয়েকজন গ্রামবাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই মহিলার বাড়িতে চড়াও হয়। ওই মহিলাকে খুন করতে উদ্যত হলে গোটা ঘটনার প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেন গ্রামেরই এক তরুণ শিক্ষক। কিন্তু তাঁর কথা শুনতে নারাজ গ্রামবাসীরা৷ এরপর দু’‌জনকেই নৃশংস ভাবে হত্যা করে দু’‌জনের মাথা কেটে শয়তানের উদ্দেশ্য তাকে খুশি করতে মাথা দুটি উৎসর্গ করে গ্রামবাসীরা। রাতবর চলে প্রার্থনা। এরপর গলাকাটা দেহ দুটি নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ের দিকে ফেলে দেওয়া হয়।

তবে শুধুমাত্র রমাবতী কিংবা ওই তরুণ শিক্ষকই নয়, দুষ্কৃতীরা রমাবতীর কন্যা সন্তানকেও মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু সে কোনওমতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচে। এরপরই সে দোমকা থানায় গোটা ঘটনাটি জানিয়ে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। মৃত প্রৌঢ়ার মেয়ের অভিযোগ শুনে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান পুলিশ। এরপর তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খুনের অস্ত্র ও দেহাংশ উদ্ধার করে। ইতিমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এবিষয়ে গ্রামের মানুষদের দাবি, রমাবতী ডাইনি। সে নানা মহিলার উপর ভর করে তাঁদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে, এবং সে মতো তাঁদের ব্যবহার করাতে পারে। এদিকে গ্রামেরই একজন মহিলা জানিয়েছেন, মৃত্যুর পরেও রমাবতীর নাম নিলে তাঁর আত্মা ভর করবে বলে তিনি নাম নিতে পারবেন না।

RELATED ARTICLES

Most Popular