Homeএখন খবরএসএমএসে করোনায় সংক্রমিত রিপোর্ট জানতে পেরে আত্মঘাতী যুবক

এসএমএসে করোনায় সংক্রমিত রিপোর্ট জানতে পেরে আত্মঘাতী যুবক

ওয়েব ডেস্ক : মারণ ভাইরাসে সংক্রমিত! এই খবর জানা মাত্রই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নবদ্বীপ ব্লকের চরমাজদিয়া চরব্রহ্মনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরমাজদিয়া গ্রামে। মৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ মুস্তাকিন মনসুরি। জানা গিয়েছে, আদতে ওই যুবক বিহারের বাসিন্দা৷ বেশ কিছু বছর আগে বাবা ও ভাইয়ের সাথে এ রাজ্যে এসে লেপ তোষকের ব্যবসা শুরু করেন। বছরে একবার দেশের বাড়ি গেলেও সারা বছর এ রাজ্যেই থাকেন দুই ছেলে ও বাবা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, আনলকের পর পরই দেশের বাড়িতে গিয়েছিলেন মুস্তাকিন মনসুর। দিন ১৫ আগেই সেখান থেকে নবদ্বীপে ফিরে আসেন। কিন্তু সেখান থেকে আসার পর থেকেই কয়েকদিন যাবৎ তাঁর শরীরে জ্বর-কাশি সহ করোনার একাধিক উপসর্গ লক্ষ করা যায়। এরপরই স্থানীয়দের তরফে পঞ্চায়েতে খবর দেওয়া হলে। চরমাজদিয়া চরব্রহ্মনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে গত রবিবার ওই যুবককে মহেশগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মুস্তাকিনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরপর নিয়ম অনুযায়ী বুধবার রাতে ওই যুবকের মোবাইলে একটি এসএমএস আসে। জানা যায় তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এরপরই মধ্যরাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন যুবক।

ঘটনায় পরিবারের অনুমান, মুস্তাকিন করোনায় এই খবর পাওয়ার পর আতঙ্কের বশেই আত্মহত্যা করেছেন। এরপর বৃহস্পতিবার ভোরে মুস্তাকিনের পরিবারের লোকেরা ঘুম থেকে উঠে দেখেন বারান্দায় ঝুলছে মুস্তাকিনের দেহ। এরপর তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে বারান্দায় বাঁশের আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে দেখতে পায়। এই ঘটনায় মুস্তাকিনের ভাই কাজল মনসুরি জানান, ” রাতেই ভাই জানায় তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ। কিন্তু এইরকম ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে তা ভাবতে পারিনি। সকালে বাথরুমে যাওয়ার সময় দেখতে পাই বারান্দায় দেহ ঝুলছে।”

ঘটনা নজরে আসা মাত্রই মুস্তাকিনের পরিবারের তরফে দ্রুত থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দেহটি নিচে নামান। এদিকে ওই যুবক করোনায় আক্রান্ত, অথচ দেহটি নামানো কিংবা নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি মানাই হয়নি। এমনকি বেশ কয়েক ঘন্টা কেটে গেলেও পঞ্চায়েতের তরফে এলাকা জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থাও করা হয়নি৷ এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি করোনার সংক্রমণের পর দীর্ঘ কয়েকমাস কেটে যাওয়ার পরও কিভাবে প্রশাসনের তরফে দায়সাড়াভাবে ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত কিনা তাঁর রিপোর্ট এভাবে এসএমএসের মাধ্যমে খোদ রোগীকে পাঠাতে পারে এই নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular